জুলাই মাসে সড়কে নিহত ৫২০ জন : যাত্রী কল্যাণ সমিতি
প্রকাশিতঃ 2:05 pm | August 12, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
সদ্যবিদায়ী জুলাই মাসে সারাদেশে ৫০৬টি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনটি বলছে, এসব দুর্ঘটনায় ৫২০ জন নিহত ও এক হাজার ৩৫৬ আহত হয়েছেন।
এছাড়া এই মাসে রেলপথে ৩৪টি দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও ৪১ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ১৪টি দুর্ঘটনায় নিহত ১৭ জন, আহত ১৪ জন ও ৫ জন নিখোঁজ রয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌপথে সর্বমোট ৫৫৪টি দুর্ঘটনায় ৫৬৮ জন নিহত এবং ১৪১১ জন আহত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে সংবাদ মাধ্যমে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানো দুর্ঘটনা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। সংগঠনটির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল গণমাধ্যম পর্যবেক্ষণে এই তথ্য পেয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সময়ে ১৬২টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৬৯ জন নিহত ও ১৪৪ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৩২.০১ শতাংশ, নিহতের ৩২.৫০ শতাংশ ও আহতের ১০.৬১ শতাংশ। এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে ঢাকা বিভাগে, সেখানে ১২২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩০ জন নিহত ও ২৯৫ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয়েছে বরিশাল বিভাগে, সেখানে ২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত ও ৯৫ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে— বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দেশের সড়কের মধ্যে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়া; সড়ক-মহাসড়কে মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজি অটোরিকশা, নসিমন-করিমন অবাধে চলাচল; জাতীয় মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কবাতি না থাকায় হঠাৎ ফিডার রোড থেকে যানবাহন উঠে আসা; সড়কে মিডিয়ান বা রোড ডিভাইডার না থাকা, সড়কে গাছপালায় অন্ধবাঁকের সৃষ্টি হওয়া; মহাসড়কের নির্মাণ ক্রটি, যানবাহনের ক্রটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা; উল্টোপথে যানবাহন, সড়কে চাদাঁবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহন; অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, অতিরিক্ত যাত্রীবহন; বেপরোয়া যানবাহন চালানো এবং বিরামহীন ও বিশ্রামহীনভাবে যানবাহন চালানোকে।
দুর্ঘটনার প্রতিরোধে সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে— বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের সড়ক-মহাসড়ক জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা; জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে রাতে অবাধে চলাচলের জন্য আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা; দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ নেওয়া, যানবাহনের ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফিটনেস দেওয়া; গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় মহাসড়কে ফুটপাতসহ সার্ভিস লেইনের ব্যবস্থা করা; সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা; মহাসড়কে ফুটপাত ও পথচারী পারাপারের ব্যবস্থা রাখা, রোড সাইন, রোড মার্কিং স্থাপন করা; সড়ক পরিবহন আইন উন্নত বিশ্বের আদলে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে প্রয়োগ করা।
এছাড়া আরও বলা হয়েছে সারাদেশে উন্নতমানের আধুনিক বাস নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা; মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা; মেয়াদোত্তীর্ণ গণপরিবহন ও দীর্ঘদিন ধরে ফিটনেসহীন যানবাহন স্ক্যাপ করার উদ্যোগ নেওয়া; ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ নেওয়া চালকের উপর চাপিয়ে দেওয়া ভ্যাট ও আয়কর অব্যাহতি দিতে হবে এবং মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত রিকশা আমদানি ও নিবন্ধন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
কালের আলো/আরডি/এমডিএইচ