উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফার্মেসির বেহাল দশা
প্রকাশিতঃ 9:13 am | April 13, 2025

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
দেশের উচ্চতর চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণার অন্যতম প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ)। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেবিন ব্লকে রয়েছে একটি ফার্মেসি। যে কেউ গেলে দেখতে পারবেন স্টিকারে লেখা রয়েছে, ‘সুলভমূল্যে সকল প্রকার ওষুধ ও সার্জিক্যাল সামগ্রী পাওয়া যায়। ২৪ ঘণ্টা খোলা। সঠিক তাপমাত্রায় ওষুধ সামগ্রী সংরক্ষণ করা হয়। সকল দেশীয় ঔষধে ৭ ভাগ ছাড় দেওয়া হয়।’
তবে সরেজমিনে গত বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, ফার্মেসি বন্ধ রয়েছে। প্রায় ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করেও এ প্রতিবেদক ফার্মেসিতে কারও দেখা পাননি। দুপুর আড়াইটার দিকে পেটে সমস্যা নিয়ে চিকিৎসাধীন স্বজনের ওষুধ কিনতে এসেছেন হাইকোর্টে কর্মরত আলাউদ্দিন। তিনি ফার্মেসি বন্ধ পেয়ে ক্ষোভ ঝাড়েন। বলেন, ‘যখনই আসি, তখনই বন্ধ পাই।’ তিনি ছাড়াও এই সময়ের অন্তত সাতজন রোগীর স্বজন এসেছেন ওষুধ কিনতে, তারা ওষুধ না কিনে ফিরে গেছেন। পরে জানা গেছে, ফার্মেসি দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ রয়েছে।
দেশের মানুষের ভালো চিকিৎসাসেবা নেওয়ার আশা-ভরসার আশ্রয়স্থল বিএমইউ ফার্মেসির এমন বেহাল দশার বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা ও গবেষণা) অধ্যাপক ডা. মুজিবুর রহমান হাওলাদারের কাছে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি বলতে পারবো না।’
স্বাস্থ্যখাতের এসব অনিয়মের রেশ ধরে অধ্যাপক ডা. আব্দুস সবুর বলেন, ‘কয়েক দিন পরপর ‘ওহি’ নাজিল না করে আমরা কাজ চাই। সরকার পরিবর্তন হয়েছে প্রায় আট মাস। স্বাস্থ্যখাতে কী পরিবর্তন হয়েছে? কোনো পরিবর্তন হয়েছে? একটা পরিবর্তনও হয়নি। কাজের মাধ্যমে প্রমাণ দেখতে চাই।’
এমন বাস্তবতার মধ্যেই সারাদেশে প্রথমবারের মতো সরকারি ফার্মেসি চালুর চিন্তা করছে সরকার। সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক সায়েদুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, সরকারি হাসপাতালগুলোতে ল্যাব সার্ভিস আছে, অন্য প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিস আছে, কিন্তু কোথাও কোনো ফার্মাসিউটিক্যাল সার্ভিস নেই। নতুন উদ্যোগ হিসেবে দেশের সব সরকারি হাসপাতাল চত্বরে ফার্মেসি চালু করতে যাচ্ছে সরকার।
বহুল ব্যবহৃত ২৫০ ধরনের ওষুধ মিলবে এসব ফার্মেসিতে, যেখানে ওষুধ কেনা যাবে তিন ভাগের এক ভাগ দামে। তবে ফার্মেসি চালু করতে গেলে দেশের স্বাস্থ্য বিভাগকে মোকাবেলা করতে হবে নানা চ্যালেঞ্জ। এসব ফার্মেসি কোন পদ্ধতিতে চালু হবে এবং আদৌ সফলতার মুখ দেখবে কি না, এটা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হলে সুফল ভোগ করবে দেশের জনগণ। স্বাস্থ্যখাতের হবে ব্যাপক পরিবর্তন।
কালের আলো/এমএএইচএন