কিশোর গ্যাং ‘ডি কোম্পানির’ নেতৃত্বে লন্ডনী রাজিব

প্রকাশিতঃ 10:31 pm | June 06, 2021

নিজস্ব সংবাদদাতা, কালের আলো:

বছর চার আগে অস্ত্রসহ র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন টঙ্গীর রাজিব চৌধুরী বাপ্পী ওরফে লন্ডনী বাপ্পী। ছয় মাসের মাথায় জামিনে বেরিয়ে আবার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন দুই বছর লন্ডনে লেখাপড়া করা রাজিব চৌধুরী। পাঁচ বছর আগে শুরু হওয়া টঙ্গীর কিশোর গ্যাং ‘ডেয়ারিং কোম্পানি’ বা ‘ডি কোম্পানি’র প্রধান পৃষ্ঠপোষক তিনি।

এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। তাদের ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলে না। প্রতি মাসে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে দুই থেকে তিন লাখ টাকা আসত রাজিবের হাতে। প্রতি সপ্তাহে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের ৩০০–৫০০ টাকা করে দিতেন তিনি।

রোববার (০৬ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।

টঙ্গী পূর্ব থানার একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় শনিবার (০৫ জুন) রাজিব চৌধুরীসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব–১। গ্রেপ্তার প্রত্যেক আসামির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। প্রধান আসামি রাজিব চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী। বতর্মানে থাকেন টঙ্গীর আরিচপুর এলাকায়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, পাঁচ দিন আগে (১ জুন) রাজধানীর অদূরে গাজীপুরের টঙ্গীর আরিচপুর এলাকায় একটি ফুচকার দোকানে খেতে আসেন ডি কোম্পানির কয়েকজন সদস্য। সে সময় ওই ফুচকা দোকানের সব কটি চেয়ারে মানুষ বসা ছিল। তখন ডি কোম্পানির সদস্যরা চেয়ার ছেড়ে দিতে বলেন।

চেয়ার ছেড়ে না দেওয়ায় অতর্কিত তুহিন আহম্মেদ ও তুষার আহম্মেদকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন তারা। এ ঘটনায় তুহিন আহম্মেদ টঙ্গী পূর্ব থানায় ডি কোম্পানির সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলা করার পরদিন ৩ জুন ডি কোম্পানির সদস্যরা আরিচপুর এলাকার একটি দর্জি দোকানে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। আরজু মিয়া নামের এক ব্যক্তিসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম করেন তারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমে এই খবর আসার পর র‍্যাব–১ গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে।

র‍্যাব গোয়েন্দাদের তদন্তে উঠে আসে, গাজীপুরের টঙ্গী এলাকার মুর্তিমান আতঙ্ক ডি কোম্পানির কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে দিচ্ছেন রাজিব চৌধুরী। পাঁচ বছর আগে ফেসবুকে এই ডি কোম্পানি নামের গ্যাংয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে এই গ্যাংয়ের সদস্যসংখ্যা ৫০। তাদের বয়স ১৮ বছর থেকে ২৫ বছর। এলাকার মাদক, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছেন ডি কোম্পানির সদস্যরা।

গ্রেপ্তার ডি কোম্পানির ১২ জন হলেন রাজিব চৌধুরী বাপ্পী ওরফে লন্ডন বাপ্পী (৩৫), মইন আহমেদ নীরব ওরফে ডন নীরব (২৪), তানভীর হোসেন ওরফে ব্যাটারি তানভীর (২৪), পারভেজ ওরফে ছোট পারভেজ (১৯), তুহিন ওরফে তারকাঁটা তুহিন (২১), রাজিব আহমেদ নীরব (৩০), সাইফুল ইসলাম ওরফে শাওন (২৩), রবিউল হাসান (২০), শাকিল ওরফে বাঘা শাকিল (২৮), ইয়াছিন আরাফাত ওরফে বিস্কুট ইয়াছিন (১৮), মাহফুজুর রহমান ফাহিম (২২) ও ইয়াছিন মিয়া (১৯)।

আটকদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানায় র‍্যাব। সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব–১–এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আবদুল মোত্তাকিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/ডিএসবি/এমআরকে