অসৎ প্রচারণায় আবারও ‘ধরা’ আলজাজিরা, বাজলো বিশ্বাসযোগ্যতার মৃত্যুঘণ্টা!

প্রকাশিতঃ 12:10 pm | May 19, 2021

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো : 

মিথ্যাচার, অপপ্রচার আর আষাঢ়ে গল্পই মূল উপজীব্য। নির্লজ্জ অসৎ প্রচারণার বায়বীয় এক স্টাইল। অনুসন্ধানের নামে নীতি-নৈতিকতাকে বুড়ো আঙুল আর তথ্য-যুক্তিহীন আচরণও মজ্জাগত। কখনও এক অঞ্চলে প্রগতিশীল আবার কখনও অন্য অঞ্চলে কট্টর নীতি। নিজেদের ভূষিত করেছে ‘চরিত্রহীন’উপমায়।

ভুয়া খবরের ‘জনক’ হিসেবে নাস একাডেমির কাছে হোয়াইট ওয়াশের পর ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ নামক সিনেমাটিক কল্পকাহিনী প্রচার করে বাংলাদেশে ‘বাংলা ওয়াশ’ হওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতাও রয়েছে কাতারভিত্তিক টিভি চ্যানেল আলজাজিরার। 

সেই দু:সহ ধিকৃত ম্মৃতি মানসপটে তাজা থাকতেই এবার নতুন করে আরও একটি বড় ধাক্কাই খেয়েছে টিভি চ্যানেলটি। প্রতিহিংসার কল্পকাহিনি টাইটেল নিজেদের নামের শেষে থেকে মুছতে না পারা জাজিরার ম্যাচ ফিক্সিং সংক্রান্ত একটি ডকুমেন্টারিকে মৌলিক ভিত্তিহীন  দুর্বল বলেই ঘোষণা করেছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। 

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের সোমবারের (১৭ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবারও তীব্রভাবে সমালোচিত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের এই প্রোপাগান্ডা মাধ্যম। সংবাদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণে ব্যর্থ হয়ে গুজব উৎপাদনের বিরাট কারখানায় পরিণত হয়ে নিজেদের এখন খাদের কিনারায় দাঁড় করিয়েছে। 

সংবাদ বিশ্লেষকরা বলছেন, বস্তুনিষ্ঠতাই যেখানে সাংবাদিকতার মূল ভিত্তি ঠিক সেখানে উল্টোপথই বেছে নিয়েছে আল জাজিরা। ইতোপূর্বেও আমরা দেখেছি বাংলাদেশ সরকার নিয়েও অল দ্যা প্রাইম মিনিস্টার’স ম্যান: শিরোনামে নানা অসঙ্গতি, বিভ্রান্তি এবং মিথ্যাচারে ভরপুর বায়বীয় এক চিত্রনাট্য। নিজেদের পেইড এজেন্টের মাধ্যমে চরম অসত্য, মনগড়া এবং প্রতিহিংসার গর্ভে জন্ম নেওয়া ভিত্তিহীন ও বানোয়াট প্রতিবেদন দেশের বিবেকবান ও সচেতন প্রতিটি মানুষ ঘৃণাভরেই প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। আইসিসির তদন্ত প্রতিবেদনের পর নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতার রীতিমতো মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়েছে জাজিরা। 

আইসিসি জানিয়েছে, ২০১৮ সালের ২৭ মে ‘ক্রিকেট’স ম্যাচ ফিক্সারস’ নামে একটি ডকুমেন্টারি প্রচার করে আল জাজিরা। এরপরই তদন্ত শুরু করে আইসিসি। তিন বছর আগে ক্রিকেট দুনিয়ায় হইচই ফেলে দেওয়া এই প্রতিবেদনকে ফুলানো-ফাঁপানো বলেই মত দিয়েছে ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা। 

আইসিসির ‘ইন্টেগ্রিটি বিষয়ক মহাব্যবস্থাপক অ্যালেক্স মার্শাল বলেছেন, ‘আলজাজিরার  ডকুমেন্টারিতে যে দাবিগুলো করা হয়েছে, আমাদের তদন্তে সবগুলোর মৌলিক ভিত্তি দুর্বল বলে দেখা গেছে। যা অভিযোগগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতায় ঘাটতি তৈরি করেছে। আমাদের চার জন স্বাধীন বিশেষজ্ঞও এমনটিই মনে করেন।’ 

দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবীরা মনে করেন, বারবার বিভিন্ন বিষয়ে আলজাজিরার পূর্ণ মিথ্যাচারের চিত্রায়ণ আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত এই টেলিভিশনের দীনতাকেই মোটা দাগে সামনে এনেছে। 

তারা বলেন, বাঙালি জাতির রক্তাক্ত মহান মুক্তিযুদ্ধের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের সময় থেকেই সিরিজ প্রতিবেদন করে ষড়যন্ত্রর বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিয়েছিল আলজাজিরা। তাদের সেই অপপ্রয়াস সফল হয়নি। প্রকৃত অর্থে এরা জ্ঞানপাপীও বটে! 

নয়তো নিজেদের কাতারসহ আরবে বসন্ত বা গণতন্ত্র নেই ওইদিক  জাজিরার ক্যামেরার চোখ পড়ে না। বিশ্বসন্ত্রাসী লাদেনকেও এরাই নায়কের আসন দিতে চেয়েছিল। ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ নামক ড্রামায়  ছলচাতুরী, তথ্য, শব্দ এবং দৃশ্য জালিয়াতির নির্লজ্জ কসরত এবং বিকৃত অপেশাদার সত্যহীন উপস্থাপনের মাধ্যমে টিভি চ্যানেলটি শিশুসুলভ বালখিল্যতাকেও হার মানিয়েছিল। 

কালের আলো/জিকেএম/এমএ