বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সমবায়ের পথচলায় প্রধানমন্ত্রীর ঔদার্য্যের আলোকপাত সচিব রেজাউল আহসানের
প্রকাশিতঃ 10:10 pm | November 07, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে ৪৯ তম সমবায় দিবস। শনিবার(০৭ নভেম্বর) সমবায় দিবসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুনঃ জাতীয় সমবায় পুরস্কার পেল পুলিশ কো-অপারেটিভ সোসাইটি
এ অনুষ্ঠান স্বাগত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সমবায়ের পথচলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগী ও দূরদর্শী দিক নির্দেশনার বিষয়টি কৃতজ্ঞচিত্রেই উপস্থাপন করেছেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব রেজাউল আহসান।
দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে সমবায়ের প্রশংসনীয় ভূমিকাসহ নানাবিধ বিষয় তথ্যের আলোকেই উপস্থাপন করেছেন তিনি। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করার লক্ষে সমবায় কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করারও অঙ্গীকার করেছেন সচিব রেজাউল আহসান।
আরও পড়ুনঃ উদ্যোগী হয়ে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
নিজের বক্তব্যের শুরুতেই পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব রেজাউল আহসান গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গেই স্মরণ করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘শত ব্যস্ততার মাঝেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহ উপস্থিতি আমাদের সম্মানিত ও উজ্জীবিত করেছে। একই সাথে অনুষ্ঠানকে করেছে মহিমান্বিত ও তাৎপর্যপূর্ণ।’
‘বঙ্গবন্ধুর দর্শন সমবায়ের উন্নয়ন’ এ দর্শনকে লালন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানব সম্পদে রুপান্তর এবং তাদের জীবন মান উন্নয়নের জন্য পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় কার্যক্রমকে বেগবান করতে প্রতিনিয়তই দিক নির্দেশনা প্রদান করছেন, যোগ করেন সচিব।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনা অনুসরণপূর্বক পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং এ বিভাগের আওতাধীন সমবায় অধিদপ্তর, বিআরডিপি, পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন, ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, মিল্ক ভিটা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে গৃহীত আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পের মাধ্যমে পল্লী অঞ্চলের বসবাসকারী ১ কোটিরও বেশি দরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের জীবনমান উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’

‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা দারিদ্র্য ও শোষণমুক্ত সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা’ এমনটি উল্লেখ করে সচিব আরও বলেন, ‘সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে গণমুখী সমবায় আন্দোলনের স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা।
তাই তিনি ১৯৭২ সালের ২৩ জুন জাতীয় সমবায় ইউনিয়নের সম্মেলনে দৃঢ় কন্ঠে বলেছিলেন ‘আমার দেশের প্রতিটি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, শিক্ষা পাবে উন্নত জীবনের অধিকারী হবে। এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন। এপ্রেক্ষিতে গণমুখী সমবায় আন্দোলনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সমবায়কে অগ্রাধিকার দিতেই বঙ্গবন্ধু সংবিধানের ১৩ নম্বর অনুচ্ছেদে সম্পদের মালিকানার দ্বিতীয় খাত হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। সকল দেশে, সকল যুগেই সমবায় অনস্বীকার্য। সমবায় কার্যক্রমকে বাংলাদেশে শতাব্দীর প্রাচীন যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ আর্থ সামাজিক উন্নয়নে সমবায় প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে।’
সমবায়ের বিভিন্ন কার্যক্রমের চিত্রও তুলে ধরেন রেজাউল আহসান। বলেন, ‘বাংলাদেশে ২৯ টি ক্যাটাগরির অধীনে সমবায় ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশে বর্তমান সমবায় সমিতি রয়েছে ১ লক্ষ ৯০ হাজার এবং সদস্য সংখ্যা ১ কোটি ১৪ লক্ষ ৮৩ হাজারের মতো। এ সকল সমিতির কার্যকরী মূলধন প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। সমিতির মাধ্যমে প্রায় ৯ লক্ষ ২৬ হাজার জনের কর্মসংস্থান হয়েছে।
এর মধ্যে ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত লক্ষাধিক সমবায় সমিতি নিবন্ধিত হয়েছে। সমবায় সমিতির সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়া, সমবায়ের সাফল্যের উত্তরোত্তর জনপ্রিয়তা বহন করে।’
কোভিড ১৯ এর কারণে সারা বিশ্ব মহামারির কবলে বিপর্যস্ত হলেও সমবায় সমিতিগুলো তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু রেখেছে দৃপ্ত কন্ঠেই উচ্চারণ সচিবের। তিনি বলেন, ‘এরই মাঝে দুর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। মুজিব শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের গ্রামভিত্তিক সমবায় ধারণার আলোকে বঙ্গবন্ধু মডেল গ্রাম প্রতিষ্ঠার জন্য পাইলট প্রকল্প গ্রহণের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পটি বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আশা করি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি সুখী সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করার লক্ষে সমবায় কার্যক্রমকে আরও গতিশীল ও শক্তিশালী করে দেশের সকল সমবায় ভাই-বোন, দেশ ও জাতির উন্নয়নে এগিয়ে আসবেন।’
এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি।
এ সময় সমবায় অধিদপ্তরের নিবন্ধক ও মহাপরিচালক আমিনুল ইসলামসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, সচিবসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কালের আলো/এসএকে/আরআই