লঙ্কানদের মাটিতে ইতিহাস গড়ে সিরিজ জয় বাংলাদেশের

প্রকাশিতঃ 11:32 pm | July 16, 2025

স্পোর্টস ডেস্ক, কালের আলো:

দেশ কিংবা দেশের বাইরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এর আগে কখনও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। অবশেষে সেই আক্ষেপ ঘুচলো। লঙ্কানদের তাদেরই মাটিতে হারিয়ে ইতিহাস গড়লো লিটন দাসের দল। শ্রীলঙ্কার মাটিতেও এটি বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়।

কলম্বোয় তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি ছিল অঘোষিত ফাইনাল। সিরিজ নির্ধারণী সে ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৮ উইকেট আর ২১ বল হাতে রেখে সহজেই হারালো বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে ২-১ ব্যবধানের জয়ে প্রথমবারের মতো শ্রীলঙ্কাকে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারালো টাইগাররা।

লক্ষ্য খুব বড় নয়, ১৩৩ রানের। তবে প্রথম বলেই পারভেজ হোসেন ইমনকে হারিয়ে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। নুয়ান তুষারার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে গোল্ডেন ডাকে ফেরেন ইমন।

তবে তানজিদ হাসান তামিম আর লিটন দাস ৫০ বলে ৭৪ রানের জুটি গড়ে দলকে অনেকটা পথ এগিয়ে দেন। ২৬ বলে ২ চার আর ১ ছক্কায় ৩২ করে আউট হন লিটন।

বাকি পথটুকু সহজেই পাড়ি দিয়েছেন তামিম আর তাওহিদ হৃদয়। ৪৮ বলে ৫৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ম্যাচ বের করেই ফিরেছেন তারা। ৪৭ বলে ১ চার আর ৬ ছক্কায় হার না মানা ৭৩ করেন তানজিদ তামিম। ২৫ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন হৃদয়।

এর আগে ১৯ ওভারে শ্রীলঙ্কার রান ছিল ৭ উইকেটে ১০৫। শেষ ওভারে শরিফুল ইসলাম উদারহস্তে দিলেন ২২ রান। সব মিলিয়ে ৪ ওভারে এই পেসারের খরচ এক উইকেট নিয়ে ৫০ রান।

শরিফুলের ওই শেষ ওভারের সৌজন্যে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কা তোলে ৭ উইকেটে ১৩২ রান।

প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে বুধবার (১৬ জুলাই) টস জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। শুরুটা বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই করেছিলেন পাথুম নিশাঙ্কা।

প্রথম ওভারে লাইন লেন্থ ঠিক ছিল না শরিফুল ইসলামের। ১৪ রান খরচ করেছেন। শেষ বলটিও ছক্কা হতে পারতো। কিন্তু কুশল মেন্ডিসের (৪ বলে ৬) হাঁকানো শট ডিপ স্কয়ার লেগে হয়ে যায় তাওহিদ হৃদয়ের ক্যাচ।

পরের ওভারে আঘাত হানেন শেখ মেহেদী। তার ঘূর্ণিতে স্লিপে তানজিদ হাসান তামিমকে ক্যাচ দেন কুশল পেরেরা, ফেরেন গোল্ডেন ডাকে। ১৯ রানে ২ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।

ইনিংসের পঞ্চম এবং মেহেদী নিজের দ্বিতীয় ওভারে তুলে নেন দিনেশ চান্দিমালকে। মিড অনে খেলতে গিয়ে বল সোজা আকাশে উঠে যায়। জাকের আলীর ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফেরেন চান্দিমাল (৫ বলে ৪)। ৩৪ রানে তৃতীয় উইকেটের পতন ঘটে লঙ্কানদের।

শেখ মেহেদী নিজের পরের ওভারে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন চারিথ আসালাঙ্কাকে। লঙ্কান অধিনায়ক ৮ বল খেলে করতে পারেন মাত্র ৩ রান।

বাংলাদেশি এই অফস্পিনার নিজের শেষ ওভারেও উইকেট পেয়েছেন। ইনিংসের ১১তম ওভারে তিনি নিজেই ক্যাচ নিয়ে ফিরিয়েছেন একপ্রান্ত ধরে লড়াই করতে থাকা নিশাঙ্কাকে। ৩৯ বলে ৪৬ রান করেন লঙ্কান এই ব্যাটার। ৬৬ রানে ৫ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।

এরপর শামীম পাটোয়ারীর বলে কামিন্দু মেন্ডিস রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে তানজিম সাকিবের দুর্দান্ত ক্যাচ হন। ১৫ বলে মেন্ডিস করেন ২১ রান।

৮৮ রানে ৬ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কা শেষদিকে দাসুন শানাকার ব্যাটে লড়াই করার মতো পুঁজি পেয়েছে। শানাকা ২৫ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় করেন অপরাজিত ৩৫।

শেখ মেহেদী ১১ রানের বিনিময়ে নেন ৪টি উইকেট। একটি করে উইকেট শরিফুল, মোস্তাফিজুর রহমান আর শামীম পাটোয়ারীর।

কালের আলো/এমএএএই্চএন