জোর করে তুলে নিয়ে নিপীড়ন, পুলিশের পেজে অভিযোগে সাবেক স্বামী গ্রেফতার

প্রকাশিতঃ 12:51 pm | April 25, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বিয়ের পর স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়ে স্বামীকে ডিভোর্স দেন বরিশালের এক নারী। স্ত্রীর দেয়া ডিভোর্স স্বামী মেনে নিতে পারছিলেন না। তাই তাকে জোর করে তুলে নিয়ে তার হাত-পা বেঁধে নিপীড়ন করেন। তার নগ্ন ছবি ধারণ করে রাখেন এবং তা দিয়ে তাকে হয়রানি ও ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করেন। ভুক্তভোগী নারী বিষয়টি পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।

ভুক্তভোগী ওই নারী বিষয়টি বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত ‘বাংলাদেশ পুলিশ অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ’ এর ইনবক্সে বার্তা প্রেরণ করেন। মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং ওই নারীর বার্তা পেয়ে বরিশালের বানারীপাড়া থানা পুলিশকে নির্দেশের পর অভিযুক্ত সাবেক স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়।

রোববার (২৫ এপ্রিল) সকালে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মো. সোহেল রানা এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, ভুক্তভোগী ওই নারী থাকেন বরিশালের বানারীপাড়ায়। বিয়ে হয় ইয়ার হোসেন নামে একই এলাকার এক ব্যক্তির সঙ্গে। বিয়ের পর স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়ে স্বামীকে ডিভোর্স দেন ভুক্তভোগী নারী। এরপর বরিশাল জেলখানার মোড় থেকে ওই নারীকে জোর করে তুলে নিয়ে যান তার সাবেক স্বামী। এরপর হাত-পা বেঁধে তার নগ্ন ছবি ধারণ করেন এবং তা দিয়ে তাকে হয়রানি ও ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করেন।

এক পর্যায়ে এই বিষয়টি জানিয়ে ভুক্তভোগী নারী বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং পরিচালিত ‘বাংলাদেশ পুলিশ অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ’ এর ইনবক্সে বার্তা প্রেরণ করেন।

মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং তার বার্তাটি পেয়ে বরিশালের বানারীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিনকে নির্দেশনা দেন বিষয়টি দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে সে সম্পর্কে অবগত করতে।

এরই প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী নারীর সাবেক স্বামী ও নারীকেও উপস্থিত থাকতে বলা হয়। ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগের বিপরীতে অভিযুক্তের বক্তব্য শোনা হয়। বক্তব্য সন্তোষজনক মনে হওয়ায় ও অভিযোগের সত্যতা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়ায় অভিযুক্ত ইয়ার হোসেনকে তাৎক্ষনিকভাবে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

পরে বিষয়টি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ওই নারী পুলিশের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনাদের জন্য আমি সঠিক বিচার পেয়েছি। আপনাদের ঋণ শোধ করার মতো তৌফিক আমার নেই, কিন্তু ইনশাল্লাহ আমি যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন আপনাদের জন্য নামাজে বসে দোয়া করে যাব। আমার বাবা ও বড় ভাই না থাকার কারণে আমাকে জোর করে তুলে নিয়ে মুখ বেঁধে মারধর করেছে। আমি এখনো রাতে ঘুমাতে পারি না সেই মারের ভয়ে। ইনশাল্লাহ, আমি যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন আপনাদের জন্য দোয়া করে যাব। মহান আল্লাহ যেন আপনাদেরকে আমাদের মতো অসহায় নারীদের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ করে দেন।

পুলিশ সদর দতফর জানায়, প্রতিদিন নীরবে এমন হাজারো কাজে মানুষের পাশে থাকছে বাংলাদেশ পুলিশ অথচ ভাইরাল হচ্ছে দু’একজন সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের গল্পই।

কালের আলো/এসকে/এমএম