নির্বাচনে বিদেশি পক্ষপাতদুষ্ট পর্যবেক্ষককে অনুমোদন দেবে না ইসি

প্রকাশিতঃ 3:53 pm | July 08, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

সারাদেশে সচেনতামূলক প্রচারণা শুরু করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেইসঙ্গে আগামী নির্বাচনে বিদেশি পক্ষপাতদুষ্ট পর্যবেক্ষককে কোনোমতেই অনুমোদন দেবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।

মঙ্গলবার সকালে কানাডিয়ান হাইকমিশনের একটি প্রতিনিধি দল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাতে এলে তিনি এসব কথা বলেন।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রস্তুতিমূলক কাজের অগ্রগতি জানতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার অজিত সিং।

প্রায় দেড় ঘণ্টার বৈঠক শেষে সিইসি বলেন, এ পর্যন্ত আমাদের বিভিন্ন সেক্টরে যে প্রস্তুতি নিয়েছি, আগামী নির্বাচনে আমরা ঠিকমতো ডেলিভার করতে পারবো কিনা সে বিষয়গুলো জানতে চেয়েছেন তারা। আমাদের প্রস্তুতির বিষয়টা বিস্তারিত জানিয়েছি। বিশেষ করে দেশজুড়ে ভোটার সচেতনতামূলক (ভোটার এডুকেশন) কার্যক্রম শুরু করব। ভোটার সচেতনতা ক্যাম্পেইনের পাশাপাশি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষকদের প্রশিক্ষণ, এজেন্টদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক কাজে কানাডা পাশে থাকার কথা জানিয়েছে।

তিনি বলেন, কানাডা আমাদের সহায়তার প্রস্তুত এবং আমাদের আলোচনা অব্যাহত থাকবে। তারা চায়, ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন যেন হয়। ভোটার নিবন্ধনে নারীদের অন্তর্ভুক্তি, পার্বত্য এলাকায় ভোটার সচেনতামূলক কাজের বিষয়ে জানতে চেয়েছে কানাডা। আমাদের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছি। এআই (আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স) অপব্যবহার রোধে কাজ করার কাজ করার কথাও জানিয়েছি।

সিইসি বলেন, মিসইউজ অব এআই-আমাদের জন্যও হুমকি। এ বিষয়ে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে কানাডা। কারণ, কানাডার গত বছরের নির্বাচনেও এটা মোকাবিলা করতে হয়েছে। তাদের অভিজ্ঞতা থেকে তাদের পরামর্শ আমরা চেয়েছি। এ বিষয়ে আমরাও বেশ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। আশা করি, বিভিন্ন দেশের মতো কানাডার পূর্ণ সহায়তা পাব। আমরা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে কনফিডেন্ট।

ইসির প্রতিশ্রুতির পর কানাডার হাইকমিশনার সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানান সিইসি।

নির্বাচন কবে বা ভোটের সম্ভাব্য সময়সীমার বিষয়ে কানাডিয়ান হাইকমিশনার জানতে চেয়েছেন কিনা প্রশ্ন করলে  সিইসি বলেন, উনি জানতে চেয়েছেন ভোটের স্পেসিফিক ডেট ঠিক হয়েছে কিনা, আমি বলেছি ‘নো’। সময়সীমা নিয়ে কোনো আলাপ হয়নি। সময়সীমা সম্পর্কে আপনারা যা জানেন, আমিও তাই জানি। যেদিন ভোট হবে, তার দুই মাস আগে আমি জানিয়ে দেব (তপশিল)।

তিনি বলেন, প্রস্তুতিমূলক অগ্রগতির পাশাপাশি দেশীয় পর্যবেক্ষকদের ট্রেনিংয়ের সহায়তার বিষয়টি জানানো হয়েছে। কোন কোন এরিয়াতে আমাদের সহায়তা করতে পারবেন তা জানতে চেয়েছেন তারা।

বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ভোটে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ইতোমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অবজারভার হিসেবে কাজ করার জন্য জিজ্ঞেস করেছি। নীতিমালাও প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। ইইউকে বলা হয়েছে, আগেই যেন জানিয়ে রাখা হয়। তাদের ২৮টি দেশের অবজারভারকে সমন্বয় করে পাঠাতে হবে, এ জন্য আগেভাগে স্বাগত জানিয়েছি।

কিন্তু পক্ষপাতদুষ্ট বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অনুমোদন দেওয়া হবে না বলে জানান সিইসি। তিনি বলেন, গত তিনটি নির্বাচনকে যারা সার্টিফিকেট দিয়েছে তাদের (অনুমোদন) দেব কেন। যেসব পর্যবেক্ষক গত তিনটি নির্বাচন খুব সুন্দর নির্বাচন হয়েছে বলে সার্টিফিকেট দিয়েছে; গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়েছে বলেছে তাদের কি আমাদের নেওয়া উচিত? আমরা দেখে শুনেই নেবো। যারা অভিজ্ঞ, ডিপেন্ডেবল, রিলায়েবল এবং বিভিন্ন দেশে নির্বাচন অবজার্ভ‌ করেছে তাদের নেব। তিনটা নির্বাচনকে যারা সার্টিফিকেট দিয়েছে তাদের কোনোমতেই না।

কালের আলো/এসএকে