ইনিংস ব্যবধানেই হারলো বাংলাদেশ
প্রকাশিতঃ 11:44 am | January 11, 2022

স্পোর্টস ডেস্ক, কালের আলো:
মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ, দুটোই দেখে ফেলল বাংলাদেশ। যাওয়ার আগে প্রত্যাশা অবশ্য তেমন ছিল না। কিন্তু প্রথম টেস্টে দুর্দান্ত খেলার পর, দ্বিতীয় ম্যাচে ভালো কিছুর আশা করাটাও বাড়াবাড়ি ছিল না। কিন্তু এমনভাবে বাংলাদেশ হতাশ করল, তার মধ্যেও অবশ্য রঙিন হয়ে থাকলে লিটন দাসের দারুণ এক ইনিংস।
হ্যাগলি ওভালে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষটিতে বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ও ১১৭ রানে। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ৫২১ রান করে নিউজিল্যান্ড। দুই ইনিংস মিলিয়েও ওই রান করতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ১২৬ ও পরের ইনিংসে ২৭৮ রান করে অলআউট হয় মুমিনুল হকের দল।
শৈল্পিক ব্যাটিংয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস পরাজয় এড়ানোর আশাও বাঁচিয়ে রেখেছিলেন লিটন। কিন্তু অপরপ্রান্তে তার সঙ্গে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি আর কোনো ব্যাটার। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও হতাশ করেছেন টপঅর্ডার ব্যাটাররা। ১৪ চার ও ১ ছক্কায় ১১৪ বলে ১০২ রান করে আউট হন তিনি। তার আউটের সঙ্গে দ্রুতই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশও। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে এবাদতের উইকেট নিয়ে ম্যাচের ইতি টানেন রস টেইলর।
এর আগে ফলোঅনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২৭৮ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১০২ রান করেছেন সেঞ্চুরিয়ান লিটন দাস। ১৮৯ মিনিট ব্যাট করে ১১৪ বল মোকাবিলা করেছেন তিনি। মেরেছেন ১২টি বাউন্ডারি ও একটি ছক্কা।
তবে সেঞ্চুরি করেও ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে পারেননি লিটন। দিনের শেষ সেশনের কিছু সময় বাকি থাকতেই বাংলাদেশের সবগুলো উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের হাসি হাসে টম ল্যাথামের দল।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের শুরুটা বেশ সাবধানীই ছিল। হ্যাগলি ওভালে আজ প্রথম সেশনে বাংলাদেশ ২৮ ওভারে ২ উইকেটে ৭৪ রান সংগ্রহ করে। কিন্তু নিল ওয়াগনার ও কাইল জেমিসন মিলে পরের দুই সেশনে বাংলাদেশের ব্যাটিং ছন্দ এলোমেলো করে দেন। স্কোরবোর্ডে ১২৮ রান তুলতে বাংলাদেশের ৫ টপ অর্ডারকে তুলে নেন তারা। তবে ৫ উইকেট হারানোর চাপ সামলে বাংলাদেশকে দারুণ ইনিংস উপহার দেন লিটন।
দৃষ্টিনন্দন ব্যাটিংয়ে তুলে নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ও দেশের বাইরে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি। তাঁর সেঞ্চুরিতেই ইনিংস ব্যবধান হার এড়ানোর কিছুটা স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ। কিন্তু লিটন ফিরলে সেই স্বপ্ন দ্রুতই শেষ হয়ে যায়। তিনি ফেরার কিছুক্ষণ পরই বাংলাদেশের সবগুলো উইকেট তুলে নিয়ে জয়ের উচ্ছ্বাস ভাসে নিউজিল্যান্ড।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে বল হাতে ৮২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন জেমিসন। ৭৭ রান খরচায় তিন উইকেট নেন ওয়াগনার।
এর আগে গতকাল সোমবার প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১২৬ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। ৩৯৫ রানে এগিয়ে থেকে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় ইনিংসে ফলোঅনে ব্যাট করতে পাঠায় কিউইরা।
প্রথম ইনিংসে ইয়াসির আলী রাব্বি ও নুরুল হাসান সোহান ছাড়া ব্যাটিংয়ে কেউই থিতু হতে পারেননি। বেশি হতাশ করেছেন টপ অর্ডাররা। ব্যাটিংয়ে নেমেই তাঁরা উইকেটে আসা-যাওয়ার মিছিলে ছিলেন। স্কোরবোর্ডে ১১ রান তুলতেই এরই মধ্যে চার উইকেট হারিয়ে ফেলে মুমিনুল হকের দল।
ব্যাটিংয়ের শুরুতেই সাদমান ইসলামকে (৭) হারায় বাংলাদেশ। তৃতীয় ওভারেই ফিরে যান অভিষিক্ত মোহাম্মদ নাঈম। রানের খাতাও খুলতে পারেননি প্রথম টেস্ট খেলতে নামা নাঈম। জোড়া উইকেট হারানোর পর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ফের হারায় আরও দুটি উইকেটে। সাজঘরে ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত (৪) ও মুমিনুল হক (০)। এরপর হারায় লিটন দাসের উইকেটও। দ্রুত ৫ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
এরপর কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন নুরুল ও ইয়াসির। কিন্তু, দুজনের প্রতিরোধেও কিউইদের বোলিং চাপ সামলাতে পারেনি বাংলাদেশ। ৯৫ বলে ৫৫ রান করে আউট হয়ে যান ইয়াসির। তাঁর আগে ৬৬ বলে ৪১ রান করে সাজঘরে ফেরেন নুরুল হাসান। বাকিরা কেউ ১০-এর ঘরও অতিক্রম করতে পারেননি।
তার আগে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫২১ রান তুলেছে নিউজিল্যান্ড। ডাবল সেঞ্চুরি করা ল্যাথাম খেলেছেন দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৫২ রানের ইনিংস। আরেক সেঞ্চুরিয়ান কনওয়ে খেলেছেন ১০৯ রানের ইনিংস।
কালের আলো/এসবি/এনএল