অনলাইন এক্টিভিস্টদের উদ্যোগে ‘ময়মনসিংহের জন্মদিন’ উদযাপিত
প্রকাশিতঃ 9:20 pm | May 02, 2018

উবায়দুল হক, কালের আলো:
শিক্ষার শহর হিসেবে গোটা দেশেই পরিচিতি রয়েছে ময়মনসিংহের। সংস্কৃতির নগরী হিসেবেও ময়মনসিংহের আছে সুবিশাল ঐতিহ্য। মহুয়া, মলুয়া আর চন্দ্রাবতী রাতের প্রচ্ছদপদ ‘ময়মনসিংহ’ পা দিয়েছে ২৩১ বছরে।
প্রিয় ময়মনসিংহের জন্মদিনটিকে স্মরণিয় করে রাখতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগেরই সফল বাস্তবায়ন করলো অনলাইন এক্টিভিস্টরা। একঝাঁক অনলাইন এক্টিভিস্ট এক জায়গায় বসে কেট কাটা, আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে জমকালো আয়োজনে পালন করেছে ময়মনসিংহের জন্মদিন।
বুধবার বিকেলে এ উপলক্ষে নগরীর ব্রহ্মপুত্র নদের তীরের জয়নুল আবেদিন উদ্যানের বৈশাখী মঞ্চে ফেসবুক গ্রুপ ‘ময়মনসিংহ হেল্পলাইন’-এর এডমিন আশিকুর রহমানের আহবানে উপস্থিত হন ময়মনসিংহের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপ-পেইজের প্রায় অর্ধশত এডমিন/মডারেটর। আর তাতে অনুষ্ঠানস্থলটি পরিণত হয় ময়মনসিংহে প্রথমবারের মত অনলাইন এক্টিভিস্টদের মিলনমেলায়।
এতে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা ইউনিটের ইনচার্জ রবিউল ইসলাম, বিডিক্লিন-ময়মনসিংহের বিভাগীয় সমন্বয়ক ও তরুণ আইনজীবি মতিউর রহমান ফয়সাল, ‘ময়মনসিংহ হেল্পলাইন’ গ্রুপের প্রণব কুমার দাস, তপু চক্রবর্তী, রোকসানা, সাদিকা শারমিন সাখি, ‘আমরা ময়মন্সিঙ্গা লুক, এইডাই আমগর ইস্ট্যাইল আইন্নের কুনু সমস্যা?’ পেইজের মাহবুবা মুমু, ‘ফেইসবুক স্কুল’র জীবন রবি, ‘ময়মনসিংহ জংশন’র সেলিম আল হারুন, ‘প্রিয় ময়মনসিংহ বিভাগ’র হাসান খান, ‘সফটএভার’র আরাফাত রহমান, ‘ময়মনসিংহ ফুডিস’ গ্রুপের কিমিয়া রহমান, তনয় আদিত্য, ‘ব্রহ্মপুত্র ব্লাড সোসাইটি’র সাধারণ সম্পাদক আল মাকসুদুল হাসান, ‘ময়মনসিংহ ভ্রমণ বিলাস’র মাসুম আহমেদ, ‘কালের আলো’র উবায়দুল হক, ‘লোক লোকান্তর’র ফাহিম মো: শাকিল, ‘ময়মনসিংহনিউজটোয়েন্টিফোর.কম’র মেহেদি হাসান আব্দুল্লাহ, ক্যানভাস’র রিপন খান, ‘ড্রিম সিটি ময়মনসিংহ’র আহমেদ নিলয়, ‘ফটোগ্রাফি ও ফিল্মি আড্ডা’র মৃধা শিহাব মাহমুদ, ‘ময়মনসিংহ হেল্পলাইন(এমএইচ)’ আসাদুজ্জামান পাপ্পু, ‘খোলা জানালা’ জহিরুল ইসলাম নয়ন, ‘সুখের বাতা’র ফাতেমা-তুজ জহুরা, ‘আমরা ময়মনসিংঙ্গা’র এমডি মানিক প্রমুখ।
পরে আলোচনাসভায় সকলের নিজ নিজ জায়গা থেকে সারাদেশ তথা বিশ্বের কাছে সুন্দরভাবে ময়মনসিংহকে তুলে ধরতে মতামত ও পরামর্শ ব্যক্ত করেন তারা। আলোচনা শেষে কেট কেটে প্রিয় জেলা ময়মনসিংহের জন্মদিন উদযাপন করা হয়।
প্রসঙ্গত, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনামলে রাজস্ব আদায়, প্রশাসনিক সুবিধা বৃদ্ধি এবং বিশেষ করে স্থানীয় বিদ্রোহ দমনের জন্য ১৭৮৭ সালের পহেলা মে ময়মনসিংহকে জেলা হিসেবে ঘোষণা করে বৃটিশ সরকার।
ময়মনসিংহ জেলার নামকরণের ইতিহাস রয়েছে। মোঘল আমলে মোমেনশাহ নামে একজন সাধক ছিলেন, তার নামেই মধ্যযুগে অঞ্চলটির নাম হয় মোমেনশাহী। ষোড়শ শতাব্দীতে বাংলার স্বাধীন সুলতান সৈয়দ আলাউদ্দিন হোসেন শাহ তার পুত্র সৈয়দ নাসির উদ্দিন নসরত শাহ’র জন্য এ অঞ্চলে একটি নতুন রাজ্য গঠন করেছিলেন, সেই থেকেই নসরতশাহী বা নাসিরাবাদ নামের সৃষ্টি।
নাসিরাবাদ নাম পরিবর্তন হয়ে ময়মনসিংহ হয় একটি ভুলের কারণে। বিশ টিন কেরোসিন বুক করা হয়েছিল বর্জনলাল এন্ড কোম্পানির পক্ষ থেকে নাসিরাবাদ রেল স্টেশনে। এই মাল চলে যায় রাজপুতনার নাসিরাবাদ রেল স্টেশনে। এ নিয়ে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পরবর্তীতে আরো কিছু বিভ্রান্তি ঘটায় রেলওয়ে স্টেশনের নাম পরিবর্তন করে ময়মনসিংহ রাখা হয়। সেই থেকে নাসিরাবাদের পরিবর্তে ময়মনসিংহ ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
কালের আলো/ওএইচ