ঈদ উৎসবমুখর করতে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের আইজিপির একগুচ্ছ নির্দেশনা, নিজেদের ঝুঁকিমুক্ত বিবেচনায় রেখে অস্ত্রের প্রাধিকার নির্ধারণ

প্রকাশিতঃ 10:25 pm | May 27, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গত ঈদুল ফিতরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখে প্রশংসিত হয়েছিল পুলিশ। এবারও ঈদুল আজহায় সামর্থ্যরে সবটুকু দিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বদ্ধপরিকর তাঁরা। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আসন্ন ঈদুল আজহা উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে উদযাপন করতে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। তিনি সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দেশের সকল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও জেলা পুলিশ সুপারদের সঙ্গে আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত এক ভার্চুয়াল সভায় সভাপতিত্বকালে একগুচ্ছ নির্দেশনা প্রদান করেন আইজিপি।

তিনি বলেছেন, ঈদুল আজহা উপলক্ষে মেট্রোপলিটন পুলিশ, জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ পুলিশসহ পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিটসমূহ সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করবে।’ তাঁর এই নির্দেশনা থেকেই পরিস্কার নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় ঈদ উদযাপনে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে প্রতিটি ইউনিটের মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা হবে।

পুলিশ সদর দপ্তরের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত ভার্চুয়াল সভায় কোরবানির পশু পরিবহন নির্বিঘ্ন করা, এক হাটের পশু জোর করে অন্য হাটে না নেওয়া, হাইওয়ের পাশে পশুরহাট না বসানো, জাল টাকা, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি প্রতিরোধ, মার্কেট ও শপিংমলের নিরাপত্তা প্রদানে সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সভায় যেসকল লাইসেন্সধারী সরকারী ঘোষণা অনুযায়ী অস্ত্র জমা দেননি তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর জন্য মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি।

মাঠ পর্যায়ে পুলিশি কার্যক্রম ঝুঁকিমুক্ত বিবেচনায় রেখে অস্ত্রের প্রাধিকার নির্ধারণ
এই সভায় পুলিশ সদস্যদের অস্ত্র ব্যবহার প্রসঙ্গেও কথা বলেন আইজিপি বাহারুল আলম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যদের অস্ত্র ব্যবহারের প্রাধিকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত করা আছে। মাঠ পর্যায়ে যেকোনো পুলিশি কার্যক্রম যেন ঝুঁকিমুক্ত থাকে সে বিষয়টি বিবেচনায় রেখে অস্ত্রের প্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়। পুলিশের টহল কার্যক্রম বা সশস্ত্র অপরাধী, চরমপন্থী ও বিদ্রোহ (ইনসারজেন্সি) প্রবণ এলাকায় পুলিশি কার্যক্রমের সময় অবশ্যই প্রয়োজন অনুযায়ী পুলিশ অস্ত্র বহন করবে।’

পুলিশ মহাপরিদর্শক আরও বলেন, ‘৫ আগস্ট উত্তর নতুন বাংলাদেশে পুলিশের অস্ত্র ব্যবহার পর্যালোচনার বিষয়টি শুধুমাত্র জনশৃঙ্খলা রক্ষায় অর্থাৎ মিছিল-সমাবেশ নিয়ন্ত্রণের বেলায়ই উঠে এসেছে। মিছিল সমাবেশ নিয়ন্ত্রণে লিথ্যাল আর্মস অর্থাৎ জীবনবিধ্বংসী মারণাস্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা স্বভাবতই প্রশ্নবিদ্ধ। এই বিষয়টিই বর্তমানে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে।’

সভায় পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মতিউর রহমান শেখ, স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি মো. গোলাম রসুল, অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) খোন্দকার রফিকুল ইসলাম, ডিআইজি (অপারেশনস) মো. রেজাউল করিম, ডিআইজি (কনফিডেন্সিয়াল) মো. কামরুল আহসানসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/আরআই/এমকে