মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী পলাতক সুলতান মাহমুদ গ্রেপ্তার
প্রকাশিতঃ 9:24 pm | February 06, 2023

কালের আলো প্রতিবেদক:
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মৃত্যুদন্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. সুলতান মাহমুদ ফকির(৭০) কে ময়মনসিংহ শহরের ভাটিকাশর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১৪। রোববার রাতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সুলতান মাহমুদ ফকির ত্রিশালের বিয়ারতা গ্রামের মৃত আসমত আলী ফকিরের ছেলে।
সোমবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে র্যাব কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান র্যাব – ১৪ অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ময়মনসিংহের ত্রিশালের কাকচর গ্রামের ইউনুছ আলী নামের এক বীর মুক্তিযোদ্ধা নদী পারাপারে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা জুন-জুলাইয়ের দিকে জেলার ত্রিশাল উপজেলার আহমেদাবাদে ক্যাম্প স্থাপন করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের নদী পারাপারে সহযোগিতার কারণে রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা ইউনুছ আলীকে রাজাকার ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যান। পরে ক্যাম্পের টর্চার সেলে নির্যাতনের পর ১৫ আগস্ট সকালে তাকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের বিচারিক আদালতে সুলতান মাহমুদ ফকিরসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরে আদালত বিচারিক কার্যক্রমের জন্য মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।

পরবর্তী সময়ে ২০১৭ সালে অভিযোগের তদন্ত শেষে সুলতান মাহমুদ ফকিরসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। ওই মামলায় আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলার অভিযুক্ত ৯ জনের মধ্যে তিন আসামি রায়ের আগেই মারা যান। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি সুলতান মাহমুদ ফকিরসহ ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত।
২০১৫ সালে মামলার তদন্ত কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই পলাতক ছিলেন সুলতান মাহমুদ। পরে ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান।
র্যাব আরও জানায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার এড়াতে এলাকা ত্যাগ করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপনে ছিলেন সুলতান মাহমুদ। তিনি নিয়মিত অবস্থান পরিবর্তন করতেন এবং কোনো মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন না। তার ছেলেমেয়েরা সচ্ছল হওয়ায় তাকে নিয়মিত আর্থিক সহায়তা করতেন।
র্যাব অধিনায়ক মহিবুল ইসলাম জানান, গ্রেফতার সুলতান ফকিরের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
কালের আলো/ডিএস/এমএম