ঘৃণা নয়, বিচার হোক আওয়ামী দুঃশাসনের

প্রকাশিতঃ 3:54 pm | July 12, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

অভ্যুত্থান চাইলেই হয় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল। তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের শোষণ, নির্যাতন, লাঞ্ছনা ও বঞ্চনায় পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশই ছিল জুলাই অভ্যুত্থান। গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ গুম-খুনসহ যেসব অপকর্ম করেছে সেজন্য তাদের প্রতি ঘৃণাই যথেষ্ট নয়, বরং যথাযথ বিচার অপরিহার্য।

শনিবার (১২ জুলাই) এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে এসব কথা বলেন তিনি। ‘জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়নে নাগরিক সচেতনতার ভূমিকাই মুখ্য’ বিষয়ে এ ছায়া সংসদ অনুষ্ঠিত হয়।

মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল বলেন, জীবন-মৃত্যুর অদ্ভুত সমীকরণে উপনীত হয় গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তি ও তার পরিবার। গুমের শিকার পরিবার ঈদ, পূজা-পার্বণ, উৎসব পালন করতে পারে না, তাদের পরিবারের প্রতীক্ষার দিন শেষ হয় না। গুম পৃথিবীর জঘন্যতম অপরাধ।

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মারণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে শেখ হাসিনা ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায়ের সৃষ্টি করেছেন। আওয়ামী লীগকে যদি কেউ পুনর্বাসন করতে চায় তাহলে সেটি হবে অপরাধীর পক্ষে অবস্থান নেওয়া। ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির ঐক্য অপরিহার্য। বর্তমানে এই ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্র চলছে। এই ঐক্যে কোনো বিভেদ সৃষ্টি করা যাবে না। একটি বিশেষ দলকে টার্গেট করে নানা অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। সন্ত্রাসী যেই হোক না কেন তাকে আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে হবে।

ছায়া সংসদে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই আন্দোলনের প্রতিটি হত্যাকাণ্ড শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে সংঘটিত হয়েছে। শেখ হাসিনা ছিলেন একজন নিষ্ঠুর, অমানবিক ও ফ্যাসিস্ট স্বৈরশাসক, যিনি মিথ্যাকে সত্য বানানোর দক্ষতায় ইতিহাসে নজির সৃষ্টি করেছেন। জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায়ে শেখ হাসিনা দণ্ডিত হলে আওয়ামী লীগের বহু নেতা নির্বাচনের অযোগ্য হবেন, ফলে আওয়ামী লীগ ছাড়া একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন সম্ভব হবে। ‘জুলাই’ আমাদের তারুণ্যের অহংকার, বিদ্রোহের অগ্নিশিখা এবং ঐক্যের প্রতীক। এ চেতনা বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না।

তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ গুম-খুন, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলার মাধ্যমে জনগণকে দমন করেছে। বিডিআর ও শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ড ছিল ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার নিষ্ঠুর কৌশল। জঙ্গি নাটক সাজিয়ে এবং তথ্যপ্রমাণ ছাড়া তারেক রহমানসহ অনেককে সাজা দেওয়া হয়েছে। মুফতি হান্নানকে আটক রেখে দ্বিতীয়বার স্বীকারোক্তি আদায়ের মতো নজিরবিহীন কাজও করেছে ফ্যাসিস্ট সরকার। এসব মিথ্যা এখন আদালতে প্রমাণিত হয়েছে, এবং মামলা থেকে সবাই খালাস পেয়েছেন।

ছায়া সংসদে কবি নজরুল সরকারি কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক সিকান্দার রেমান ও সাংবাদিক আরিফুজ্জামান মামুন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।

কালের আলো/এসএকে