ছাত্রলীগের নবযাত্রা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের অঙ্গীকার জয়ের

প্রকাশিতঃ 3:12 am | September 15, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার মাধ্যমে ‘রাতারাতি’ তারকা বনে গিয়েছিলেন রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানী। কিন্তু একের পর এক বিতর্কিত ও নেতিবাচক কর্মকান্ড এবং অযোগ্যতার পরিচয় দিয়ে সংগঠনকে চরম বিপদে ঠেলে দিয়েছিলেন। ফলে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করেই নিজেদের ছাত্রলীগের অধ্যায় শেষ করতে হয়েছে তাদের।

আরও পড়ুন: পদ হারালেন শোভন-রাব্বানী, দায়িত্বে নাহিয়ান-লেখক ভট্টাচার্য

নির্ধারিত সময় পেরুনোর আগেই তাঁরা ছাত্রলীগে পদ হারানোর ফলে দেশের প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ এ ছাত্র সংগঠনের গুরু ও কঠিন দায়িত্ব বর্তেছে সংগঠনের প্রথম সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও প্রথম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের কাঁধে। জাতির আবেগ, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও গৌরবের প্রকাশ ঘটাতেই নতুন এ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের হাত ধরেই ছাত্রলীগের নবযাত্রা শুরু হয়েছে।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে ছাত্রলীগের নেতৃত্বের বিষয়টি আলোচনায় উঠলে সংগঠনের অভিভাবক ও আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোভন ও রাব্বানীকে সংগঠনের নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিলে তাঁরা পদত্যাগ করেন। আল নাহিয়ান খান জয় ও লেখক ভট্টাচার্যের প্রতি আস্থা রেখেই এ সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

আরও পড়ুন: জয় ও লেখক ভট্টাচার্যের কাছে সাবেক তিন কমিটির নেতাদের প্রত্যাশা

নিজেদের সংগঠনের স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাসের দিকে চোখ রেখেই বঙ্গবন্ধুর হাতেগড়া বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নেতৃত্ব দিয়ে সামনে এগিয়ে নিতে চান নতুন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এর মধ্যে নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠা, সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গেই পালন করার অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছেন গৌরবময় এ সংগঠনটির নতুন কর্ণধার আল নাহিয়ান খান জয়।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত সোয়া ১ টার দিকে অনলাইন গণমাধ্যম কালের আলো’র সঙ্গে আলাপে এমন অঙ্গীকারের কথা জানান তিনি। উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে দেশকে এগিয়ে নিতে দেশরতœ শেখ হাসিনার যে নির্দেশনা দিয়েছেন সেই নির্দেশনা অনুসরণ করে দেশ ও জাতির অগ্রগতিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে ছাত্রলীগ।

নীতি-আদর্শের প্রশ্নে অনড় থাকার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জননেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে আস্থা ও বিশ্বাস রেখে আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন তা যথাযথভাবে পালন করতে চাই। নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে সচেষ্ট থাকবো।’

আল নাহিয়ান খান জয় বরিশালের কৃতি সন্তান, এটি তাঁর একটি পরিচয়। একমাত্র পরিচয় নয় মোটেও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের এ শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের প্রথম সহ-সভাপতি হওয়ার আগে সোহাগ-জাকিরের কমিটিতে আইন বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ছিলেন শহীদ সার্জেট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকও।

আপাদমস্তক আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান জয়ের দাদা মোশাররফ হোসেন খান ছিলেন জাতির সূর্য সন্তান। তাঁর বাবা আবদুল আলীম খান ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক। আশির দশকে ঢাকার বৃহত্তর বরিশাল ছাত্র সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন জয়ের বাবা।

চাচা প্রয়াত আব্দুল হালিম খানও ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি পটুয়াখালী ও বরিশাল উত্তর মহকুমার মুজিব বাহিনীর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন।

মেধাবী, ভদ্র, বিনয়ী ও সজ্জন আল নাহিয়ান খান জয় বিএনপি-জামায়াত জোটের পরিকল্পিত আগুন সন্ত্রাস ও নাশকতার সময় জীবনবাজি রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বোমাবাজদের ধরিয়ে দিয়ে পুলিশ কমিশনারের কাছ থেকে ডিএমপি পুরস্কার পান। তাঁর ঝুলিতে জ্বলজ্বল করছে শেরেবাংলা স্মৃতি পদক ২০১৪ ও স্বাধীনতা স্মৃতি পদক ২০১৫।

আর সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০০৮-০৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। যশোরের মণিরামপুরের সন্তান লেখক ভট্টাচার্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

ছাত্রলীগের গৌরবময় অতীত ঐতিহ্য ধরে রেখে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে উজ্জ্বল ভবিষ্যত বিনির্মাণে নিবিষ্ট মনেই কাজ করতে চান হাস্যেজ্জ্বল, কর্মীবান্ধব এবং শৈশব থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী ছাত্রনেতা আল নাহিয়ান খান জয়। ছাত্রলীগের এ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জেলা পর্যায়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ও নতুন কমিটির বিষয়ে কালের আলোকে বলেন, ‘জেলা পর্যায়ে অপূর্ণাঙ্গ কমিটিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পূর্ণাঙ্গ করা হবে।

আমি সব সময় সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন ইমেজ রক্ষা করেই বিগত সময়গুলোতে কাজ করেছি। এ ধারাবাহিকতা অটুট রেখে সবাইকে নিয়েই একসঙ্গে সামনে পথ চলতে চাই’ যোগ করেন তিনি।  

কালের আলো/এমএইচ/এমএএএমকে

Print Friendly, PDF & Email