খাসোগির ওপর একটি বুলেট ব্যবহার করব- মিত্রকে যুবরাজ
প্রকাশিতঃ 2:09 pm | February 08, 2019

ডেস্ক রিপোর্ট, কালের আলো:
সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার পরিকল্পনা এক বছর আগেই হয়, আর এ পরিকল্পনা করেন প্রভাবশালী সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান নিজেই। ২০১৭ সালে তার এক মিত্রের সঙ্গে আলাপকালে যুবরাজ বলেন, তিনি খাসোগির ওপর একটি বুলেট ব্যবহার করবেন।
মার্কিন গোয়েন্দারা তার ওই ফোনালাপ জব্দ করেছে বলে দেশটি গণমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
গেল ডিসেম্বরে মার্কিন গোয়েন্দাদের তৈরি করা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিন সালমান তার শীর্ষ মিত্র তুর্কি আলদাখিলের সঙ্গে ওই কথোপকথন করেন। সেখানে বলা হয়, খাসোগি যদি তার পথ (সমালোচনা) থেকে ফিরে না আসে তাহলে তাকে জোরপূর্বক ফেরানোর চেষ্টা করা হবে। আর তাতেও যদি কোনো কাজ না হয়, তাহলে তার দেহে একটি বুলেট ব্যবহার (হত্যা) করা হবে।
এই পরিকল্পনার কয়েক মাস আগেই ওয়াশিংটন পোস্টের কলাম লেখক খাসোগি সৌদি সরকারের ব্যাপক সমালোচনা শুরু করেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে, বিবিসি বলছে, সৌদি আরবের কর্মকর্তারাই যে সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে তার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তদন্ত দল।
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান, যাকে খাসোগি হত্যার ‘মূল হোতা’ মনে করা হচ্ছে
সৌদি যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমান, যাকে খাসোগি হত্যার ‘মূল হোতা’ মনে করা হচ্ছে
তদন্ত কমিটির প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, তুরস্ক যখন ওই ঘটনার তদন্ত করার উদ্যোগ নেয় তখন সৌদি আরব বাধা দেয়ার সব চেষ্টা করেছে।
প্রসঙ্গত, সৌদি সরকার তথা প্রভাবশালী যুবরাজ মোহাম্মাদ বিন সালমানের কড়া সমালোচক হিসেবে পরিচিত সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে গত বছরের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে হত্যা করা হয়।
প্রথমদিকে সৌদি আরব ঘটনাটিই অস্বীকার করেছিল। পরে আস্তে আস্তে হত্যার কথা পর্যন্ত স্বীকার করে। যদিও তারা বলছে, এই হত্যার সঙ্গে যুবরাজের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
কিন্তু এর আগে মার্কিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতেও বলা হয়েছে, খাসোগি হত্যার জন্য যুবরাজই দায়ী।
তবে বিন সালমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, বিশেষ করে তার জামাতা ও উপদেষ্টা জারেদ কুশনারের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়ায় ট্রাম্প প্রশাসন এ ব্যাপারে শুরু থেকেই উদাসীনতা প্রদশন করে আসছে।
হত্যাকাণ্ডের কয়েক দিন পর তুরস্কের কর্মকর্তাদের অনুসন্ধানে যখন রোমহর্ষক তথ্য বেরিয়ে আসে, তখন সৃষ্টি হয় বিশ্বজুড়ে তোলপাড়।
জাতিসংঘ তদন্ত দলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক খাসোগিকে হত্যার ঘটনার যখন ১৩ দিন হয়, তখনও তুরস্কের তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। এভাবে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছিল সৌদি আরবের পক্ষ থেকে।
উল্লেখ্য, এই হত্যাকাণ্ডে সৌদি আরব ১১ জনকে বিচারের মুখোমুখি করেছে এবং তাদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড চাওয়া হয়েছে। যদিও এসবের আশপাশে নেই ‘মূল অভিযু্ক্ত’ সৌদি যুবরাজের নাম।
কালের আলো/এএ/এমএইচএ