‘৪০০ কোটি টাকার পিয়নের’ অর্থপাচারের অনুসন্ধান শুরু

প্রকাশিতঃ 7:34 pm | October 01, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত স্টাফ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে অর্থপাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও মিডিয়া কর্মকর্তা আজাদ রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

এই কর্মকর্তা জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনের ব্যক্তিগত স্টাফ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। যার কাজ ছিল সুধা সদনে খাবার পানি সরবরাহ করা। এ কারণে তার নাম হয় ‘পানি জাহাঙ্গীর’। পরবর্তীতে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হলে তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দেওয়া শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী পরিচয় ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের পদ, চাকরিতে নিয়োগ ও বদলি বাণিজ্য করেন জাহাঙ্গীর। বাগিয়েছেন নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির পদ। গড়েছেন কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মচারী পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে তিনি অন্তত ৪০০ কোটি টাকাসহ গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন।

এছাড়া গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নোয়াখালী-১ আসন (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।

বিভিন্ন মাধ্যম থেকে সিআইডি জানতে পারে, জাহাঙ্গীরের স্ত্রী কামরুন নাহারের নামে রয়েছে ৭ কোটি ৩০ লাখ টাকার সম্পদ। যার মধ্যে ধানমন্ডিতে ২ হাজার ৩৬০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, ১টি গাড়ি। বিভিন্ন ব্যবসায় মূলধন ৭৩ লাখ টাকা এবং ব্যাংকে ১ কোটি ১৭ লাখ টাকা রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়।

জাহাঙ্গীরের নিজের নামে তার এলাকায় ৪ কোটি টাকার কৃষি ও অকৃষি জমি, মোহাম্মদপুর ও নিউ মার্কেটে দুটি দোকান, মিরপুরে ৭ তলা ভবন ও দুটি ফ্ল্যাট, গ্রামের বাড়িতে একতলা ভবন এবং চাটখিলে পৈতৃক ভিটায় চারতলা বাড়ি রয়েছে। এছাড়াও তার পরিবারের একটি আটতলা বাড়ি রয়েছে নোয়াখালীর শহর মাইজদীর হরিনারায়ণপুর এলাকায়। যার ১৯টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ১৮টি ভাড়া দেওয়া আছে।

অস্থাবর সম্পদ হিসেবে পানি জাহাঙ্গীরের নগদ ও ব্যাংক মিলিয়ে ২ কোটি ৫২ লাখ ২ হাজার ৪৩০ টাকা রয়েছে । ডিপিএস ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, এফডিআর ১ কোটি ৩০ লাখ ৫৫ হাজার ৯৬৮ টাকা। তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবের স্থিতি ২৭ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫৫ টাকা, ডিপিএস ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং অংশীদারি ফার্মে মূলধন ৬ কোটি ২৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

জাহাঙ্গীর আলম এ কে রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামে একটি ডেভেলপার কোম্পানির মালিক। হুন্ডির মাধ্যমে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন অভিযোগ রয়েছে।

কালের আলো/ডিএইচ/কেএ