তামাক নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জেলা গাইবান্ধা, সন্তোষজনক ঝিনাইদহ

প্রকাশিতঃ 10:15 pm | June 30, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

দেশের ৩০টি জেলার মধ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে গাইবান্ধা জেলা ও সবচেয়ে সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে ঝিনাইদহ জেলা।

সম্প্রতি বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের সহায়তায় ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট দেশের ৩০টি জেলায় তামাক নিয়ন্ত্রণ পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও বিভিন্ন পাবলিক প্লেস থেকে পর্বেক্ষণমূলক তথ্য সংগ্রহের মাধ্যম তৈরি করা “জেলাভিত্তিক রিপোর্ট কার্ড” থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এবং বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট আয়োজিত “তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন: জেলাভিত্তিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রকাশ” শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

রিপোর্ট কার্ডে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত বিধি-বিধান বাস্তবায়নের বর্তমান পরিস্থিতির যে চিত্র উঠে এসেছে তা মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়।

রিপোর্ট কার্ডে প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে দেখা গেছে, দেশের ৩০টি জেলার মধ্যে ৩টি জেলা (১০%) সন্তোষজনক, ১২টি জেলা (৪০%) মাঝামাঝি অবস্থান, ৯টি জেলা (৩০%) অসন্তোষজনক, এবং ৬টি জেলা (২০%) ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে।

তামাক নিয়ন্ত্রণে সন্তোষজনক অবস্থানে রয়েছে এমন জেলাসমুহ হচ্ছে নাটোর, ঝিনাইদহ এবং বরিশাল। মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে ঢাকা, কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, নওঁগা, মাগুরা, মেহেরপুর, দিনাজপুর, রংপুর, মৌলভীবাজার, ময়মনসিংহ। অসন্তোষজনক অবস্থানে রয়েছে নরসিংদী, গোপালগঞ্জ, পাবনা, কুষ্টিয়া, ঠাকুরগাও, সিলেট, পিরোজপুর, নেত্রকোনা, রাজশাহী। ঝুঁকিপূর্ন জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে জামালপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কক্সবাজার, চাদপুর, চুয়াডাঙ্গা এবং গাইবান্ধা।

সার্বিক চিত্র বিশ্লেষণে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে তামাক নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে সন্তোষজনক অবস্থানে রয়েছে ঝিনাইদহ জেলা (৫০%) এবং সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে গাইবান্ধা জেলা (১৭%)।

তামাক নিয়ন্ত্রণ সংশ্লিষ্ট বিবি-বিধান বাস্তবায়নের বর্তমান অবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে সভায় বেসরকারি সংস্থাগুলোকে যুক্ত করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা, রিপোর্ট কার্ডে উল্লেখিত তুলনামূলক সফল জেলাগুলোর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে দুর্বল জেলাগুলোর অবস্থা উন্নয়নে প্রয়োজন অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ, ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি) এর আর্টিক্যাল ৫.৩ অনুসারে নীতি সুরক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধনের মাধ্যমে শক্তিশালী করা, সরকারি উদ্যোগে তামাক নিয়ন্ত্রণ সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষণমূলক গবেষনা আরো বিস্তৃত আকারে পরিচালনা এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন টাস্কফোর্স কমিটির সভা নিয়মিতকরণের সুপারিশ করা হয়।

সভায় বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসূচি প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সাবেক সমন্বয়কারী হোসেন আলী খোন্দকার, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি’র সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট আইনজীবি সৈয়দ মাহবুবুল আলম এবং এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক সাগুফতা সুলতানা।

বক্তারা বলেন, আইন লংঘনকারী তামাক কোম্পানিগুলোকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান ছাড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত এবং তামাক ব্যবহার কমানো সম্ভব নয়। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনকারীদের শাস্তি দিতে হবে। যা অন্যদের সচেতন করতে সহায়তা করবে।

কালের আলো/এমএইচইউআর