বিশ্বমানের কেএন৯৫ মাস্ক বাজারে আনলো জেএমআই

প্রকাশিতঃ 6:54 pm | January 04, 2021

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলোঃ

মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরাধী বিশ্বমানের কেএন নাইন্টি ফাইভ (KN95) মাস্ক বাজারে নিয়ে এলো চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপ।

সোমবার(০৪ জানুয়ারি) রাজধানীর রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন এই মাস্ক বাজারজাত প্রক্রিয়া শুরু করেছে জেএমআই।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, কেএন৯৫ মাস্কের কথা এতদিন শোনা গেলেও, এখন বিশ্বমানের কেএন৯৫ মাস্ক আমাদের হাতের নাগালে। কেএন৯৫ মাস্ক বাজারে আনার মাধ্যমে দেশে একটি ইতিহাস তৈরি করেছে জেএমআই। এজন্য জেএমআই এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রাজ্জাকের দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনা মেনে করোনা প্রতিরোধ করায় ভাইরাস মোকাবিলায় এখন বিশ্বে শীর্ষ স্থানে থেকে অনন্য নজির স্থাপন করেছে বাংলাদেশ। চীনের উহানে যখন প্রথম কোভিড মহামারি শুরু হয়, তখন সেখানে সুরক্ষা সামগ্রী দিয়ে সহায়তা দেয়ায় জে এম আই গ্রুপকে ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাচিপের সভাপতি প্রফেসর ডা. ইকবাল আর্সলান বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাবের শুরুতে প্রস্তুতি অপর্যাপ্ত ছিল। তবে, সে সময় জেএমআইকে পাশে পেয়েছি আমরা। শুরুতে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই ৪ লাখ করোনা শনাক্তের জন্য লালা সংগ্রহের কাঠি (সোয়াব স্টিক) সরবরাহ করে জেএমআই। তিনি বলেন, শতভাগ কেএন৯৫ মাস্ক এতদিন আমদানি নির্ভর ছিল, এখন জনগণের সেবায় তা সাশ্রয়ী মূল্যে দিচ্ছে জেএমআই। প্রতিষ্ঠানটির উদ্যমী ও দৃঢ় মনোবলের কারনে এটি সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন স্বাচিপ সভাপতি।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন জেএমআই গ্রুপের চেয়ারম্যান জাবেদ ইকবাল পাঠান। তিনি বলেন, করোনাকালে জেএমআই গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ডিএনএ সল্যুশনের ল্যাবের RTPCR মেশিনে প্রায় ১০ হাজার পুলিশ সদস্যের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। করোনা চিকিৎসার ওষুধও সরবারহ করা হয়েছে। এই ল্যাবে করোনার জিনম সিকোয়েন্স করছেন বেশ কয়েকজন গবেষক ও শিক্ষক। যারা ইতোমধ্যে ভাইরাসের গতিপ্রকৃতির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চিহ্নিত করতে পেরেছেন।

অনুষ্ঠানে জেএমআই গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রাজ্জাক কেএন৯৫ মাস্কের বিষয়ে বলেন, এই মাস্কটিতে ৫টি সুরক্ষা স্তর থাকছে। তারমধ্যে তিন স্তরে থাকছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ফিল্টার পেপার। পরীক্ষামূলক উৎপাদন শেষে ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশের পরীক্ষাগারে মাস্কের মান ও যোগ্যতা পরীক্ষা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে আমদানি করা চীনা কেএন৯৫ মাস্ক দেশের বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৩০০ টাকায়। একই মানের মাস্ক ১০০ টাকায় বিক্রি করবে জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং লিমিটেড।

এ সময় করোনার শুরুর দিকে সুরক্ষা সামগ্রী তৈরীসহ নানাভাবে সরকারকে সহযোগিতা করার কথা তুলে ধরেন জেএমআই গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

তিনি বলেন, গত বছরের এপ্রিলের পর দেশে যখন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর হার বাড়তে শুরু করেছিল, তখন আন্তর্জাতিক মানের ফেস মাস্কসহ নানা সরঞ্জাম তৈরি করে আমরা সরকারকে সহায়তা দেই। যা ওই দুঃসময়ে দেশের অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের পক্ষে দেয়া সম্ভব ছিল না।

জেএমআইয়ের পক্ষ থেকে মাস্ক সম্পর্কে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধী এন৯৫, কেএন৯৫ কিংবা এফএফপিটুর মতো মাস্ক উৎপাদন হয় যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, দক্ষিণ-কোরিয়া ও ইউরাপের কিছু দেশে। বাংলাদেশে এসব মাস্ক উৎপাদনের কোনো মানদণ্ড না থাকায় চীনের নীতিমালা মেনে দেশে কেএন৯৫ মানের মাস্ক উৎপাদন করেছে জেএমআই। প্রায় এক বছর গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে নতুন এই মাস্কটি বাজারজাতের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

কালের আলো/বিএস/এমএইচ

Print Friendly, PDF & Email