শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে সিলেটের সংগ্রহ ১৭৫

প্রকাশিতঃ 8:33 pm | February 16, 2023

স্পোর্টস ডেস্ক, কালের আলো:

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ইতিহাসের সবচেয়ে সফল দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দলটি সর্বোচ্চ তিনবার বিপিএলের শিরোপা জিতেছে। টুর্নামেন্টের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নও দলটি।

অথচ নিজেদের চতুর্থ ফাইনালে এসে যেন স্নায়ুর কাছে হার মেনেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ক্রিকেটাররা। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ফাইনাল ম্যাচে কুমিল্লার ক্রিকেটাররা একের পর এক ফিল্ডিং আর ক্যাচ মিসের মহড়া দেখিয়েছে। যার ফলে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে কুমিল্লার বিপক্ষে ১৭৫ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে সিলেটের ব্যাটসম্যানরা। কুমিল্লার ফিল্ডাররা এদিন ন্যূনতম ৪টি ক্যাচ মিস এবং ফিল্ডিং মিসের মাধ্যমে সর্বনিম্ন ১৮ রানের মতো বাড়তি দেন।

মিরপুর শের ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে কুমিল্লার বিপক্ষে টসে হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার সিলেট। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৫ রান করেছে সিলেট। বিপিএলের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪র্থ শিরোপা জিততে হলে কুমিল্লাকে করতে হবে ১৭৬ রান।

এদিন ফিল্ডিংয়ে নেমে প্রথম ওভার থেকেই স্নায়ুচাপে ভুগতে থাকে কুমিল্লার ক্রিকেটাররা। আন্দ্রে রাসেলের করা প্রথম ওভার থেকেই ১৭ রান আদায় করে নেয় সিলেট। যারমধ্যে ৮ রান এসেছে ওভারথ্রোর কল্যাণে। সিলেটের ইনিংসের প্রথম বলে মুকিদুল ইসলামের বাজে থ্রোতে ৪ রান পায় শান্ত।

একই ওভারের শেষ বলে এবার ওভার থ্রোতে ৪ রান দেন তানভীর ইসলাম। প্রথম ওভারে ৪টি বাড়তি রান দেওয়া তানভীর বল হাতে নিয়েই সিলেটের উইকেট তুলে নেন। দারুণ ফর্মে থাকা তৌহিদ হৃদয়কে শূন্য রানে ফেরান এই বাঁহাতি স্পিনার। এদিনও প্রতিপক্ষকে চমকে দিয়ে তিনে নামেন সিলেটের অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা।

তবে এদিন আর দলের পক্ষে কার্যকরী ইনিংস খেলতে পারেননি এই ক্রিকেটার। বরং ১ রান করে আন্দ্রে রাসেলের বলে আউট হয়ে ফেরেন এই ব্যাটসম্যান। দলের বিপর্যয় ঠেকাতে এদিন মুশফিকুর রহিমকে পাঠানো হয় চারে। তৃতীয় উইকেট জুটিতে মুশফিক এবং শান্ত ৭৯ রানের দারুণ জুটি গড়ে সিলেটকে খেলায় ফেরান।

এরজন্য অবশ্য কুমিল্লার ফিল্ডারদেরও কৃতিত্ব দিতে হয়। একের পর এক ফিল্ডিং মিস এবং ক্যাচ মিসে সিলেটের ব্যাটসম্যানদের জীবন এবং রান দিতে থাকেন তারা। ক্যাচ মিসের শুরু মুস্তাফিজের হাত ধরে। সুনীল নারিনের বলে শান্ত’র ক্যাচ মিস করে প্রথম জীবন দেন কুমিল্লার ফিল্ডাররা।

এদিন ফিফটি হাঁকিয়ে বিপিএলের ইতিহাসের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে পাঁচশ রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন শান্ত। শেষ পর্যন্ত ৬৪ রান করে মঈন আলীর বলে ডাউন দ্য ট্র্যাকে এসে মারতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। শান্ত ফাইনালের এই ইনিংসের সুবাদে মোট ৫১৬ রান করেছেন এই সিজনে।

শান্তর বিদায়ের পর দ্রুত কিছু উইকেট হারাতে থাকে সিলেট। দলটির পক্ষে বিদেশি তিন রিক্রুট রায়ান বার্ল ১৩ রান, থিসারা পেরেরা শূন্য এবং জর্জ লিন্ডে ৯ রান করতে পেরেছেন এদিন। টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান জাকির হাসান নিচের দিকে নেমে করতে পেরেছেন মাত্র ১ রান। এরমধ্যে জর্জ লিন্ডেকে ২বার এবং রায়ান বার্লকে একবার জীবন দিয়েছে কুমিল্লার ফিল্ডাররা।

উইকেট হারালেও একপ্রান্তে একাই খেলে গেছেন সিলেট এবং জাতীয় দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। ৪৮ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছয়ে করেছেন অপরাজিত ৭৪ রান। এই ব্যাটসম্যানের চলতি সিজনের সেরা ইনিংসের সুবাদেই বড় স্কোর গড়েছে সিলেট।

মুস্তাফিজের ওভারে তিনটি ক্যাচ মিস সত্ত্বেও এই পেসার ২ উইকেট শিকার করেছেন। কুমিল্লার পক্ষে ফাইনালের দিনের সেরা বোলার রান খরচ করেছেন ৩১। এই পেসার ছাড়া রাসেল, তানভীর, নারিন এবং মঈন আলী নেন ১টি করে উইকেট।

কালের আলো/এমএইচ/এসবি