৬ বিমানবন্দর ইজারায় অনিয়মের অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন

প্রকাশিতঃ 1:02 pm | April 07, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

দেশের ৬টি বিমানবন্দরের এয়ার সাইড ইজারায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে প্রেক্ষিতে দায়-দায়িত্ব নিরূপণে তদন্ত কমিটি করেছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

অনিয়মের অভিযোগ উঠা বিমানবন্দরগুলো হলো- শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যশোর বিমানবন্দর, বরিশাল বিমানবন্দর ও কক্সবাজার বিমানবন্দর।

অভিযোগ উঠেছে যথাযথ নথি সংরক্ষণ ছাড়াই এসব বিমানবন্দরের এয়ার সাইডে কিছু লিজ দেওয়া হয়েছে।


তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা হলেন- মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (সিএ), উপসচিব (পর্যটন-৩) শাখা ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সম্পত্তি কর্মকর্তা। কমিটির প্রয়োজনে সদস্য আরও বাড়াতে পারে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বেবিচক সূত্রে গেছে, বিমানবন্দরে ইজারা প্রদানে অনিয়মের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এর মধ্যে গুরুতর অভিযোগ হচ্ছে- বিমানবন্দরের এয়ার সাইডে কিছু স্পেস লিজ দেওয়া হয়েছে, যার নথি সংরক্ষণ করা নেই। এ রকম লিজ নথি সৃজন ব্যতীত বরাদ্দ প্রদানের বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে সংশ্লিষ্টদের। তবে এ ঘটনা আগের হলেও বিস্তারিত জানতে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এসব ঘটনায় কারা জড়িত ছিল মূলত তা-ই খতিয়ে দেখবে তদন্ত কমিটি।

বেবিচকের তথ্যমতে, চট্টগ্রামের হযরত শাহ আমানত বিমানবন্দরে টার্মিনাল ভবন, রানওয়ে, টাওয়ার, ফায়ার স্টেশন, রাডার স্টেশন, আবাসিক ভবন, কার্গো ভবন ও পার্কিং এলাকা আছে। সবমিলিয়ে ৬৩৬.৩৯৪ একর সম্পত্তি রয়েছে সেখানে। এর মধ্যে লিজ দেওয়া আছে ৩টি কার পার্কিং, একটি পাবলিক টয়লেট, ১৩টি কক্ষ, একটি রেস্টুরেন্ট ও ৩টি দোকান। এ খাতে ৪.৮৭ একর জমি রয়েছে। বছরে দুই কোটি ২০ লাখ ৩৯ হাজার টাকা আসে। সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দরে আছে ৬৭৪ একর জমি। এরমধ্যে বেবিচকের দখলে থাকা জমির পরিমাণ ৬৭১ একর। লিজে আছে একটি কার পার্কিং, একটি পাবলিক টয়লেট ও ১৮টি দোকান। সেখান থেকে ৫৫ লাখ ৭৮ হাজার টাকা বছরে পায় বেবিচক। কক্সবাজার বিমানবন্দরে আছে ৯৩০ একর জমি। এরমধ্যে বেবিচকের দখলে আছে ৬৮৫.৪৯৩ একর। বেবিচকের নথিতে দেখানো আছে একটি কার পার্কিং এলাকা লিজে চলে। সৈয়দপুর বিমানবন্দরে পুরনো নথি অনুযায়ী আছে ১৩৬.৫৯ একর জমি। সেখানে একটি কার পার্কিং এলাকা লিজে আছে বলে নথিতে দেখানো হয়েছে। বরিশাল বিমানবন্দরে ১৬০ একর জমি আছে বেবিচকের। সেখানেও একটি কার পার্কিং এলাকা লিজে দেওয়ার কথা বলা আছে। যশোর বিমানবন্দরে ১৩৪ একর জমি আছে। সেখানেও লিজে একটি কার পার্কিং এলাকা আছে বলে উল্লেখ রয়েছে বেবিচকের নথিতে।

সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, ২০১৮ সালের এক নথিতে বলা হয়েছে- বেবিচক তাদের প্রকৃত সম্পত্তির তথ্য সংরক্ষণ, জমির রেকর্ডকরণ ও দখল বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। বরং জমি/ভূমি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে লিজ দিতে আগ্রহী। বেবিচকের জমি আকাশপথে পরিবহন সংক্রান্ত কাজে যথাযথ ব্যবহার না করে শুধু লিজ প্রদান মোটেও যৌক্তিক নয় বলে মন্তব্য করা হয়েছে। তা ছাড়া লিজের জমি মামলার কারণে উন্নয়নকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দেশে বর্তমানে তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, পাঁচটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর, তিনটি বন্ধ বিমানবন্দর, দুটি স্টলপোর্ট ও দুটি ভিএইচ স্টেশন আছে।

কালের আলো/ডিএসকে/এমএম