উদ্যোগী হয়ে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিতঃ 12:18 pm | November 07, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

ক্ষুদ্র ঋণ বা সুদ নয়, সরকার দরিদ্রদের জন্য ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের ব্যবস্থা করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘সরকার চায় কেউ ঋণ নিয়ে নয় বরং নিজে উদ্যোগী হয়ে আত্মনির্ভরশীল হোক।’

আরও পড়ুনঃ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সমবায়ের পথচলায় প্রধানমন্ত্রীর ঔদার্য্যের আলোকপাত সচিব রেজাউল আহসানের

শনিবার(০৭ নভেম্বর) সমবায় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বহুমুখী সমবায় গড়ে তুলতে পারলে দেশে দরিদ্র থাকবে না। আর বাংলাদেশ যেন একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে গড়ে উঠে সে লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু সমবায় গড়ে তুলেছিলেন।

আরও পড়ুনঃ জাতীয় সমবায় পুরস্কার পেল পুলিশ কো-অপারেটিভ সোসাইটি

অনুষ্ঠানে সমবায় কার্যক্রমে নারীদের আরও বেশি সম্পৃক্ততা বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। বলেন, সমবায়ে নারীদের আরও এগিয়ে আসতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ৯৭ ভাগ মানুষের ঘরে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। উন্নত হয়েছে সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা।

কৃষকের উৎপাদিত পণ্য সঠিক নিয়মে বাজারজাত করার পরামর্শ দিয়ে সরকারপ্রধান দেশের বিভিন্ন এলাকায় উৎপাদিত পণ্য কাঁচামাল হিসেবে অর্থনৈতিক অঞ্চলে ব্যবহার করতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশব্যাপী বহুমুখী গ্রাম সমবায় গড়ে তুলতে পারলে দারিদ্র্য সম্পূর্ণ নির্মূল হবে। কাজেই সমবায়ে যারা আছেন, প্রত্যেকে আপনারা সেভাবে কাজ করে যাবেন। বাংলাদেশকে যেন আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। এখানে আপনাদের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমবায়ের মাধ্যমেই আমরা দেশকে উন্নত করতে পারি–আমরা জাতির পিতার এ নীতিতে বিশ্বাস করি। কাজেই যারা সমবায়ের সঙ্গে জড়িত আপনাদের অনুরোধ করবো একটু আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করেন।’

সমবায়ে নারীদের এগিয়ে আসার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারীদের আরও এগিয়ে আসা উচিত বলে মনে করি। সমাজের অর্ধেকই তো নারী। নারীরা যদি এগিয়ে আসে তাহলে দুর্নীতি একটু কমবে। কাজ বেশি হবে। প্রতিটি পরিবার উপকৃত হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু ক্ষুদ্র ঋণ দেওয়া না, উচ্চ হারে সুদ না নেওয়া, ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের ব্যবস্থা করেছি। আমার বাড়ি আমার খামারের সঙ্গে সঙ্গে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক করে দিয়েছি। যেখানে এখন শুধু প্রকল্পের ওপর নির্ভরশীল থাকবে না। ব্যবসায়ীরা ঋণ নিয়ে সুদ দিতে না পেরে কারও ঘরের চালা ধরে টান দিচ্ছে, কারও গরু কেড়ে নিচ্ছে। কাউকে যাতে দেশান্তরিত হতে না হয় সেজন্য আমরা ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের ব্যবস্থা নিয়েছি। যার মাধ্যমে আমাদের দেশের মানুষই উপকৃত হবে। সেটা আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লোকসংখ্যা বেশি, কিন্তু এটাও আমাদের একটা সম্পদ। এই লোকসংখ্যা বৃদ্ধি দেখে আমাদের হতাশ হলে চলবে না। আমরা যদি তাদেরকে শিক্ষায়, দীক্ষায় ট্রেনিংয়ে ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারি, তারাই কিন্তু আমাদের সমাজের জন্য সব থেকে বেশি কাজ করতে পারে এবং এটাও আমাদের একটা সম্পদ।’

করোনার সময় সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। আমাদের লক্ষ্য তার স্বপ্নে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা। আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। কাজেই যত বাধা আসুক বাঙালি এগিয়ে যাবে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। অনুষ্ঠান স্বাগত বক্তব্য রাখেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব রেজাউল আহসান। 

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি। এ সময় সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক আমিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। 

কালের আলো/এসবি/এমএইচএ