নবীন সৈনিকেরা দেশের এক ইঞ্চি মাটি হাতছাড়া হতে দেবে না : বিজিবি ডিজি
প্রকাশিতঃ 12:39 pm | July 10, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
দেশমাতৃকার অখণ্ডতা রক্ষায় নবীন সৈনিকরা প্রয়োজনে তাদের জীবন দেবে তবু দেশের এক ইঞ্চি মাটি হাতছাড়া হতে দেবে না বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, নবীন সৈনিকরা কখনো দেশবাসীকে হতাশ ও নিরাশ করবে না। তাদের দেওয়া নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাই দেশের মানুষের নির্বিঘ্ন ঘুম নিশ্চিত করবে। এই নবীন সৈনিকরাই হবে সীমান্তের নিরাপত্তা ও আস্থার প্রতীক।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার বায়তুল ইজ্জতে বিজিবির ঐতিহ্যবাহী প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড কলেজের (বিজিটিসিঅ্যান্ডসি) বীর উত্তম মজিবুর রহমান প্যারেড গ্রাউন্ডে নবীন সৈনিকদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন তিনি।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী তৎকালীন ইপিআরের ৮১৭ জন অকুতোভয় বীর শহীদকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ ও একই সঙ্গে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ সকল ছাত্র-জনতাকেও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ এবং আহতদের আরোগ্য কামনা করেন বিজিবি মহাপরিচালক আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, সীমান্তের অতন্দ্রপ্রহরী’ খ্যাত এই বাহিনী বাংলাদেশের ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার সুদীর্ঘ সীমান্ত সুরক্ষাসহ সীমান্ত ভূমি ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান, মাদক ও অস্ত্রসহ অন্যান্য অবৈধ পণ্যের চোরাচালান প্রতিরোধ, নারী ও শিশু পাচার রোধসহ যে কোনো ধরনের আন্তঃসীমান্ত অপরাধদমনে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। শুধু তাই নয়, দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার ক্ষেত্রেও বিজিবি অত্যন্ত বিশ্বস্ততা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হচ্ছে।
নবীন সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বিজিবি মহাপরিচালক মনোবল, ভ্রাতৃত্ববোধ, শৃঙ্খলা ও দক্ষতা- বিজিবির এই চারটি মূলমন্ত্রে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়ে অর্পিত যে কোনো দায়িত্ব সুশৃঙ্খল ও সুচারুরূপে পালনের নির্দেশ দেন।
আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, শৃঙ্খলা হচ্ছে সৈনিক জীবনের অলংকার। আদেশ ও কর্তব্য পালনে যে কখনো পিছপা হয় না সেই প্রকৃত সৈনিক। সততা, বুদ্ধিমত্তা, নির্ভরযোগ্যতা, আনুগত্য, তেজ ও উদ্দীপনা একটি বাহিনীর শৃঙ্খলা ও পেশাগত দক্ষতার মাপকাঠি।
নবীন সৈনিক হিসেবে এসকল পেশাগত ও চারিত্রিক গুণাবলি অর্জন করতে হবে। তাহলেই কেবল পূর্বসূরীদের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে দেশের সেবায় নিজেদের নিয়োগ করতে পারবে। দেশসেবার মহান কার্যভার গ্রহণের এই মাহেন্দ্রক্ষণে নবীন সৈনিকদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান তিনি।
নবীন নারী সৈনিকদের উদ্দেশ্যে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে মহিয়সী নারীদের অংশগ্রহণ, অবদান ও আত্মত্যাগ অবিস্মরণীয়। আজ নারীরা বিভিন্ন অঙ্গনে যথাযথ যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। আজ নবীন নারী সৈনিকরা দেশমাতৃকার স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃপ্ত শপথ নিয়ে সৈনিক জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছে।
নবীন নারী সৈনিকরা বিজিবির সার্বিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় আরও গতিশীল ভূমিকা রাখাসহ বাহিনীর সুনাম-সুখ্যাতি বৃদ্ধিতে সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে নিরলসভাবে কাজ করবে বলে বিজিবি মহাপরিচালক আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিজিবি মহাপরিচালক নবীন সৈনিকদের তেজোদীপ্ত কুচকাওয়াজের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বৃহত্তর কর্মজীবনে কাজের ব্যাপ্তি ও পরিধি আরও বিস্তৃত হবে। নবীন সৈনিকরা যখন সীমান্তে নিয়োজিত থাকবে তখন তাদের সততা, নিষ্ঠা ও পেশাগত দক্ষতার ওপরই নির্ভর করবে এ বাহিনীর ভাবমূর্তি ও গৌরব। প্রতিপক্ষ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে কোনো অবস্থাতেই নমনীয় আচরন না করার জন্য নবীন সৈনিকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান বিজিবি মহাপরিচালক।
কালের আলো/এএএন