স্পেনে খ্রিস্টানদের গির্জায় আজান, ইফতার করছে মুসলিমরা

প্রকাশিতঃ 12:56 pm | May 06, 2021

ডেস্ক রিপোর্ট, কালের আলো:

গির্জায় আজানের ধ্বনি! শুনতে অবাক লাগলেও এমনই দৃশ্যের সাক্ষী হয়েছে স্পেনের বার্সেলোনা। সেখানে ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে গির্জায় চলছে ইফতারির আয়োজন। করোনার কারণে অল্প জায়গায় জমায়েত নিষিদ্ধ থাকায় মুসল্লিদের জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে গির্জা। যেখানে একসাথে ইফতারি করতে পারছেন অর্ধশতাধিক মানুষ।

আজানের ধ্বনিতে মুখরিত পুরো প্রাঙ্গণ। বিনা সংকোচে প্রাণ খুলে মহান আল্লাহকে ডাকছেন মুসলিমরা। ইফতারের আগে এ যেন সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্ত। আজান শেষে সবাই সারাদিনের সিয়াম পালন শেষে খোলেন রোজা।

আগত মুসল্লিরা বলেন, আমি মুসলিম তিনি ক্যাথলিক খ্রিস্টান, এটা বড় পরিচয় নয়। বড় পরিচয় হলো আমরা মানুষ। মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টিই হচ্ছে পবিত্র ধর্ম ইসলামের বৈশিষ্ট্য। রমজান আমাদের সংযমের শিক্ষা দেয়। আমরা সেই শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারছি কিনা সেটাই বড় কথা। মসজিদ আল্লাহর ঘর। খ্রিস্টানরা মনে করেন, গির্জাও স্রষ্টার ঘর। তাই তারা মুসলিমদের এ সুযোগ দিয়েছেন।

এখানে উপস্থিত সবাই বলছেন, ধর্মীয় বিভেদ ভুলে তারা এক কাতারে এসেছেন। বিভেদ পৃথিবী থেকে দূর হয়ে গেলে, কমে আসবে সংঘর্ষ। মানুষের জন্য শান্তির হবে পুরো ধরণী।

বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে, একসঙ্গে অনেক মানুষ সমবেত হতে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। নির্দিষ্ট বড় জায়গার অভাবে মুসলিমরা এক হতে পারছিলেন না। তাই গির্জায় বেশি মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেন একসঙ্গে ইফতার করতে পারেন এ-জন্যই এটি খুলে দেয়া হয়েছে, জানান সান্তা আন্না গির্জার ফাদার পিও সানচেজ।

Man takes a picture with a mobile during a charity Ramadan dinner in the cloister at Santa Anna church during the coronavirus disease (COVID-19) outbreak, in Barcelona, Spain, April 28, 2021. Picture taken April 28, 2021. REUTERS/Albert Gea

তিনি বলেন, ভিন্ন ধর্মের, ভিন্ন ভাষার রাজনীতিবিদরা যদি এক হয়ে সমস্যার সমাধান করতে পারেন তাহলে আমরাও পারি। আমরা সম্প্রীতির সেই নিদর্শন সৃষ্টি করলাম।

অন্তত ৫০ থেকে ৬০ জন মুসলিম প্রতিদিন বিকেলে জড়ো হন এখানে। করেন দোয়া মোনাজাত, ইফতার। যাদের বেশিরভাগই গৃহহীন। বিভিন্ন দেশ থেকে স্পেনে আসা শরণার্থী ছাড়াও স্থানীয় মুসলিমরাও উপস্থিত হন এখানে।

বার্সেলোনায় ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে গির্জায় এমন আয়োজন ইতোমধ্যে নজর কেড়েছে সবার। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে যা ফলাও করে প্রচার হচ্ছে।