যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ট্রাম্প বিরোধী ‘নো কিংস’ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত
প্রকাশিতঃ 3:59 pm | June 15, 2025

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, কালের আলো:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘নো কিংস’ নামের একটি সংগঠনের আয়োজনে এই বিক্ষোভগুলো করা হয়। ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন সেনাবাহিনীর ২৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী এবং ট্রাম্পের ৭৯তম জন্মদিন ট্রাম্পের আয়োজিত একটি বিরল সামরিক কুচকাওয়াজকে কেন্দ্র করে এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
শনিবার (১৪ জুন) সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নিচ্ছিলেন ট্রাম্প। এ সময় নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, ফিলাডেলফিয়া, হিউস্টনসহ বড় বড় শহরের মানুষ রাস্তায় নামেন।
যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক শহরে অভিবাসী গ্রেফতারের প্রতিবাদে কয়েক দিন ধরে চলা বিক্ষোভের পর বড় পরিসরে এই বিক্ষোভের পরিকল্পনা করা হয়। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তার ক্ষমতার সীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ এবং নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, কুচকাওয়াজ ঘিরে কোনো বিক্ষোভ হলে ‘কঠোর শক্তি’ প্রয়োগ করা হবে।
তারপরও নিউইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া ও হিউস্টনের মতো বড় শহরগুলোতে আইনপ্রণেতা, শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা ও অধিকারকর্মীরা আমেরিকার পতাকা ও ট্রাম্পবিরোধী পোস্টার হাতে জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেন।
আয়োজকদের দাবি, সারা দেশে শত শত স্থানে এসব বিক্ষোভ হয়েছে। এতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল কয়েক মিলিয়ন।
লস অ্যাঞ্জেলেসে ছিল সবচেয়ে বড় জনসমাগম। অভিবাসনবিরোধী অভিযানের প্রতিবাদে সেখানে টানা কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভ চলছে। মেয়র গ্যাভিন নিউসমের আপত্তি এবং স্থানীয় কর্মকর্তাদের ক্ষোভ সত্ত্বেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক সপ্তাহ আগে ক্যালিফোর্নিয়ায় ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করেন।
লস অ্যাঞ্জেলেসে ফেডারেল বিল্ডিংয়ের কাছে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের সংঘর্ষ হয় এবং ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ছোড়া হয়। তবে তার এক-দুই ব্লক দূরে শত শত মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল চালিয়ে যান।
সিবিএস পরিচালিত এক জরিপে দেখা যায়, ৫৪ শতাংশ আমেরিকান যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে থাকা অভিবাসীদের বহিষ্কারের পক্ষে। ৪৬ শতাংশ বিপক্ষে।
এর আগে নো কিংস বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করা বিক্ষোভকারীরা জানান, তারা ট্রাম্প প্রশাসনের বিরোধিতা করছেন।
আয়োজকদের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, এই প্রশাসন ‘আমাদের আদালত উপেক্ষা করেছে, আমেরিকানদের দেশ থেকে বের করে দিয়েছে, মানুষকে রাস্তায় থেকে গুম করছে, আমাদের নাগরিক অধিকারগুলোর ওপর আঘাত হেনেছে এবং সরকারি সেবাগুলো বন্ধ করে দিয়েছে।’
ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের পর থেকে তার প্রশাসন অভিবাসীদের বিদেশি কারাগারে পাঠিয়েছে, অভিবাসন গ্রেফতারে কোটা নির্ধারণ করেছে, আদালতের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে, সরকারি চাকরি সীমিত করেছে এবং সামাজিক সেবা খাতে বাজেট কাটছাঁটের প্রস্তাব দিয়েছে।
ওয়েবসাইটে এই বিক্ষোভকে ‘জাতীয় প্রতিবাদ দিবস’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। বিক্ষোভের নামটি নির্বাচন করা হয়েছে একনায়কতান্ত্রিক শাসনের বিরোধিতা থেকে।
ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়, ‘দুর্নীতি মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। কোনো সিংহাসন নয়, কোনো মুকুট নয়, কোনো রাজা নয়।’
কালের আলো/এএএন