স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির ‘প্রাইম টার্গেট’ তথ্যমন্ত্রী, এবার সাইবার দুর্বৃত্ত সাকিবের নামে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা

প্রকাশিতঃ 8:45 pm | June 20, 2023

কালের আলো রিপোর্ট :

স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির এখন ‘প্রাইম টার্গেট’ তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড.হাছান মাহমুদ। দুরভিসন্ধির মাধ্যমে সরকারের অন্যতম এই নীতি নির্ধারককে ঘৃণ্য কায়দায় হেনস্থার অপপ্রয়াস দৃশ্যমান হয়ে ওঠেছে। দেশবরেণ্য এই রাজনীতিকের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি নষ্টের অপতৎপরতায় কোমর বেঁধেই মাঠে নেমেছে লন্ডন সদর দপ্তর। অপরিণামদর্শী কুৎসিত ধারায় চক্রটির প্রোপাগান্ডা স্কোয়াড হাতে হাত মিলিয়ে তথ্যমন্ত্রী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত মিথ্যাচার শুরু করায় ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে প্রান্ত নেতাকর্মীরা।

মনগড়া আর ফরমায়েশী তথ্যে কদর্য আর নোংরা ভাষা প্রয়োগের মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ এমন অপতৎপরতা বিবেকবান প্রতিটি মানুষ ঘৃণাভরেই প্রত্যাখ্যান করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপকৌশল গড়িয়েছে আদালত অবধি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দেশ থেকে পলাতক সাইবার দুর্বৃত্ত নাজমুস সাকিবের বিরুদ্ধে সোমবার (১৯ জুন) মামলা দায়েরের পর এবার সাইবার ট্রাইব্যুনালেও আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২০ জুন) চট্টগ্রামের বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন তথ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরুল করিম রাশেদ। এ মামলায় কুখ্যাত সাকিবসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। একই সঙ্গে এমরুল করিম রাশেদের পৃথক আরেকটি আবেদন আদালত মঞ্জুর করে ইউটিউব ও ফেসবুক থেকে কথিত মিথ্যা, অসত্য ও উদ্দ্যেশ্যপ্রণোদিত ভিডিওটি প্রত্যাহারের জন্য বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন, এমনটিই জানিয়েছেন মামলার শুনানিতে অংশ নেওয়া বাদী পক্ষের আইনজীবী রেহানা বেগম রানু।

জানা যায়, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠক করেন ভূইফোঁড় ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজ পরিচালনাকারী সাইবার দুর্বৃত্ত নাজমুস সাকিব। ওই বৈঠকে দেশবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনা আঁটা হয়। মোটা দাগের লেনদেনের মাধ্যমে সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী ও দলীয় শীর্ষ নেতাদের নামে অলীক কল্পনাপ্রসূত, ভিত্তিহীন প্রোপাগান্ডা চালানোর দায়িত্ব সাইবার দুর্বৃত্ত টিটু ও সাকিবকে দেন তারেক।

সেই মোতাবেক রাজনৈতিক হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতেই তথ্যমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ‘টার্গেট’ করে ‘নাগরিক টিভি’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে চরিত্র হননের অপচেষ্টায় কথিত দুর্নীতির আষাঢ়ে গল্পের নাটক মঞ্চস্থ করা হয়। আর এটি করতে গিয়ে তারেক জিয়ার গুণধর শিষ্য নাজমুস সাকিব নর্দমার চেয়ে দুর্গন্ধময় আবর্জনা হিসেবেই চিহ্নিত হয়েছেন। জনগণের শক্তিতে অপ্রতিরোধ্য আর সততার শক্তিতে দুর্বার তথ্যমন্ত্রী ড.হাছানের পক্ষে তাঁর নির্বাচনী এলাকা চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও বোয়ালখালী ছাপিয়ে দেশের সাধারণ মানুষের অভূতপূর্ব গণজাগরণে এই অপশক্তি শেষতক হালে পানি পায়নি। উল্টো ভেসে গেছে খড়কুটোর মতো।

দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা বিভাগের একজন অধ্যাপক নাম প্রকাশ না করে কালের আলোকে বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রীর সম্মানহানির অপচেষ্টার ভিডিওটি মিথ্যাচারে ভরপুর। এটির পেছনে অসৎ রাজনৈতিক উদ্দ্যেশ্য দিবালোকের মতো পরিস্কার। এসবের মাধ্যমে বিএনপি-জামাত প্রোপাগান্ডা উইং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দখল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুললেই এখন সরকারবিরোধী নানা রকম তথ্য প্রোপাগান্ডা গুজব পাওয়া যাচ্ছে। সচেতন সাধারণ মানুষ তাদের লম্ফঝম্ফে কান দিচ্ছে না ঠিক কিন্তু সরকারকে এখনই এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সাইবার সন্ত্রাস দমনের মাধ্যমে ডিজিটাল দেশে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সুরক্ষাও নিশ্চিত করতে হবে।’

সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলার আদ্যোপান্ত
চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জহিরুল কবিরের আদালতে ব্ল্যাকমেলার ইউটিউব চ্যানেল ‘নাগরিক টিভি’র বিরুদ্ধে দায়ের করা তথ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা এমরুল করিমের এই মামলায় ওই ইউটিউট চ্যানেলের এডমিন নাজমুস সাকিবসহ আরও কয়েক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। বাকি আসামিরা হলেন- এইচ এম কামাল, আজাদ শাহাদাত, সানি প্রধান, সাইফুল ইসলাম তালুকদার, খোন্দকার ইসলাম এবং হাজী হারুন রশিদ।

বাদীর আইনজীবী বিশেষ পিপি নিখিল কুমার নাথ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আদালত মামলা গ্রহণ করে সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে তদন্ত করে ১০ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া ইউটিউব ও ফেইসবুক থেকে ভিডিওটি প্রত্যাহারের জন্য বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।

মামলার বাদী এমরুল করিম এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ১৩ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে তথ্যমন্ত্রী ও তার ভাইদের ছবি ব্যবহার করে সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, ষড়যন্ত্রমূলক, মানহানিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য ছড়ানো হয়েছে। হাছান মাহমুদ ও তার পরিবারের সদস্যদের রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভিডিও ইউটিউব ও ফেসবুকে আপলোড করা হয়েছে।

এছাড়া আগের দিন সোমবার (১৯ জুন) রাতে তথ্যমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবলীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে নগরীর চকবাজার থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় ভিডিও লাইক, শেয়ার এবং এতে কমেন্ট করা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ইউটিউব-ফেসবুক) ব্যবহারকারীদেরও আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

কালের আলো/এসআর/আরকে