জাতীয় সংগীত নিয়ে নোবেলের মন্তব্যে নিন্দার ঝড়

প্রকাশিতঃ 5:31 pm | August 03, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

ভারতের জনপ্রিয় গানের রিয়্যালিটি শো ‘সা রে গা মা পা’র দ্বিতীয় রানার আপ নোবেল ফলাফল ঘোষণার আগে থেকেই দুই বাংলায় তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। এবার নিজ দেশ বাংলাদেশের ‘জাতীয় সংগীত’ নিয়ে তাঁর মন্তব্যে উঠল সমালোচনার ঝড়।

এক সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’-কে ‘অপমান’ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে মাইনুল আহসান নোবেলের বিরুদ্ধে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা’ নয়, গীতিকার-সুরকার প্রিন্স মাহমুদের লেখা ‘বাংলাদেশ’ গানটিই বাংলাদেশকে অনেক বেশি করে চিনিয়ে দেয় বলে মত নোবেলের।

নোবেল বলেন, এটি তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। তাঁর এই মন্তব্যের বিরোধিতাও অনেকে করতে পারেন বলে জানান নোবেল। এমন কি, প্রিন্স মাহমুদের ওই গানকে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত করার দাবিতে একসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিলও হয়েছিল বলে দাবি নোবেলের।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল ভিডিওতে নোবেলকে বলতে শোনা যায়, “প্রিন্স মাহমুদ স্যারের যে ‘বাংলাদেশ’ গানটা, আমি একটা কথা বলব এইটা নিয়ে। কেউ হয়তো খারাপ মনে করতে পারে, বাট আমার পারসোনাল অপিনিয়ন এইটা। আমি মনে করি, আমাদের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’ আমাদের দেশটাকে যতটা এক্সপ্লেইন করে, তার থেকে কয়েক হাজার গুণ বেশি এক্সপ্লেইন করে কিন্তু প্রিন্স মাহমুদ স্যারের লেখা এই গানটা। আমাদের জাতীয় সংগীত যেটা আছে, সেটা হয়তো রূপক অর্থে অনেক কিছু বুঝিয়ে দেয়, বাট এইটা (প্রিন্স মাহমুদের লেখা বাংলাদেশ গানটি) কিন্তু আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, আবেগের জায়গা সবকিছু কিন্তু প্রোপারলি আমাদের কাছে তুলে ধরে।”

এ সময় উপস্থাপক রবীন্দ্রনাথের লেখা গানটিকে ‘অনেক আগের লেখা’ হিসেবে অভিহিত করলে সায় দেন নোবেল। নোবেল বলেন, ঢাকা ভার্সিটিতে কিন্তু অনেকে মিছিলও করেছে এই গানটিকে জাতীয় সংগীত করার দাবিতে। নোবেলের মতে, বাংলাদেশে যত গান হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রিন্স মাহমুদের গানটি।

নোবেলের মন্তব্য শুনে এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। নেটিজেনদের মত, জাতীয় সংগীতের সঙ্গে কোনো গানেরই তুলনা চলে না। এহেন মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে বলেছেন অনেকেই। অনেকে নোবেলের বিচারের দাবিও জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী সামিনা চৌধুরী বলেন, ‘ওর চেহারা দেখে মনে হয়েছে, ও বুঝতেই পারেনি কী বলতে কী বলে ফেলল। ওর তো বয়স হয়েছে, ওর তো জাতীয় সংগীতের মর্মটা বুঝতে হবে।’

‘জাতীয় সংগীত শুনলে এখনো আমার কান্না পায়। আমি তো গাইতেই পারি না গানটা। গাইতে গেলেই আমার কান্না পায়। আসলে জাতীয় সংগীত নিয়ে কথা বলাই ঠিক নয়। সবার আগে আমাদের দেশকে, জাতীয় সংগীতকে ভালোবাসতে হবে,’ যোগ করেন সামিনা।

শুধু বাংলাদেশেই নয়, নোবেলের মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কলকাতার কয়েকজন সংগীতশিল্পীও।

এ ব্যাপারে মত জানার জন্য প্রিন্স মাহমুদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। খুদে বার্তা পাঠানো হলেও উত্তর দেননি।

কালের আলো/এসআর/এমএম

Print Friendly, PDF & Email