ফকির লালন শাহ ছিলেন বৈষম্যবিরোধী : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

প্রকাশিতঃ 1:57 am | October 18, 2024

কুষ্টিয়া প্রতিবেদক, কালের আলো:

ফকির লালন শাহকে  বৈষম্যবিরোধী উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, লালন ফকির ১৩৪ বছর আগেই সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলে গেছেন। জাত গেল জাত গেল বলে, এ কি আজব কারখানা গান গেয়েছেন। সব লোকে কই লালন কি জাত সংসারে গান গেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী ছেউড়িয়ার লালন আখড়াতে মরমী সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ এঁর ১৩৪তম তিরোধান দিবসে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা আরও বলেছেন, “ফকির লালন সম্রাট ছিলেন না। তিনি ছিলেন সাধক। তাঁর বাণী সমাজের সকল ক্ষেত্রে বিদ্যমান। আমরা যদি লালনকে ভালবাসি – তাহলে নারীর ওপর অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন করতে পারি না। কৃষিকাজে বিষ দিয়ে, নদীতে বিষ দিয়ে মাছ মারতে পারিনা।”  লালন একাডেমীর প্রতি লালন শাহের সকল বাণী সংরক্ষণ ও গবেষণার করারও দাবি জানান উপদেষ্টা।

তিনি বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি ঠিকঠাক কাজ করতে না পারে-আপনারা আমাদের শুধরিয়ে দিবেন, বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলবেন। এই যে ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর আমরা যে সরকার গঠন করেছি, দায়িত্ব পেয়েছি- তা দায়সারা হতে পারে না।’

উপদেষ্টা আরও বলেছেন, “লালন শুধু গান গাওয়ার বিষয় না, লালন শুধু ভক্তি দেওয়ার ব্যাপার না, সবার জীবনের মধ্যে লালন একটা জীবন ব্যবস্থা। লালন আমাদের শিখিয়েছেন, কিভাবে প্রকাশ করতে হয় যে, আমি কিছু না। লালন শুধু কুষ্টিয়ার নয়, লালন সারা বাংলাদেশের, লালন সারা বিশ্বের।”

“মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি” বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ এঁর এই আধ্যাত্মিক বাণীর শ্লোগানে ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে লালন একাডেমির সভাপতি ও কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোছা. শারমিন আখতার এর সভাপতিত্বে মৎস ও প্রাণী সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এই উৎসবের উদ্বোধন করেছেন।

সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমি লালনের এই তিরোধান দিবস অনুষ্ঠানে  আরও বক্তৃতা করেন  অনুষ্ঠানের গেস্ট অব অনার সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর; বিশিষ্ট কবি, দার্শনিক, মানবাধিকার কর্মী ফরহাদ মজহার; সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী; পুলিশ সুপার মো: মিজানুর রহমান; প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্হিত ছিলেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড.মো: রশিদুজ্জামান;  শুভেচ্ছা বক্তৃতা করেন লালন আখরার খাদেম ফকির মহম্মদ আলী; বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, কুষ্টিয়া ছাত্র-জনতা প্রতিনিধি এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের পক্ষে আগত অতিথিদের উত্তরীয় প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য, ১২৯৭ বঙ্গাব্দের ১লা কার্তিক আধ্যাত্নিক সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ এঁর তিরোধানের পর থেকে প্রতিবছর এ উৎসব চালিয়ে আসছে তার অনুসারীরা।

কালের আলো/এমএএইচএমকে