‘অসংখ্য সাব্বির এখনো এই বাংলার আনাচে কানাচে নয়ন বন্ড হয়ে উঠছে’

প্রকাশিতঃ 10:34 pm | July 02, 2019

কালের আলো ডেস্ক:

বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলার প্রধান অভিযুক্ত নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মঙ্গলবার(২ জুলাই) ভোররাতে নিহত হয়েছেন।

নয়ন বন্ডের নিহতের সংবাদে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন রিফাতের পরিবার ও এলাবাসী। এমনকি তারা মিষ্টিও বিতরণ করেছ।

নিহত নয়ন বন্ডের মৃত্যু ও তার পিছনের কাহিনী নিয়ে নিজের ফেসবুকে পোস্ট করেছেন সাংবাদিক লুৎফর রহমান হিমেল।

কালের আলো’র পাঠকদের জন্য তার স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো- ‘নয়ন বন্ড। পুরো নাম সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড। জেমস বন্ডের নামের সাথে মিলিয়েই হয়ত সে নিজেই তার নামের শেষের দিকে বন্ড নামটি ঝুলিয়ে দিয়েছিলো। রূপালি পর্দার বন্ড একজন নায়ক, কিন্তু বাস্তবের নয়ন বন্ড হয়েছে খলনায়ক।

সেই খলনায়ক নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। তার গুলিবিদ্ধ মৃতদেহের ছবিটি দেখলাম। ক্রিকেটারদের মতো লম্বাটে একহারা গড়নের দেহখানা পড়ে আছে কলাপাতার বিছানায়। একজন সম্ভাবনাময় তারুণ্যের শেষ পরিণতি এই কলাপাতার বিছানা।

সে ক্রিকেটার সাব্বির হতে চায়নি বা কেউ তাকে সে পথে নেয়নি। সে নয়ন বন্ড হয়েছিলো। যতটুকু জানা যাচ্ছে, এই নয়ন বন্ড হওয়ার পেছনে স্থানীয় গডফাদার, প্রভাবশালী নেতা, মাদকের কারবারি, অসাধু পুলিশ, বড় ভাইয়েরা ভূমিকা রেখেছে। এরকম অসংখ্য সাব্বির এখনো এই বাংলার আনাচে কানাচে নয়ন বন্ড হয়ে উঠছে। তাদের ব্যবহার করছে পেছনের কেউ। এই তরুনদের ব্যবহার করা সহজ। এদের আবেগ বেশি, যুক্তি কম। এই সুযোগটিই লুফে নেয় সমাজের ওই সুবিধাবাদীরা।

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যকাণ্ডের এক নম্বর আসামী এই নয়ন বন্ড। কিছুদিন আগে রিফাত শরীফ নামের এক তরুন-যুবককে সকাল বেলা শতশত মানুষের সামনে ফিল্মি কায়দায় নয়ন ও তার সহযোগিরা কুপিয়ে হত্যা করেছিলো। রিফাতের আত্মা কিছুটা হলেও এখন শান্তি পেয়েছে। বাকি আসামীদের ব্যাপারেও আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে বলে মনে হচ্ছে।

এ পর্যন্ত পড়ে অনেকে মানবাধিকারের প্রশ্ন তুলবেন। আরও আরও অনেক প্রশ্ন তুলবেন। তুলুন।

তবে এটিও ঠিক, মানবের জন্য মানবাধিকার। নয়ন ও তার সহযোগিরা আর মানব নয়। ফলে তাদের জন্য মানবাধিকারও প্রযোজ্য নয়। এরা সমাজের আগাছা। বিভিন্ন সরকারের সময়ে ক্ষমতাসীনদের আশ্রয়ে এ রকম হাজারো নয়ন বন্ড নামের আগাছা ছিলো এবং এখনো আছে সমগ্র বাংলায়…।

তরুনরা দেশের আগাছা হবে, কারো দ্বারা ব্যবহৃত হবে, নাকি সম্পদ হবে; সেই সিদ্ধান্ত তাদের নিজেরদেরকেই নিতে হবে। তাদের অভিভাবকদেরই সেটি ভাবতে হবে, সচেতন হতে হবে।’

কালের আলো/এআর/এমএম

Print Friendly, PDF & Email