সঙ্কট মোকাবেলায় আস্থায়, ডাবল হ্যাটট্রিক পেরিয়ে তাকসিম এ খান
প্রকাশিতঃ 9:51 pm | July 24, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
এক বা দু’বার নয়। সাত সাতবার নিয়োগ। বছরের হিসেবে এক যুগ পেরিয়ে। টানা ১৩ বছর ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে তাকসিম এ খান। বিশাল চ্যালেঞ্জিং যাত্রাপথে আক্রোশের মুখে পড়েছেন বহুবার। অনেক গণমাধ্যমে তাকে দাঁড় করানো হয়েছে নেতিবাচক এক চরিত্র হিসেবে। কিন্তু পানির দাবিতে চিরচেনা আন্দোলনকে রীতিমতো হিমাঘারে পাঠিয়ে সরকারকে স্বস্তিতে রাখতে সফল হয়েছেন তিনি।
সঙ্কট মোকাবেলায় নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ওয়াসার উৎপাদিত পানির সিস্টেম লস শতকরা ৪০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে এনেছেন। আমূল পরিবর্তন ঘটিয়েছেন পানির গতি প্রবাহ ও উৎপাদন ব্যবস্থাপনায়। রাজধানীবাসীর চাহিদার চেয়ে ১০ কোটি লিটার বেশি পানি উৎপাদন করে সপ্তাহ দুয়েক আগে প্রশংসা পেয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। রাজস্ব আয় ৩০০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করেছেন। সাফল্যের সারি সারি চিত্রপটের নজির স্থাপন করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থা অর্জন করে বিরল এক রেকর্ড গড়েছেন তাকসিম এ খান। সপ্তমবারের মতো তাঁর নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
‘ঢাকা ওয়াসাকে বদলে দেয়ার সফল কারিগরের প্রতি সরকারপ্রধানের আস্থা রয়েছে। এমন দক্ষ নেতৃত্বকে সপ্তমবারের মতো নিয়োগ দিয়ে পুরস্কৃত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটি তাঁর যোগ্যতারই পুরস্কার, বলছিলেন ঢাকা ওয়াসার একাধিক কর্মকর্তা।
ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে ২০০৯ সালে তাকসিম এ খানকে প্রথম নিয়োগ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। পরে তার মেয়াদ বাড়ানো হয় ছয় দফা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ওপরেই পূর্ণ আস্থা রাখেন। ফলে তাকে সপ্তমবারের মতোন আরও তিন বছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছে সরকার। কাজের মাধ্যমেই নিজেকে বারবার প্রমাণ করেছেন ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান। তাঁর প্রাজ্ঞ নেতৃত্বেই ঢাকা ওয়াসা পানি সরবরাহের ক্ষেত্রে পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় হয়ে উঠেছে ‘রোল মডেল’।
সূত্র জানায়, ওয়াসার এমডি হয়েই তাকসিম এ খান কথা দিয়েছিলেন রাজধানীর এককজন মানুষও পানি সেবার বাইরে থাকবে না। প্রতিশ্রুতি পূরণ করেছেন। রাজধানীর পানি সরবরাহের নেটওয়ার্ক পদ্ধতি সাজিয়েছেন নতুন করে। ডিস্ট্রিক্ট মিটার এরিয়া বা ডিএমএ নামে একটি নেটওয়ার্ক পদ্ধতির আওতায় এনেছেন ওয়াসাকে। ঢাকাকে ১৪৫টি ক্লাস্টারে (ডিস্ট্রিক্ট মিটার এরিয়া বা ডিএমএ) ভাগ করেছেন। ইতোমধ্যে বেশিরভাগের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ডিএমএর কাজ এই বছরের মধ্যেই শেষ হবে। এই কাজ শেষ হলেই পানির মান নিয়ে আর কোন প্রশ্ন থাকবে না। একেকটি ভাগে পানি ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক করা হয়েছে। প্রতিটি নেটওয়ার্ক অন্যজনের থেকে আলাদা ও স্বয়ংসম্পূর্ণ।
এতে ২৪ ঘণ্টা এই এলাকাগুলোয় পানি থাকে। এক জায়গা থেকে নোংরা পানি অন্য জায়গায় যাওয়ার সুযোগ নেই। এটা স্মার্ট পানি ব্যবস্থাপনার একটি অংশ। এখন ৯০ ভাগ স্বচ্ছ পানি সরবরাহ করতে পেরেছে ঢাকা ওয়াসা। সামনের দিনগুলোতে এই স্বচ্ছতা ১০০ ভাগে নিয়ে যেতে চান এমডি তাকসিম এ খান।
আরও জানা যায়, ওয়াসার এই এমডি রাজধানীতে বসবাস করা শ্রমজীবী ও স্বল্প আয়ের মানুষকে বৈধভাবে পানির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। গত কয়েক বছরে বৈধভাবে রাজধানীর ৩০০ বস্তিতে ৬৩ হাজার ৬১৮ পরিবারকে পানি সরবরাহ করছে প্রতিষ্ঠানটি।রাজধানীবাসীর পয়ঃপরিশোধন করে পরিবেশ উপযোগী করতে একটি মেগা প্রকল্প নিয়েছে ঢাকা ওয়াসা। ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেছেন। দেশে এটিই প্রথম এমন সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট।
প্রতিদিন ৫০ মিলিয়ন লিটার পয়ঃশোধন ক্ষমতাসম্পন্ন দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম একক পয়ঃশোধন কেন্দ্র (এসটিপি) এটি। যা রাজধানীর আশপাশের নদীগুলোকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের গাইড লাইনে নদীগুলোকে বাঁচাতে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আরও একবার নিজেকে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন তাকসিম এ খান।
কালের আলো/আরআই/এমএইচ