ডাকসু নির্বাচনের প্রচারণায় ছাত্রলীগ
প্রকাশিতঃ 10:55 am | March 06, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা চালাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপীতম সংগঠন ছাত্রলীগ। সোমবার(৪ মার্চ) থেকে ছাত্রলীগের প্যানেল ভিত্তিক প্রচারণায় ব্যস্তময় সময় পার করছে ভিপি, জিএস ও এজিএস সহ প্যানেলের অন্যান্য পদধারী প্রার্থীরা।
প্রচারণায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে আচরণবিধি প্রণয়ন করেছে, প্রথম দিনের তা লঙ্ঘন করে চলেছে ছাত্রলীগ-বামদের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ উঠলেও দ্বিতীয় দিনের সকল আচরণ বিধি মেনে প্রচারণায় চালাচ্ছে এশিয়ার বৃহৎ সংগঠনের প্যানেলটি। এমনটাই কালের আলোকে জানিয়েছেন ছাত্রলীগের র্শীষ নেতারা।
সূত্রে জানা যায়, ২৮ বছরের প্রতীক্ষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা তৈরি হয়েছে। গত রোববার এটি প্রকাশ হয়েছে। চূড়ান্ত তালিকা ঘোষণার পর থেকে ছাত্রলীগের প্যানেলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বাম দল থেকে ডাকসু নির্বাচনের প্যানেলের ভিপি ও জিএসরা প্রচারণায় ব্যস্তময় সময় পার করছেন।

ছাত্রলীগের ভিপি ও জিএস প্রাথীসহ বিভিন্ন পদের প্রার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে প্রচারণায় চালাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সময় পার করছেন তারা।
রোববার ডাকসুর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু করেন প্রার্থীরা। রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে নির্বাচনী সভা করে ছাত্রলীগ।
এ সময় ছাত্রলীগ তাদের প্যানেলের সব প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দেন। ওই সভায় সংগঠনটি যে ব্যানার ব্যবহার করে, তা ছিল রঙিন ডিজিটাল ব্যানার। বিষয়টি নিয়ে তখন অন্য অনেক প্রার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রঙিন পোস্টার দেয়ালে সাঁটানো থেকে শুরু করে প্রতিটি হলে রঙিন ব্যানারে নির্বাচনী সভা করছে সংগঠনটির প্রার্থীরা।

সোমবার বিকেলে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে নির্বাচনী সভা করে ছাত্রলীগ। সেখানেও রঙিন ডিজিটাল ব্যানার ব্যবহার করা হয়। এমনটাই অভিযোগ করছেন ডাকসু নির্বাচনে বাম দলের প্রার্থীরা।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও ডাকসুতে ভিপি পদপ্রার্থী রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন এবং ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুতে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী গোলাম রাব্বানীকে ফোন করা হলেও রিসিভ করেননি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন উৎসবে পরিণত হয়েছে। এরই মধ্যে প্রায় দশটি প্যানেল ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রসংগঠনগুলো। স্বতন্ত্র প্যানেলও আছে কয়েকটি। এতসব প্যানেলের হেভিওয়েট প্রার্থীর ভিড়ে ভোটের মাঠে নজর কেড়েছেন নবীন শিক্ষার্থীরাও। হল সংসদগুলোতে তারা নির্বাচনে লড়ছেন। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে প্রায় সাত হাজার নবীন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। বেশিরভাগ বিভাগেই ক্লাস শুরু হওয়া একমাসও হয়নি। অনেক বিভাগে ক্লাস এখনও শুরুই হয়নি ঠিকমতো। শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলগুলোতে উঠতেও পারেননি সবাই। তবে নির্বাচন উৎসবে শরিক হয়েছেন তারা। প্রার্থী হতে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন তারা। অন্যান্য প্রার্থীদের মতো তারাও প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

নবীন শিক্ষার্থীরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের সংগঠন ছাত্র সংসদ। দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে নেতৃত্ব তৈরির সুযোগ বন্ধ ছিল। ফলে এক ধরনের বন্ধ্যাত্ব তৈরি হয়েছে। আগামীদিনে দেশের নেতৃত্বের জন্য তৈরি হতে চান তারা। ক্লাসের সঙ্গে সঙ্গে নিজের পক্ষে ভোটের প্রচারণাতেও অংশ নিয়েছেন তারা।
ডাকসু নির্বাচনের নবীন ভোটারদের মন যোগাতে বিভিন্ন কৌশলে প্রচারণা নেমেছে ছাত্রলীগ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে মোবাইল থেকে এসএমএম, ফেসবুক লাইভসহ বিভিন্ন কৌশলে এগিয়ে যাচ্ছে ছাত্রলীগের প্রচারণা। হল ভিত্তিক নেয়া হয়েছে বিভিন্ন কৌশল। এরই মধ্যে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হলের মধ্যে অবস্থান করা শুরু করেছে। আবাসিক শিক্ষার্থীদের কাছে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করছেন প্রার্থীরা। অনাবাসিক শিক্ষার্থীর কাছে ম্যাসেজ কিংবা প্রচারণা পত্র পাঠানো হচ্ছে।
ছাত্রলীগের প্যানেলকে বিজয়ী করতে পরামর্শক হিসেবে কাজ করছে আওয়ামী লীগের র্শীষ চার নেতা। প্রতিদিনই তারা যোগাযোগ করছেন প্রার্থীদের সঙ্গে। কে কোথায় প্রচারণা করছেন তাও খবর রাখছেন আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত এই চার নেতা। নবীন শিক্ষার্থীদের মন যোগানো নতুন কৌশলও বলে দিচ্ছেন এই চার নেতা।
ছাত্রলীগের প্যানেলের জিএস প্রার্থী ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন জয় লাভ করার জন্য ছাত্রলীগকে শুধু শিক্ষার্থীদের দ্বারে দ্বারে নয়, ছাত্র ছাত্রীদের অন্তরে অন্তরে যেতে হবে। সময় কম, শুধু শিক্ষার্থীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে লাভ নাই, শিক্ষার্থীদের মনে স্থান করে নিতে হবে আগে।
তিনি আরো বলেন, হাসিমুখে সুন্দর ব্যবহার, যেকোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ, সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার, নিয়মিত জনহিতকর ও মানবিক কর্মে শিক্ষার্থীদের মনে শ্রদ্ধা-ভালোবাসার স্থায়ী আসন গেড়ে নেয়া, তবেই শিক্ষার্থীরা ভালবাসবে ,কথা শুনবে, বিশ্বাস করবে, মানবে।
কালের আলো/এসআই/এমএইচএ