জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারেই বাংলাদেশ কলঙ্কমুক্ত হবে: শেখ পরশ
প্রকাশিতঃ 7:03 pm | August 10, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ১৫ই আগস্ট ছিল মূলত একাত্তরের পরাজিত শক্তি ও তাদের আন্তর্জাতিক দোসরদের সুগভীর চক্রান্তে সুপরিকল্পিত গণহত্যাকাণ্ড। যার আলটিমেট টার্গেট ছিল এই দেশ থেকে চিরতরে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস-সর্বস্ব মুছে দেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালিত করা, একটি ইসলামি প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করে একাত্তরের পরাজয়ের চরম প্রতিশোধ গ্রহণ করা। বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছিল, তারা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকেই হত্যা করতে চেয়েছিল। হত্যা করতে চেয়েছিল এ দেশের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকেই। তাই আমাদের পরিষ্কার দাবি- ’৭৫-এর হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড জিয়াউর রহমান এটা আজকে জনসাধারণের কাছে পরিষ্কার, বিশেষ করে যুব সমাজের কাছে। কারণ একটাই এই হত্যাকাণ্ডের বেনিফিশারি বিএনপি।
তিনি বলেন, তারা বন্দুকের নল ব্যবহার করে সন্ত্রাসের মাধ্যমে বিএনপি গঠন করে। ’৭৫ পরর্তী সময়ে বিএনপি বাংলাদেশের জনগণের ওপর যেভাবে অত্যাচার, নির্যাতন, হত্যা, রাহাজানি, সন্ত্রাস চালিয়েছে তাতে আমরা নৈতিকভাবে মনে করি বিএনপি-জামাতের বাংলাদেশে রাজনীতি করার অধিকার নাই। এ কারণেই আমরা বাংলাদেশের যুবসমাজের পক্ষ থেকে, মুক্তিযুদ্ধে চেতনায় বিশ্বাসী, প্রগতিশীল মানুষের পক্ষ থেকে জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার চাই। যারা বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, একটি উন্নত-মর্যাদাশীল সমাজ ব্যবস্থা নির্মাণের লক্ষ্যে সংগ্রাম করে যাচ্ছে সেই সকল মানুষের প্রত্যাশা জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার না হলে বাংলাদেশ প্রকৃত পক্ষে কলঙ্কমুক্ত হবে না। তাই আজকে জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার সময়ের দাবি, ন্যায্য দাবি।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার, ’৭৫-এর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর, ২১ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের পলাতক আসামি তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর এবং কানাডার ফেডারেল কোর্ট কর্তৃক সন্ত্রাসী সংগঠনের আখ্যা পাওয়া বিএনপি’র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে সমাবেশ ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। সমাবেশে সভাপতিত্বকালে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এসব কথা বলেন। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন- বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।

সভাপতির বক্তব্যে শেখ ফজলে শামস্ পরশ আরও বলেন, ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার যে ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ড সে হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে হত্যার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার যে অপপ্রয়াস চালিয়েছিল খুনি তারেক জিয়া। সেই তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে আদালতের রায় রয়েছে। তিনি বিদেশে পলাতক, অবিলম্বে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করতে হবে। কারণ সে বিদেশে থেকে ন্যাক্কারজনকভাবে এদেশে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে যাচ্ছে। আমাদের যুবলীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা করছে। একারণেই আমরা নির্বাচন কমিশনেও যাবো, যেন জামাতের মতো বিএনপির নিবন্ধন বাতিল করা হয়, যেন বিএনপি এদেশে আর সন্ত্রাসের রাজনীতি না করতে পারে। একই সাথে ’৭৫-এর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করতে হবে। তাহলেই প্রকৃত পক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব দরবারে আমাদেরকে সভ্য দেশ হিসেবে যে মর্যাদা এনে দিয়েছেন, নাম দিয়েছেন, সেই নাম আগামী প্রজন্ম টেনে নিয়ে যাবে।
যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা যে স্বাধীন দেশ পেয়েছিলাম, লাল সবুজের পতাকা পেয়েছিলাম, সেই লাল সবুজের পতাকা ধ্বংসকারী, দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তকারী, মুক্তিযুদ্ধে অনুপ্রবেশকারী, ’৭৫-এর ১৫ই আগস্ট মর্মন্তুদ হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড, হাজার হাজার সেনা-কর্মকর্তা হত্যাকারী খুনি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার করতে হবে। ’৭৫-এর হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যে রাষ্ট্র সারাবিশ্বে গণতন্ত্রের কথা বলে, মানবতার ফেরি করে বেড়ায় সেই আমেরিকাতেই পলাতক রয়েছে ১৫ই আগস্টের হত্যাকারী। কেন তারা খুনিদের ফিরিয়ে দিচ্ছে না, তাহলে তারা তো খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতা।

নিখিল আরও বলেন, সারা বাংলাদেশের যুবসমাবেশের দাবি ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার আসামি, দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি, খুনি তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানকে অবিলম্বে দেশে এনে রায় কার্যকর করতে হবে। একইভাবে ২০০১-২০০৬ সাল বিএনপি সারাদেশে হত্যা, লুটপাট, ধর্ষণ, বাড়িঘরে আগুন দেওয়া এবং ২০১৩-২০১৪ সালে সন্ত্রাসী কায়দায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, স্কুলকলেজ পুড়িয়ে দিয়েছিল, একারণে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা পাওয়া বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। সমাবেশ শেষে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে, আইন মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশন বরাবর স্মারকলিপি পেশ করে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রটিনিধি টিমে ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা। আইন মন্ত্রণালয়ে প্রতিনিধি টিমে ছিলেন, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিনিধি টিমে ছিলেন, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাড. মামুনুর রশীদ, মঞ্জুর আলম শাহীন, হাবিবুর রহমান পবন, ইঞ্জি. মৃনাল কান্তি জোদ্দার। নির্বাচন কমিশনে প্রতিনিধি টিমে ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু মুনির মোঃ শহিদুল হক চৌধুরী রাসেল, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শামছুল আলম অনিক।
এছাড়াও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন- যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম, মোঃ নবী নেওয়াজ, মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, তাজউদ্দিন আহমেদ, জসিম মাতুব্বর, মোঃ আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মোঃ মাজহারুল ইসলাম, ডা. হেলাল উদ্দিন, মোঃ সাইফুর রহমান সোহাগ, মোঃ জহির উদ্দিন খসরু, মোঃ সোহেল পারভেজ, মশিউর রহমান চপল, অ্যাড. ড. শামীম আল সাইফুল সোহাগ, ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইসমাইল হোসেন, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম রেজাউল করিম।

কালের আলো/ডিএস/এমএম