ডেঙ্গু আক্রান্তদের জন্য সিএমএইচে আলাদা ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে : সেনাপ্রধান

প্রকাশিতঃ 6:03 pm | July 25, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

ডেঙ্গু নিয়ে কেউ কোনো সহায়তা চাইলে সেনাবাহিনী প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।

তিনি বলেছেন, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার প্রয়োজনে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচ প্রস্তুত রয়েছে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের জন্য সিএমএইচে আলাদা ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) ঢাকা সেনানিবাসে ডেঙ্গু নিয়ে আয়োজিত সচেতনতামূলক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে ঢাকা সেনানিবাসস্থ অফির্সাস ক্লাব প্রাঙ্গনে ডেঙ্গু নির্মূল অভিযান-২০১৯ এর উদ্বোধন করেন সেনাপ্রধান।

এ বছর ডেঙ্গু জ্বরের ধরন ও লক্ষণ আলাদা উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেছেন, এ বছর জানুযারি মাস থেকেই বিক্ষিপ্ত আকারে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রভাব দেখা দিয়েছে এবং বর্তমানে তা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৭৬৬ এবং রোগে মৃত্যুর সংখ্যা ৮ জন। সিএমএইচে ৪৪৮ জন ডেঙ্গু রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এবং ৯৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এসময় তিনি ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সচেতনতা ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমেই ডেঙ্গু রোগের মোকাবেলা সম্ভব।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ডেঙ্গুর বিস্তার রোধে আমরা অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন প্রতিরোধমুলক পদক্ষেপ গ্রহন করেছি। সকলকে সচেতন করার পাশাপাশি অফিস আদালতেও বাসস্থান সমুহের আঙ্গিনা ও ছাদে জমে থাকা পানি অপসারণ, নিয়মিত ড্রেন পরিস্কার করণ এবং সবসময় মশারি ব্যাবহারের নির্দেশনা দেয়া আছে।

‘এর ফলে সেনাবাহিনীতে এই রোগ নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে এবং এখন পর্যন্ত কোন প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেনি।’ যোগ করেন সেনাপ্রধান।

চলমান ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি সংস্থা একত্রে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকের এ কাজের মধ্যে দিয়ে চলমান ডেঙ্গু প্রতিরোধ কার্যক্রম আরো বেগবান হবে।

মিডিয়ার উদ্দেশ্যে সেনাপ্রধান বলেন, বর্তমান যুগে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে মিডিয়াই সবচেয়ে অগ্রণী ভুমিকা পালন করছে। আমি আশা করব, মিডিয়া প্রতিনিধিরা তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন এবং আর্ত-মানবতার সেবায় এগিয়ে আসবেন।

সেনাপ্রধান জানান, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ডেঙ্গু পরিস্থিত ক্রমশ অবনতি হচ্ছে এবং হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। এ অবস্থায়, এডিস মশা নিধনে ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সব সেনানিবাসে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

তিনি বলেন, সেনানিবাসের ভিতরে যে স্কুল-কলেজ, আবাসিক স্থান রয়েছে সবস্থানেই আমরা এ অভিযান পরিচালনা করব। এ অভিযান পরিচালনার ফলে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা শিখবে কিভাবে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। ফলে, তখন এটা শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ছড়িয়ে যাবে।

ডেঙ্গু নিমূল অভিযানে সেনাবাহিনী প্রধান সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের সেনা কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার এবং সেনানিবাসের অন্তর্ভুক্ত সকল স্কুল কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।

প্রসঙ্গত, ডেঙ্গু রোগ যাতে আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেতে না পারে সে জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সামরিক ও বেসামরিক সদস্য এবং তাদের পরিবারবর্গের প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে এবং ঢাকা সেনানিবাস ও আশে পাশের এলাকায় ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতনতা ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

কালের আলো/এনএল/এমএম