‘পানির অভ্যন্তরীণ উৎসকে কাজে লাগাতে নেয়া হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা’

প্রকাশিতঃ 3:05 pm | December 02, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলোঃ

দেশে সুপেয় পানির অভাব দূর করতে অভ্যন্তরীণ উৎসকে কাজে লাগিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেছেন, উপকূলীয় অঞ্চলসহ সারাদেশে সুপেয় পানি সরবরাহে ওয়াটার গ্রীড লাইন স্থাপনে একটি মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নে স্ট্যাডির কাজ চলছে ।

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিল ভবনে আইটিএন-বুয়েট আয়োজিত ‘শহরব্যাপী অন্তর্ভুক্তিমূলক স্যানিটেশনের প্রসার এবং স্যানিটেশন উদ্ভাবন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থাপনাসহ মানুষের উন্নত জীবন ব্যবস্থার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে হলে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি জাতিসংঘের অনেকগুলো পূর্ব-শর্ত পূরণ করতে হবে। এজন্য সমন্বিত উদ্যোগ দরকার। তাই সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।

তিনি আরও জানান, দেশে ইকোনমিক জোন হচ্ছে। যেখানে অনেক ধরনের শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠিত হবে। সেখানে প্রচুর পানির প্রয়োজন হবে। এখন থেকে যদি পানি সরবরাহে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয় তাহলে পরবর্তীতে সংকট দেখা দিবে। এ সময় মিরেরসরাই ইকোনমিক জোনে মেঘনা নদী থেকে পানি উত্তোলন করা হবে বলেও জানান।

চট্টগ্রাম ওয়াসা নতুন একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করতে যাচ্ছে জানিয়ে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, দেশের পানির সমস্যা সমাধানে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন ঢাকা ওয়াসাসহ অন্যান্য ওয়াসা অনেকগুলো ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করেছে। এছাড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য পানি ও স্যানিটেশন নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, নগরায়ন বৃদ্ধির সাথে সাথে শহর গুলোতে স্যানিটেশন সমস্যা বৃদ্ধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, প্রযুক্তিগত উদ্যোগ, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে ব্যাপকভাবে স্যানিটেশনের উন্নয়ন কাজ করতে হবে।

নিরাপদ স্যানিটেশন শুধু বাংলাদেশ নয় সারা বিশ্বই এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জানান, শহর ব্যাপী অন্তর্ভুক্তিমূলক স্যানিটেশন বা সিটি ওয়াইড ইনক্লুসিভ স্যানিটেশন’ স্যানিটেশনের সামগ্রীক ইস্যুকে প্রাধান্য দেয়। এটি সকলের জন্য সমতাভিত্তিক, নিরাপদ এবং টেকসই স্যানিটেশন সমাধান নিশ্চিত করায় বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।

দেশে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাসাবাড়ির ও মেডিক্যাল বর্জ্যসহ সব ধরনের ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে সচেতন থাকতে হবে

মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরের আবাসিক এলাকার অনেক বাসাবাড়ি নিজস্ব সেপটিক ট্যাংক নেই। তারা স্যুয়ারেজ লাইন সরাসরি লেকে বা খালে ফেলে দেয়। এ ব্যাপারে সকলকে সচেতন করতে ক্যাম্পেইন চালানো হচ্ছে। এ সময়ের মধ্যে নিজেদের সেপটিক ট্যাংক না করলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

বুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সত্য প্রসাদ মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এবং বুয়েটের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবদুল জব্বার খান। গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের ডেপুটি ডিরেক্টর ড. রোসান রাজ শ্রেষ্ঠা।

এছাড়া, এলজিইডি প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রশিদ খান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সাইফুর রহমান, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এবং বুয়েটের সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/টিআরকে/এসআইএল