বিতর্কিত ধনকুবেরের ‘টার্গেট’ সালাম মূর্শেদী না আওয়ামী লীগ?
প্রকাশিতঃ 11:22 pm | December 06, 2023

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
ছবিটি ২০০৯ সালের। খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদী তখন পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি। সেই সময় দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় প্রদশর্নী বাটেক্সপো আয়োজনে পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র রীতি ছিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকারপ্রধান আর সমাপনীতে থাকবেন বিরোধী দলীয় নেতা। সেই মোতাবেক তিনদিনব্যাপী এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া। মূলত দন্ডপ্রাপ্ত বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে আব্দুস সালাম মূর্শেদীর প্রায় দেড় যুগ আগের সেই ছবির মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো হচ্ছে বিভ্রান্তি।
শুধু তাই নয়, ২০০৩ সালে আব্দুস সালাম মূর্শেদী একজন কৃতি ফুটবলার হিসেবে ‘ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড’ পান। সেই সময়কার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার হাত থেকে তিনি ক্রেস্ট গ্রহণ করেন। এই ছবিটির সঙ্গেও রাজনীতির কোন সম্পর্ক নেই। এমনকি ওই সময় তিনি বাফুফে’তে কোন পদেও ছিলেন না। অথচ ঘৃণ্য কায়দায় বারবার তাকে হেনস্থা করার তোড়জোড় চলছে নানা পরিমণ্ডলে। ইনিয়ে বিনিয়ে বলা হচ্ছে খালেদা ঘনিষ্ঠ সালাম মূর্শেদী এখন পুরোদস্তুর আওয়ামী লীগ বনে সংসদে গেছেন। কিন্তু নির্লজ্জ এই মিথ্যাচারের পেছনের রহস্য বলছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা সালাম মূর্শেদীর মনোনয়ন ঠেকাতে পারেনি তাঁরাই নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে পুনরায় মনগড়া আর ফরমায়েশী তথ্যে কদর্য আর নোংরা ভাষা প্রয়োগের মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ জোরালো অপপ্রচারের মাধ্যমে তাঁর হ্যাট্টিক বিজয়ের পথে বাঁধার দেয়াল তৈরিতে ব্যর্থ হয়ে সরকার দলীয় এই সংসদ সদস্যকে সমাজে চোখে খাটো করতে পুনরো বোতলে নতুন মদ কায়দায় খিস্তিখেওর করছে।
উল্টো অভিযোগ উঠেছে- কূটকৌশল ফরমুলায় নিত্য নতুন নাটক মঞ্চস্থ করতে করিৎকর্মা বিএনপির সাঈদ এস্কান্দার ও বরকত উল্লাহ বুলুসহ একাধিক প্রভাবশালী নেতার ঘনিষ্ঠভাজন এক ধনকুবের ব্যবসায়িক বিরোধ থেকেই মোটা অঙ্কের টাকা ঢেলে এক সময়ের দেশসেরা নন্দিত ফুটবলার আব্দুস সালাম মূর্শেদীর সুনাম ক্ষুণ্ন করার মাধ্যমে হীনম্মন্যতা ও ব্যক্তি লালসা চরিতার্থ করতে উঠে-পড়ে লেগেছেন। ওয়ান ইলেভেন’র জরুরি সরকারের সময়ে জেনারেল (অব:) মঈনের সঙ্গে গাঁটছড়ায় থাকা ওই প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে কলকাঠি এখন মোটা দাগে দৃশ্যমান হয়েছে। প্রশ্ন ওঠেছে-প্রেসার গ্রুপ চক্রটির মূল টার্গেট কী আব্দুস সালাম মূর্শেদী না আওয়ামী লীগ? নির্বাচনে গোয়েবলসীয় কায়দায় প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে খোদ ক্ষমতাসীন দলকে বিপর্যস্ত করতেই কী অপরিণামদর্শী কুৎসিত ধারার অপকৌশল চলছে? বিশেষ করে আব্দুস সালাম মূর্শেদীর বাড়ি নিয়ে একটি পক্ষের মিথ্যাচার আর অপপ্রচারের বিভ্রান্তি ছড়ানোর মাধ্যমে তার সাদা জামায় কালো দাগ লাগানোর অপচেষ্টার মুখোশ ইতোমধ্যেই উন্মোচিত হয়েছে।
জানা যায়, দেশের সর্বোচ্চ করদাতাদের একজন আব্দুস সালাম মূর্শেদী। তিনি ২০১৮ সালে ‘কর বাহাদুর পরিবার’ উপাধিতে ভূষিত হন। ২০০১ সাল থেকে তিনি একাধিকবার সিআইপি হয়েছেন। ফলত এসব অপপ্রচারে বিস্মিত ও হতবাক ব্যবসায়ী নেতারা। চরম ক্ষুব্ধ খুলনা-৪ আসনের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দলীয় নেতাকর্মীরা। সবাই বলছেন, ক্ষমতাসীন দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন সংসদ সদস্যকে নিয়ে এমন অপচেষ্টা কার্যত ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। বিএনপির চক্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আওয়ামী লীগের এই জনপ্রিয় সংসদ সদস্যের সুনামহানির ‘মাস্টারপ্ল্যান’ হিতে বিপরীত হয়ে উঠবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সরকারের হাইকমান্ড নিজ দলীয় সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্রের বিষয়টি জানেন। তারাও পুরো বিষয়টি গভীরভাবেই পর্যবেক্ষণ করছেন।
পাশাপাশি তাঁরা আরও বলছেন, এই চক্রটি সালাম মূর্শেদীর মনোনয়ন ঠেকাতে সব অপকৌশল প্রয়োগের পরেও ব্যর্থ হয়েছেন। টানা দু’বার সংসদ সদস্য হয়ে খুলনা-৪ আসনের তিন উপজেলায় সমানতালে উন্নয়ন করেছেন তিনি। দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করেছেন। কিন্তু নানা প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে চক্রটির ক্রমাগত অপচেষ্টাকে ঘৃণাভরেই প্রত্যাখ্যান করেছেন সচেতন ও বিবেকবান প্রতিটি ভোটার। বঙ্গবন্ধুকন্যা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আপত্য স্নেহে ভোটের মাঠেও জনতার শক্তিতে অপ্রতিরোধ্য আব্দুস সালাম মূর্শেদী।
কালের আলো/বিএসবি/এমএইচ