কে–৮২ ব্যাচের আবাসন অনিশ্চয়তা কাটেনি, ‘আন্দোলন চলবে’ ঘোষণা
প্রকাশিতঃ 7:16 pm | June 24, 2025

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, কালের আলো:
সব শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ আবাসন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে না ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এর আগে চলমান দাবির বিষয়ে গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক থেকে কিছু আশ্বাস মিললেও নবাগত কে–৮২ ব্যাচের আবাসনের অনিশ্চয়তা এখনও না কাটায় আবারও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) ঢাকা মেডিকেল কলেজের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, নিরাপদ ও সুস্পষ্ট আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে, ক্লাসে ফেরা হবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গতকাল শনিবার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি জানান, দেশের সরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর জন্য ১৯টি হল নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের জন্য দুটি হলের বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তিনি শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন, জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিতব্য একনেক সভায় ঢামেকের হল নির্মাণ প্রকল্পকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বৈঠকে শিক্ষার্থীরা তাদের পাঁচ দফা দাবির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরলে তা ‘যৌক্তিক’ বলেও স্বীকার করেন তিনি।
বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীরা জানান, আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রশাসন পরিত্যক্ত ঘোষণা পাওয়া শহীদ ডা. ফজলে রাব্বি হলের চতুর্থ তলা সম্পূর্ণ খালি করে তুলনামূলক কম ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষে কে–৭৮ থেকে কে–৮১ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের এলোটমেন্ট দিয়েছে। তবে এর মাধ্যমে সমস্যার পুরোপুরি সমাধান হয়নি, বরং নতুন করে সংকটে পড়েছে নবাগত কে–৮২ ব্যাচ।
এমতাবস্তায় আজ (মঙ্গলবার) আবারও শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসলে কর্তৃপক্ষ তাদের জানায়, কেএ–৮২ ব্যাচের জন্য আবাসন ‘ব্যবস্থা করা হবে’, তবে এখনো কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত বা সময়সীমা জানানো হয়নি। শিক্ষার্থীরা আরও জানান, আমরা ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্ত বহাল রাখছি। কিন্তু একইসঙ্গে আমরা এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি যে, শীঘ্রই কর্তৃপক্ষ কে–৮২ ব্যাচের আবাসনের জন্যে সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আন্দোলন স্থগিত করে ক্লাসে ফিরে যাব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে যেহেতু কে–৮২ ব্যাচের জন্য কোনো বাস্তব ব্যবস্থা বা নির্ভরযোগ্য টাইমলাইন এখনো উপস্থাপন করা হয়নি, তাই আন্দোলন স্থগিত করার সুযোগ নেই।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ঢামেক শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন। এর মধ্যে প্রধান দাবি ছিল—পরিত্যক্ত ছাত্রাবাস থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ আবাসনে স্থানান্তর, নতুন হল নির্মাণে বাজেট অনুমোদন, অ্যাকাডেমিক ভবনের নির্মাণ ত্বরান্বিত করা, এবং ছাত্রদের মধ্য থেকে একটি স্বচ্ছ প্রতিনিধি কমিটি গঠন করে উন্নয়ন কার্যক্রমে নজরদারির সুযোগ সৃষ্টি করা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২১ জুন ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রশাসন অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে এবং শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়। এরপর শিক্ষার্থীরা জানিয়ে দেন, তারা হল ত্যাগ করছেন না এবং নিরাপদ বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
কালের আলো/এসএকে