ময়মনসিংহে গৃহবধূ হত্যাচেষ্টা, আদালতে চিকিৎসকের জবানবন্দি

প্রকাশিতঃ 9:25 pm | June 08, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

যৌতুক না দেওয়ার অপরাধে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে শিরিনা আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন স্থানীয় হোমিও চিকিৎসক মো. ফারুক (৩৫)।

শনিবার (৮ জুন) বিকেলে ঈশ্বরগঞ্জ আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় তিনি এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ও মামলার এজাহারভুক্ত দুই আসামি স্বামী শরীফ মিয়া (২৮) ও শ্বশুর শাহাবুদ্দিনকে (৫৫) খুঁজছে পুলিশ।

স্থানীয়রা ও পুলিশ সূত্র জানায়, উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের পূর্ব কুমারুলী গোয়ালপাড়া গ্রামের আবদুল হাইয়ের মেয়ে শিরিনাকে কয়েক বছর আগে স্থানীয় মাছিমপুর গ্রামের শাহাব উদ্দিনের ছেলে শরীফ মিয়ার (২৮) সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের সময় যৌতুক বাবদ শরীফকে নগদ ৭৫ হাজার টাকা ও অন্যান্য আসবাবপত্র দিয়েছেন।

কিন্তু আরো যৌতুক দাবিতে প্রতিনিয়তই স্বামী ও তার স্বজনরা শিরিনার ওপর নির্যাতন করতে থাকেন। সপ্তাহখানেক আগে তাকে আবারো টাকার জন্য তাগাদা দেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে তিনি বাবার বাড়িতে ফোন করে জানান তাকে ব্যাপক নির্যাতন করা হচ্ছে যৌতুকের দাবিতে।

পরে শিরিনার স্বজনরা তার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখতে পান তাকে কলাপাতায় শুইয়ে রাখা হয়েছে। তবে তার শাশুড়ি হাসিনা বেগম (৫৫) দাবি করেন, শিরিনা নিজেই শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করতে চেয়েছেন।

গত বৃহস্পতিবার (৬ জুন) তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় গত শুক্রবার (৭ জুন) শিরিনার বাবা আব্দুল হাই বাদী হয়ে স্বামী শরীফ, শ্বশুর শাহাবুদ্দিন (৫৫), শাশুড়ি হাসিনা, দেবর মিজান (২২) ও গ্রামের হোমিও চিকিৎসক ফারুককে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। সেদিনই শাশুড়ি হাসিনা, দেবর মিজান ও গ্রামের হোমিও চিকিৎসক ফারুককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ওসি আহমেদ কবির বলেন, আমাদের চিকিৎসক জানিয়েছেন শিরিনার শরীরের ৬০ ভাগের বেশি আগুনে পুড়ে গেছে। শুক্রবার (৭ জুন) রাতে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।

কালের আলো/এমআর/এমএম