মেয়র আতিকুলের ‘অ্যাকশন’; বিলবোর্ডমুক্ত ‘চেহারা’ পাচ্ছে রাজধানী (ভিডিও)
প্রকাশিতঃ 6:40 pm | September 05, 2020

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :
দিনমান কাজ করতেই তিনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। পরিবেশবান্ধব, সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও বিলবোর্ডমুক্ত একটি নগরী উপহার দিতেই নিজেকে নিবেদিত করেছেন। নগরবাসীর ‘পালস’ বুঝেই কাজ করেন। দিন বা রাত কিংবা হালের করোনাকাল- হাত গুটিয়ে বসে না থেকে ছুটোছুটি করছেন নগরেরই প্রয়োজনে।
শুধু হাঁকডাক না মেরে কাজও করেন সমান তালে, সমান গতিতেই। ফলশ্রুতিতে এ বাক্যটিই সম্ভবত বেশি যুৎসই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) টানা দু’বার নির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলামের নামের পাশে। উদাহরণ টানতে মাত্র তিনদিন আগের ঘটনাতেই ফিরে যাওয়া হলে এ বাক্যের যথার্থতাও প্রমাণিত হবে নি:সন্দেহে।
রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের গোল চত্বরের পুলিশ বক্সের ওপর একটি অবৈধ বিলবোর্ড চেপে বসেছিল জগদ্দল পাথরের মতোন। কম করে হলেও সেটি ১৬ বছর। এ দীর্ঘ সময়ে অনেক নগর পিতাই এসেছেন, চলেও গেছেন। কিন্তু কারও নজরে আসেনি।
বুধবার (০২ সেপ্টেম্বর) গণগণে সূর্য মাথায় নিয়ে নিজেই দাঁড়িয়ে থেকে অবৈধ সেই বিলবোর্ডটি উচ্ছেদ করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। সেদিনই বলেছিলেন, ‘এই শহরে কোন অবৈধ বিলবোর্ড থাকতে পারবে না। যতই ক্ষমতাধর হোক না কেন আমি কাউকে ছাড় দেবো না।’
এবার চোখ রাখা যাক, শনিবারের (০৫ সেপ্টেম্বর) একটি ঘটনা প্রবাহে। ডিএনসিসির ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে বছিলা প্রধান সড়কের পাশে ইউসিবি ব্যাংকের একটি শাখার সামনে অভিযানের দু’দিনের মাথায় সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে পুনরায় ওই ব্যাংকটি আবারও বিলবোর্ড স্থাপন করে।

‘জনবান্ধব’ নগর পিতা আতিকুল ইসলামের কাছে চলে যায় এ অপকর্মের খবর! তাৎক্ষণিক মেয়র আতিকুলের ফোনকল আসে স্থানীয় তরুণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর আসিফ আহমেদের কাছে। মেয়রের নির্দেশনা মোতাবেক কাউন্সিলর আসিফ ছুটলেন সেখানে। দ্রুত উচ্চেদ করলেন বিলবোর্ডটি।
মেয়র আতিকুল ইসলামের এমন অ্যাকশন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজর কেড়েছে নগরীর বাসিন্দাদের। অনেকেই বলছেন, অনেক অভিযান হয়। কিন্তু ধারাবাহিকতা থাকে না। কিন্তু মেয়র আতিকুল কথার সঙ্গে কাজের মিল রেখেই এগিয়ে যাচ্ছেন। নগর পিতা হলে এমনই হওয়া উচিত!
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) অবৈধ বিলবোর্ড অপসারণ ও রাজস্ব আদায় বৃদ্ধিতে বিশেষ চিরুনি অভিযানের উদ্যোগ গ্রহণ করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। গত মঙ্গলবার (০১ সেপ্টেম্বর) থেকে করের আওতা বাড়াতেই শুরু হয় এ অভিযান। সেদিন তিনি এ অভিযান উদ্বোধন করেন।
অভিযানকালেই মেয়র জানান, ডিএনসিসি এলাকায় যেসব মার্কেট, দোকান, স্থাপনা, বাসাবাড়িতে বিলবোর্ড স্থাপন করে যারা হোল্ডিং ট্যাক্স বা কর দেয় না তাদের কর ও হোল্ডিং ট্যাক্সের আওতায় আনতেই এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
‘আইওয়াশ’ অভিযানের পরিবর্তে মেয়র স্পট হিসেবে প্রথমেই বেছে নেন নিজের সিটি করপোরেশন এলাকার ৩৩ নং ওয়ার্ডের বছিলা এলাকাকে। সঙ্গে ছিলেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ। সেদিনের অভিযানে
কয়েকটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, বিস্কুট ফ্যাক্টরি এবং অবৈধ বিলবোর্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

সূত্র মতে, সেদিন ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বছিলা প্রধান সড়কের পাশে ইউসিবি ব্যাংকের একটি শাখার সামনে টাঙানো ব্যানার ও ইলেকট্রিক বিলবোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়। কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ নিজেই এ অভিযান বাস্তবায়নে কোমর বেঁধে নেমে পড়েন। তিনি নিজেই ছিঁড়ে ফেলেন কয়েকটি বিলবোর্ড।
একই সূত্র জানায়, ওইদিন সাফ সাফ জানিয়ে দেওয়া হয় ডিএনসিসির অনুমতি ছাড়া কোন বিলবোর্ড বা বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না। কিন্তু এ নির্দেশনা অমান্য করে ইউসিবি কর্তৃপক্ষ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য পুনরায় অপকর্ম করেন।
মেয়রের নির্দেশনা না মেনে পুনরায় সেখানে বিলবোর্ড বসিয়ে ফেলেন। এরপরই মেয়রের নির্দেশে শনিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরেই অবৈধ সেই বিলবোর্ড উচ্ছেদ করেন কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ। এরই মধ্যে দিয়ে প্রশংসা পাচ্ছেন নগর পিতা, বাহ্বা পাচ্ছেন কাউন্সিলর আসিফও।
কালের আলো/আরআই/এমএ