ভোমরা বন্দরে আয় বাড়ল ১০৩ কোটি টাকা

প্রকাশিতঃ 8:51 pm | June 14, 2025

সাতক্ষীরা প্রতিবেদক, কালের আলো:

বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যেও সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর থেকে রাজস্ব আয় বেড়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বন্দরের মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ে যোগ হয়েছে অতিরিক্ত ১০৩ কোটি টাকারও বেশি।

শনিবার (১৪ এপ্রিল) ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমস ডেপুটি কমিশনার মো. শওকত হোসেন এ তথ্য জানান।

সাতক্ষীরার ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব শাখার প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই সময়কালে ভোমরা কাস্টমস স্টেশন রাজস্ব আহরণ করেছে ৮৮৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৯৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। ফলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৯০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জুলাইয়ে আদায় হয় ৮৬ কোটি ৭০ লাখ, আগস্টে ৯৩ কোটি ২০ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৮৯ কোটি ৮৮ লাখ, অক্টোবরে ১২৭ কোটি ৮০ লাখ, নভেম্বরে ১২২ কোটি ৮১ লাখ, ডিসেম্বরে ৮৪ কোটি ৪৭ লাখ, জানুয়ারিতে ৭৫ কোটি ২৮ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ৭২ কোটি ১০ লাখ, মার্চে ৭৯ কোটি ৭৫ লাখ এবং এপ্রিল মাসে আদায় হয় ৫৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।গত বছর অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় এবার রাজস্ব আহরণে অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। আগের বছরের একই সময়কালে আদায় হয়েছিল ৭৮৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ বছরে রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে ১০৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।

তবে এই অর্জনের মধ্যেও রয়েছে কিছু অসন্তোষ। ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুছার অভিযোগ করে বলেন, বন্দরে বৈধ সব ধরনের পণ্য আমদানির অনুমতি থাকলেও বাস্তবে ব্যবসায়ীরা নানা জটিলতায় পড়ছেন। তার দাবি, যদি পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সবধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হতো, তবে রাজস্ব আদায় কয়েক গুণ বাড়ত।

তিনি বলেন, ‘ভোমরা বন্দরে কেবল গুঁড়ো দুধ আমদানিতে সীমাবদ্ধতা রয়েছে, বাকিসব বৈধ পণ্যের অনুমতি থাকলেও বাস্তবতায় তা অনেক সময় কার্যকর হয় না। ফলে দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরের তুলনায় আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমস ডেপুটি কমিশনার মো. শওকত হোসেন বলেন, ‘রাজস্ব আহরণ মূলত আমদানি কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করে। আমাদের পক্ষ থেকে আমদানি ও রফতানিতে ব্যবসায়ীদের সর্বোচ্চ সহায়তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।’

দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যেও ভোমরা স্থলবন্দরের এ অর্জন অর্থনৈতিক সম্ভাবনার নতুন বার্তা দিচ্ছে। তবে সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগাতে হলে নীতিগত সমতা ও আমদানি নীতিতে ব্যবসাবান্ধব সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

কালের আলো/এএএন