করোনার টিকার এসএমএস ‘দ্রুত দেওয়ার’ নামে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ৪
প্রকাশিতঃ 9:28 pm | September 02, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:
মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ পাঠিয়ে বিদেশগামী ব্যক্তিদের দ্রুত করোনার টিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল একটি প্রতারক চক্র। তারা দ্রুত এসএসএস পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে এই প্রতারণা করে আসছিল। এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর মুগদা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তাদের কাছ থেকে প্রতারণায় ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব বলেছে, গ্রেফতার ব্যক্তিরা দুই শতাধিক বিদেশগামী ব্যক্তিদের কাছ থেকে আড়াই থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে নিয়েছে। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হচ্ছেন- নুরুল হক, সাইফুল ইসলাম, ইমরান হোসেন ও দুলাল মিয়া।
বৃহস্পতিবার (০২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এই চক্রটি মূলত বিদেশগামীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল। বেশ কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে, কিছু প্রতারক রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালের সামনে অবস্থান করে বিদেশগামী টিকা প্রার্থীদের দ্রুত এসএমএস প্রদানের নামে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
‘এর ভিত্তিতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই চক্রটি প্রত্যেকের কাছ থেকে আড়াই থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়েছে। প্রায় দুইশ জনের সঙ্গে তারা এভাবে প্রতারণা করেছে।’
তিনি বলেন, চক্রটি দ্রুততম সময়ে টিকাদানের এসএমএস পাঠিয়ে দেওয়ার নামে টাকা নিলেও কেউ কেউ স্বাভাবিক নিয়মেই এসএমএস পেয়েছেন আবার কেউবা প্রতারিত হয়েছেন। নুরুল হক এ চক্রের হোতা। সাইফুল এবং ইমরান হাসপাতালের সামনে ঘোরাফেরা করতেন এবং টিকা প্রত্যাশীদের দ্রুত এসএমএস পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নুরুল হকের কাছে নিয়ে যেতেন।
কমান্ডার মঈন বলেন, নুরুল হক টিকার এসএমএস নিয়ে দর কষাকষি করতেন। টাকার পরিমাণ নিয়ে বোঝাপড়া হয়ে গেলে তাকে দুলালের কাছে নেওয়া হত। টাকার অঙ্কের উপর নির্ভর করে কত দিনের মধ্যে এসএমএস পাওয়া যাবে সে বিষয়ে আশ্বস্ত করতেন দুলাল।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চক্রটি রাজধানীর মুগদা, শাহবাগ, রমনা, শেরেবাংলা নগর, মিরপুর, মহাখালী ইত্যাদি এলাকায় সক্রিয় ছিল। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং এসএমএস এর মাধ্যমেও ‘প্রচারণা’ চালাত।
‘তাদের প্রচারের বার্তায় লেখা ছিল ‘যারা টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করছে কিন্তু এসএমএস পাইতেছে না তাদের একদিনে এ টিকা নিয়ে দেওয়া যাবে। যারা নতুন, তাদের চারদিনের মধ্যে রেজিষ্ট্রেশন করে টিকা নিয়ে দেওয়া যাবে’।’
র্যাব জানায়, নুরুল হক দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। ২০১৮ সালে দেশে ফিরে আসার পর ভিসা জটিলতায় আর যেতে পারেনি। ইমরান হোসেন একটি ট্র্যাভেল এজেন্সিতে চাকরি করেন।
সাইফুল ইসলাম রমনা এলাকার চা দোকানি। একসময় তিনি আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করতেন। সেসময় ফর্ম পূরণের নামে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তিনি চাকরিচ্যুত হন।
দুলাল মিয়া একটি হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে গাড়ি চালক হিসেবে হাজ করছেন। তবে তিনি কোন হাসপাতালে কাজ করেন তা জানায়নি র্যাব।
কালের আলো/এসবি/এমএম