হাসিনার ‘সহযোগী’ ঢাবি শিক্ষকদেরও বিচার চায় সাদা দল
প্রকাশিতঃ 2:36 pm | July 13, 2025

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, কালের আলো:
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও তার সহযোগী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছে জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
রোববার (১৩ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় ক্যাম্পাসের ‘অপরাজেয় বাংলা’র পাদদেশে এ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়।
মানবন্ধনে সাদা দলের আহ্বায়ক মোর্শেদ হাসান খান বলেন, “আমাদের আজকের প্রোগ্রামের দুটি এজেন্ডা, খুনি হাসিনার যে রেকর্ড ফাঁস হয়েছে- তার বিচার দাবি এবং তার সঙ্গে যারা উৎসাহ প্রদান করেছে- বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক তৎকালীন সরকারকে ব্ল্যাংক চেক দিয়েছিল যে- ‘আপনারা গুলি চালান’।
“এখন সেই আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিপক্ষে বিবৃতি দিয়েছে। এখন আমার প্রশ্ন হলো, যেইদিন আমাদের সন্তানদের উপর গায়ে হাত তোলা, অত্যাচার করা এবং হত্যার হুকুম করা হয়েছিল, সেইদিন আপনাদের বিবেক কই ছিল? সেই দিন তো আপনারা বিবৃতি দেননি। আমি পরিষ্কারভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব শিক্ষকদের বিচার দাবি করছি।”
তিনি বলেন, “এখানে কোনো লুকোচুরি নেই, তারা সেই সময়ে গণভবনে গিয়েছে এবং ভিডিও ফুটেজ ও ইলেকট্রনিক-প্রিন্ট মিডিয়াতে তার প্রমাণ রয়েছে।
“সেই সকলের উপর ভিত্তিতে সরকার ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বান জানাব- এদের বিচার করার জন্য।”
সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কালাম সরকার বলেন, “যত দ্রুত সময়ের মধ্যে শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত করা হবে, এটাই হবে এদেশে সবচেয়ে বড় সংস্কার। স্বল্প সময়ের মধ্যে শেখ হাসিনার বিচার সম্পন্ন করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদের আমিরে পরিণত করেছে যারা, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার চিহ্নিত ফ্যাসিবাদের দোসর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নামের কলঙ্ক যারা- শেখ হাসিনাকে উৎসাহ দিয়ে ফ্যাসিবাদের পথকে সহজ করে দিয়েছে, ছাত্র-জনতা ও সকল শ্রেণির পেশার মানুষের উপর জুলুম-অত্যাচার করার ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে যারা পথ দেখিয়েছে- তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে “
সাদা দলের কোষাধ্যক্ষ আল-আমিন বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন রক্তাক্ত হয়, তখন আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরা এগিয়ে আসেনি। আমরা যখন প্রতিবাদে দাঁড়িয়ে ছিলাম- আমাদের ছবি তুলে নেওয়া হয়েছে, বিভিন্ন এজেন্সি থেকে কল করা হয়েছিল।
“আন্দোলন দমনে তারা মাকসুদ কামালের বাসাকে অস্থায়ী কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করতো। একদিনে ফ্যাসিস্ট জন্ম নেয়নি, অন্যান্য শ্রেণির পাশাপাশি শিক্ষকদের ভূমিকা ছিল। ৩ অগাস্ট বুদ্ধিজীবীরা নির্বিচারে গুলি চালানোর বুদ্ধি দিয়ে আসে। এই তথ্য গণমাধ্যমেও এসেছে। সুস্পষ্ট তথ্য-প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও এতো গড়িমসি কেন?”
অধ্যাপক আল-আমিন বলেন, “ আমাদের তিনটি তালিকা আমাদের হাতে আছে। একটি তালিকায় ৭৮ জন শিক্ষককে শিক্ষার্থীরা বয়কট করেছে। ৭১ জন শিক্ষকের বিবৃতিতে যারা আছেন, বেশিরভাগ বয়কটকৃত।
“সাধারণ শিক্ষকের নামে নতুন প্ল্যাটফর্ম আনতে চায়, যার মাধ্যমে ফ্যাসিবাদকে সার্ভ করতে চায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহ্বান তাদেরকে কঠোর হাতে দমন করুন। যাদের রক্তের অবদানে আমরা আজকের অবস্থানে এসেছি, তাদের স্পিরিটকে ধারণ করতে হবে।”
জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের অপসারণ এবং মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবি করা হয় মানববন্ধনে।
কালের আলো/এমডিএইচ