মাস্ক না পরলে দোকান বন্ধ করে দেব : মেয়র আতিক

প্রকাশিতঃ 11:36 pm | May 03, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

শপিং সেন্টার ও দোকানে মাস্ক না পরলে তা বন্ধের হুঁশিয়ারি দিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে আজ ও আগামীকাল আমরা মাইকিং করছি। বুধবার থেকে আমি নিজে যাবো মার্কেটে। যদি দেখি তারা মাস্ক ব্যবহার করছেন, স্বাস্থ্যবিধি মানছেন তাহলে সেই দোকান খোলা থাকবে। অন্যথায় আমরা সেই দোকান বন্ধ করে দিবো। আমি বলবো না আমি কোনও এলাকায় যাবো। যদি দেখি কোনও বিক্রেতা, ক্রেতা মাস্ক পড়ছেন না তাহলে অবশ্যই সেই দোকান আমরা বন্ধ করে দেবো।’

সোমবার (০৩ মে) মহাখালীর ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যেমে এই দু’টি অ্যাম্বুলেন্স এবং একটি লাশবাহী গাড়ি হস্তান্তর করা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মেয়র বলেন, আপনারা দোকানিরা কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অঙ্গীকার দিয়ে আপনারা দোকান খুলেছেন। নিজেদের ও ক্রেতাদের মাস্ক পরা নিশ্চিতের দায়িত্ব আপনাদেরই। তাই এই বিষয়টি আপনারই নিশ্চিত করুন। অন্যথায় বুধবার থেকে আমি নিজে মার্কেট পরিদর্শন করবো এবং যারা মাস্ক পরিধারন করে থাকবেন না তাদের দোকান বন্ধ করে দেবো। ব্যবসা করুন কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি, মাস্কা পরার নির্দেশ মানতে হবে আপনাদের।

এর আগে মেয়র আতিকুল ইসলামের সৌজন্যে ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড -১৯ হাসপাতালে রোগীর সেবা নিশ্চিত করতে দুইটি অ্যাম্বুলেন্স এবং একটি লাশবাহী গাড়ি হস্তান্তর করেন তিনি।

মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ব্যবহারের জন্য‌ ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতাল এ দেওয়া হলো অত্যাধুনিক দুইটি অ্যাম্বুলেন্স এবং একটি লাশবাহী গাড়ি।

তিনি বলেন, হস্তান্তরকৃত দুইটি অ্যাম্বুলেন্স এবং একটি লাশবাহী গাড়ির ড্রাইভার ও জ্বালানিসহ প্রয়োজনীয় সকল কিছুই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে সরবরাহ করা হবে, শুধুমাত্র অপারেশনাল ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন হাসপাতালের পরিচালক।

তিনি আরও বলেন, গত বছর দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকলে মহাখালীতে এক হাজার শয্যার যে আইসোলেশন সেন্টার গড়ে তোলা হয়েছিল ৯ অগাস্ট সেটি পরিদর্শন করতে এসে এই মার্কেটটিকে হাসপাতালে রূপান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

ডিএনসিসির মেয়র বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সার্বিক দিকনির্দেশনা ও আন্তরিক সহযোগিতার ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হয়েছে।

মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, এই হাসপাতালের জমি, ভবন, বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। নগরবাসীর স্বাস্থ্য সেবার জন্যই সাত দশমিক এক সাত একর জমিতে তৈরি ডিএনসিসির একটি বিপণীবিতানকে ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড-১৯ হাসপাতালে রূপান্তর করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এই ভবনটি মার্কেটের জন্যই করা হয়েছিল। এখানে ২৫৮টি দোকান বরাদ্দও দেওয়া হয়েছিল। বোর্ড মিটিংয়ের মাধ্যমে তাদের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। এমনকি দুই শতাধিক মালিকের সাথে নিজে কথা বলে তাদেরকে বুঝাতে হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকের টাকাও ফেরত দেওয়া হয়েছে।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, বিপদের সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই মার্কেটটিকে হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছে। যার আয়তন এক লাখ ৮০ হাজার ৫৬০ বর্গফুট। বর্তমান হারে প্রত্যেক মাসে এর ভাড়ার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৭০ লাখ টাকা, এই ভাড়ার টাকাও ডিএনসিসিকে দেওয়া লাগবে না।

মেয়র বলেন, এই হাসপাতালের জমি, ভবন, বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা করেছে ডিএনসিসি। মহামারি চলাকালীন এটি কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেবে। মহামারি শেষ হলে এটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জেনারেল হাসপাতাল হিসেবে পরিচালিত হবে, যেখানে সব ধরনের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনার ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট যাতে বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সেদিকে আমাদের সকলকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহম্মাদ খুরশীদ আলম, হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন, প্রধান নির্বাহী সেলিম রেজাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/সিএসকে/এমএম