হেলমেট ছাড়া বাইকে চড়ে সমালোচনার মুখে প্রতিমন্ত্রী পলক

প্রকাশিতঃ 4:51 pm | January 08, 2019

কালের আলো ডেস্ক

একাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রিসভাতেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন জুনাইদ আহমেদ পলক। গত সোমবার (৭ জানুয়ারি) শপথগ্রহণের পর আজ ছিল তার প্রথম কর্মদিবস। যানজটের ঝক্কি এড়াতে এদিন মোটরসাইকেলে চড়ে মন্ত্রণালয়ে আসেন তিনি।

সেই ছবি তিনি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেছেন। এরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শুরু হয়েছে নানা সমালোচনা। কারণ, আইন অনুসারে মোটরসাইকেলে চড়ার সময় তিনি হেলমেট পরিহিত ছিলেন না। যদিও প্রতিমন্ত্রীর শেয়ার করা তিনটি ছবির একটিতে তার মাথায় হেলমেট দেখা গেছে, তবে বাকি দু’টিতে তিনি হেলমেট ছাড়াই ছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী পলকের ছবি শেয়ার করে আলাউদ্দিন আল আজাদ লিখেছেন, নবনিযুক্ত প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক হেলমেট বিহীন মোটরসাইকেল যোগে সচিবালয়ে অফিস করতে আসলেন। প্রথমদিনই কি তিনি ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করলেন?

তাপস কুমার দাস লিখেছেন, লোকজনকে চমকে দিতে চাওয়া প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলক কিন্তু হেলমেট পরেননি…

জালালউদ্দিন সাগর লিখেছেন, হেলমেট ছাড়া প্রতিমন্ত্রী যখন বাইকে চড়তে পারেন তখন আমি চড়লে দোষ কেন?

পলক অবশ্য পরে গণমাধ্যমকে বলেন, তিনি যে বাইকে লিফট নিয়েছিলেন সেই বাইকের চালকের কাছে বাড়তি হেলমেট ছিল না। তবে এ বক্তব্যেও পার পাননি পলক।

অনেকেই মন্তব্য করেছেন, কোনো বাইকারের কাছে লিফট নেওয়ার চেয়ে উবার মটো বা পাঠাওয়ের মতো রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ব্যবহার করেই রাইড নিতে পারতেন প্রতিমন্ত্রী।

একজন অবশ্য ধরেই নিয়েছেন পলক রাইড শেয়ারিং অ্যাপই ব্যবহার করেছেন। তবে সেক্ষেত্রেও চালক তাকে হেলমেট দেয়নি বলে তার রেটিং কমিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ফাইজা কামাল নামে ওই ব্যক্তি লিখেছেন, ‘বাহ, আপনার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। আমি নিজেও পাঠাও কিংবা উবারের বাইকে চড়েই প্রতিদিন অফিস যাওয়া-আসা করি। কিন্তু বাইকার আমাকে হেলমেট দিচ্ছে কি না, সে ব্যপারে আমার কড়া নজর থাকে। আপনাকে তারা হেলমেট দেয়নি দেখা যাচ্ছে। আপনি দয়া করে এই রাইডারকে ১* (রেটিং) দেবেন এবং ডিটেইলসে গিয়ে কমপ্লেইন করবেন এ বিষয়ে। আশা করি, রাইডের খরচটা ফেরত না হলেও কিছু ডিসকাউন্ট দেবে তারা। নেক্সট রাইডে কাজে আসবে।’

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন প্রতিমন্ত্রী পলক হেলমেট না পরায় সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে, তখন একই পোস্টের সঙ্গে তৃতীয় একটি ছবি যোগ করেন পলক।

তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই মন্তব্য করেন, নতুন ছবির মোটরসাইকেল আগের দু’টি ছবির মোটরসাইকেলের থেকে আলাদা। তাছাড়া দুই ছবিতে মোটরসাইকেলের চালকের পোশাকও আলাদা। অর্থাৎ, তৃতীয় ছবিটি অন্য কোনো দিনের বা অন্য কোনো সময়ের; প্রথম দুই ছবির দিন বা সময়ের নয়।

একজন লিখেছেন, ‘মানুষকে বোকা ভাবার কারণ কী?’ আরেকজন লিখেছেন, ‘তৃতীয় ছবিটি কী করে আপলোড করলেন? এত ছবি কে তুললেন? আর তিনিই বা কীভাবে সেই ছবি হাতে পেলেন?’

হাসিবুল আলম লিটন নামের এক আইডি থেকে কমেন্ট এসেছে, ‘ডিসকভার চলতে চলতে পালসার হয়ে গেছে। আর কিছু পথ পাড়ি দিলে বিএমডাব্লিউ হয়ে যেত। হিসাবে একটু ভুল করে বসেছেন লিডার।’

একজন ব্যাঙ্গ করে লিখেছেন, ‘আচ্ছা, এই যে ডিসকাভার বাইক চলতে চলতে পালসার হয়েছে, এটা কি উন্নয়ন না? এটা আপনাদের চোখে পড়ে না? খালি যত্তসব সমালোচনা।’

আরেকজন লিখেছেন, ‘লুকিং গ্লাসে দেখলাম রাইডার অন্য জামা পরিহিত, ডিসকভার রাইডারের জামার মিল নেই। এটা অন্য ছবি।’

মুনতাসিরুল ইসলাম খান সামি নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘দুইটা দুই দিনের পিক। একদিন হয়তো হেলমেট ছাড়া পিক তুলেছিলেন। তাই সাথে হেলমেট পরা পিকও দিয়েছেন এটা বুঝাতে যে, তিনি হেলমেট ঠিকই পরেন।’

উল্লেখ্য, গত রোববার বিকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম নতুন মন্ত্রিসভার মন্ত্রীদের নাম ও দপ্তর জানান। এতে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে জুনাইদ আহমেদ পলকের নাম ঘোষণা করা হয়।

কালের আলো/এএ/এমএইচএ