ড. মোজাম্মেল না নজিবুর, কে হচ্ছেন নতুন মুখ্য সচিব
প্রকাশিতঃ 11:10 am | December 24, 2017
বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো:
চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ড.কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরীর। আগামী ৩১ ডিসেম্বর তার অবসরে চলে যাবার কথা রয়েছে। তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধি না হলে এ পদে আসতে পারে নতুন মুখ। সেক্ষেত্রে আলোচনায় এগিয়ে রয়েছেন দু’জন।
তারা হলেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড.মো: মোজাম্মেল হক খান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. নজিবুর রহমান। এর বাইরে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খানের নামও শোনা যাচ্ছে। প্রশাসনের দ্বিতীয় সম্মানজনক এ গুরুত্বপূর্ণ পদটির সঙ্গে শেষ পর্যন্ত কার ভাগ্য মিলে যায় সেটিই এখন দেখার বিষয়।
জানা যায়, গত বছরের ২৭ নভেম্বর জনপ্রশাসন সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব পদে নিয়োগ দেয়া হয়। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর তাঁর অবসরে চলে যাওয়ার কথা রয়েছে। কখনো শোনা যাচ্ছে, তার মেয়াদকাল আর বাড়ানো হবে না। আবার কেউ কেউ সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীকেই ৬ মাসের চুক্তি বৃদ্ধির হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলেও মনে করছেন।
১৯৮২ ব্যাচের কর্মকর্তা ড.কামাল আব্দুল নাসের চাকরি জীবনে ৩৩ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের আগে একই মন্ত্রণালয়ের সচিব, তথ্য মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতো গুরত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব¡ পালন করেন। ২০১৪ সালের ইউনেস্কো নির্বাহী বোর্ডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি। এবং ২০১৭ সালে তিনি ইউনেস্কো এক্সিকিউটিভ বোর্ডের সম্মেলন এবং প্রস্তাবনার কমিটির চেয়ারম্যানও ছিলেন।
দেশের শীর্ষ আমলাদের একজন ড.কামাল আব্দুল নাসের। একজন কবি হিসেবেও তিনি পরিচিত। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ১৮ টি। দেশের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কারও রয়েছে তাঁর সাফল্যের ঝুলিতে।
ড.কামাল আব্দুল নাসেরের মেয়াদকাল শেষ হতে চলায় গুরুত্বপূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব পদে কে আসছেন এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে কৌতূহল। এ পদে কাকে নিয়োগ দেয়া হবে এ নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। আলোচনায় ঘুরেফিরে উচ্চারিত হচ্ছে ড.মো: মোজাম্মেল হক খানের নাম।
চলতি বছরের পহেলা ডিসেম্বর থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন ড.মো: মোজাম্মেল হক খানকে। মাদারীপুর জেলার বাসিন্দা ১৯৮২ ব্যাচের এ কর্মকর্তা ২০০১ সালের প্রথমদিকে উপ-সচিব পদে পদোন্নতি পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পরিচালক এবং ঝিনাইদহ জেলার জেলা প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৯ সালে সচিব পদে তিনি পদোন্নতি পান। এরপর তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, সড়ক বিভাগ, আইএমইডি বিভাগ এবং জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ-এর সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
৫ বছর পর তাকে সরকারের সিনিয়র সচিব পদে পদোন্নতি দেয়া হয়। তিনি ছিলেন জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের দায়িত্বেও।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করার পর মিসর থেকে পিএইচডি করেছেন ড.মোজাম্মেল। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আগে প্রধানমন্ত্রীর হাতে থাকলেও বর্তমান সরকারে এ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে আছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আর ইসমাত আরা সাদেক আছেন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে।
পেশাগত জীবনের বাইরে ড.মোজাম্মেল বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত । দীর্ঘদিন যাবত তিনি বাংলাদেশ স্কাউটস’র সাথে জড়িত। স্কাউটস এর মূলমন্ত্রে দীক্ষীত এ কর্মময় মানুষটি বর্তমানে বাংলাদেশ স্কাউটস এর প্রধান জাতীয় কমিশনার।
পাশাপাশি তিনি জাইকা এলামনাই এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বৃহত্তর ফরিদপুর চাকুরিজীবী কল্যাণ সমিতি ও বাংলাদেশ ক্যারাটে ফেডারেশন-এর সভাপতি। এছাড়া তিনি এশিয়া প্যাসিফিক রিজিওনাল স্কাউটস এর ‘‘টিকেট টু লাইফ প্রজেক্ট’’ এর কান্ট্রি ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন।
অন্যদিকে, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ খানের চাকরির মেয়াদ শেষ হবে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে। তাকেও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরবর্তী মুখ্য সচিব করা হতে পারে এমন কথা শোনা যাচ্ছে।
সূত্র মতে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব পদেও নতুন মুখ আসছে। বর্তমানে এই পদে থাকা সিনিয়র সচিব সুরাইয়া বেগমের এক বছর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছরের জানুয়ারীতে। তাঁর চুক্তির মেয়াদ বাড়ছে না বলেও জানিয়েছে অনেক সূত্র।
এ পদের জন্য স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মালেক, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নমিতা হালদার এবং বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ (অতিরিক্ত সচিব) সাজ্জাদুল হাসানের নাম শোনা যাচ্ছে।