মূল নকশায় কেওয়াটখালী স্টিল আর্চ ব্রিজ নির্মাণের দাবি

প্রকাশিতঃ 1:47 pm | July 13, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

পরিবর্তিত নকশার বিপরীতে একনেক অনুমোদিত নকশায় ময়মনসিংহের কেওয়াটখালী স্টিল আর্চ ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছে সদাজাগ্রত ময়মনসিংহ নামক এক সংগঠন।

রোববার (১৩ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

এ সময় সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক আবুল কালাম আল আজাদ বলেন, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর ও শেরপুরের মানুষ ঢাকা ও অন্যান্য জেলায় যাতায়াতের জন্য ময়মনসিংহ শহর অতিক্রম করেন। ফলে ময়মনসিংহবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ময়মনসিংহ শহরে বিকল্প সেতু নির্মাণের। ২০১৪ সালে ময়মনসিংহ স্ট্যাটেজিক ডেভলপমেন্ট প্ল্যান বা এমএসডিপি (২০১০) তে এশিয়ান হাইওয়ের অংশ হিসেবে নগরীর কেওয়াটখালী এলাকায় একইসঙ্গে সড়ক ও রেলওয়ে সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়। ২০২১ সালে একনেক অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী কেওয়াটখালী স্টিল আর্চ ব্রিজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই নকশায় রেলপথ যুক্ত করা হয়নি।

তিনি বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩ হাজার ২৬৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ ২০২৫ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। দুঃখের বিষয় হলো, কেওয়াটখালী সেতু নির্মাণের কাজ এখনও নকশা অনুযায়ী শুরু হয়নি, কিন্তু কাজ চলছে নকশার বাইরে। মূল নকশা পরিবর্তন করে শম্ভুগঞ্জ চায়না মোড়ে ২৩০০ মিটার বাঁকা ইংরেজি ইউ আকৃতির সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। এই অস্বাভাবিক বাঁকা সড়ক গিয়ে মিশেছে পুরনো চায়না সেতুর সংযোগ সড়কে। এমনিতেই পুরনো চায়না সেতুর সংযোগ সড়কে তীব্র যানজট লেগে থাকে। এখন দুটি সেতুর সংযোগ সড়ক একটি হওয়ায় পুরো ময়মনসিংহ নগরী ও আশপাশের এলাকা স্থবির হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। অথচ একনেক নকশার বাইরে এই অস্বাভাবিক বাঁকানো অংশ তৈরি করতে একটি খাল, সাতটি জলাশয়, কৃষিজমি, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মাদরাসা, ৬৫টি কবর, দোকানপাট, কারখানা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত ৩২ একর ভূমি অধিগ্রহণ করতে হচ্ছে এবং ৩০ ফুট উঁচু প্রায় ২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করতে হচ্ছে। অতিরিক্ত জায়গায় রেল ও সড়ক ওভারপাস নির্মাণে মূল বাজেটের অতিরিক্ত ২ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে।

আবুল কালাম আল আজাদ বলেন, ময়মনসিংহের জনগণ বারবার এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন। তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা ও সচিব বরাবর এর প্রতিকারে আবেদন করেছেন। ফলে চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি মন্ত্রণালয় থেকে চার সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ২৫ ও ২৬ জানুয়ারি কমিটি সদস্যরা সরেজমিন তদন্তে যান। কিন্তু এখনো তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। উপরন্তু অভিযোগকারী এবং আন্দোলনকারীদের হুমকি-ধামকি, হামলা ও মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। সবশেষ আমরা বাধ্য হয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছি।

আমরা কেওয়াটখালী স্টিল আর্ট ব্রিজের বিপক্ষে নই। আমরা চাই, সেতুর শম্ভুগঞ্জ সংযোগ সড়কটি এমনভাবে নির্মাণ করা হোক, যেন দুই সেতুর সংযোগ সড়ক একটা না হয়। মূল একনেক নকশার বাইরে গোষ্ঠী স্বার্থে নির্মাণাধীন কাজ বন্ধ করা হোক।

কালের আলো/এসএকে