দেশের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় সেনাবাহিনী পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষার্থীদের প্রকৃত জ্ঞানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার বার্তা সিজিএস’র
প্রকাশিতঃ 9:09 pm | May 15, 2024
বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:
দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ। দেশের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় প্রথমেই উচ্চারিত হয় এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের নাম। যারা শৃঙ্খলা আর নিয়মানুবর্তিতায় বারবার পৌঁছেছে সাফল্যের মূল সোপানে। সেনাবাহিনী পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় মডেল হিসেবে স্বীকৃত হওয়াকে অত্যন্ত গর্বের বিষয় বলেই মনে করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
বুধবার (১৫ মে) ঢাকা সেনানিবাসে আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত ৪৪টি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ এর কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের ৫৭তম সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্যে তিনি গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন। কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান স্মরণ করিয়ে দেন শিক্ষকরাই মানুষ গড়ার কারিগর। তিনি শিক্ষা ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ ও পাঠ্যক্রম ক্রমশ পরিবর্তন হওয়ায় শিক্ষকদের প্রশিক্ষিত হয়ে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত জ্ঞানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ারও আহ্বান জানান। তিনি পথনির্দেশ করে বলেছেন, অধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা নিজেকে একজন অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে শিক্ষার্থীদের নিকট উপস্থাপন করতে সক্ষম হলে হবে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত হবে।
‘আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমানে অধ্যয়নরত ছাত্রছাত্রীদের সামরিক বাহিনীতে যোগদানের জন্য ফিডার প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে বলেও জানান তিনি। বলেন, ‘২০২৩ সালে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের সর্বমোট ১৩০ জন শিক্ষার্থী সশস্ত্র বাহিনীতে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে যোগদানের সুযোগ পেয়েছে।’
প্রথমবারের মতো ৫৭তম সমন্বয় সভায় স্বশরীরে উপস্থিতি
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের পর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজসমূহের কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সভাপতি হিসেবে প্রথমবারের মতো এদিন তিনি ৫৭তম সমন্বয় সভায় স্বশরীরে উপস্থিত হন লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) নিজেও বলেছেন, ‘ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজসমূহের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এই ফোরামে সভাপতি হিসেবে প্রথমবারের মতো যোগদান করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।’
সেনাবাহিনীর সিজিএস’র দেশপ্রেম ও পেশাদারিত্বের গভীর নির্যাসে অন্তরমথিত ভালোবাসায় দূরদৃষ্টির পরিচয়বহ ও জ্ঞানোদ্দীপক বক্তব্য উজ্জীবিত করেছে সমন্বয় সভায় প্রধান সমন্বয়ক ও শিক্ষা পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.রেজাউল ইসলাম থেকে শুরু করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষদেরও।
আধুনিক শিক্ষাদানের যথাযথ প্রয়োগের জন্য শিক্ষকদের উন্নত প্রশিক্ষণ অপরিহার্য
আধুনিক শিক্ষাদানের যথাযথ প্রয়োগের জন্য শিক্ষকদের উন্নত প্রশিক্ষণ অপরিহার্য বলেও মনে করেন ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ এর কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের সভাপতি। লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘এজন্য নিয়মিতভাবে প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে, এরিয়া ভিত্তিক এবং বিভিন্ন শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে সমন্বয় করে প্রতিটি শিক্ষককে পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষিত করতে হবে।’ তিনি শিক্ষার্থীদের আগামী দিনের সুযোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা এবং তাদের সুষ্ঠু শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য একাডেমিক শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলা, বিতর্ক, সাহিত্য- সাংস্কৃতিক আয়োজনসহ বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ততার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
সভা সঞ্চালনা করেন সমন্বয় সভায় প্রধান সমন্বয়ক ও শিক্ষা পরিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.রেজাউল ইসলাম। সভাকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে তিনি বলেন, ‘পারস্পরিক সহযোগিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ, শ্রদ্ধাবোধ এবং দায়িত্বশীলতার মাধ্যমেই কেন্দ্রীয় সমন্বয় পরিষদের কার্যক্রমকে আরও বেগবান ও গতিশীল করা সম্ভব।’
এ সময় আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আল ফারুক সিদ্দিকীসহ সেনানিবাস অধিদপ্তরের সামরিক ভূমি মহাপরিচালক শামীম আহম্মেদসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, সভায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নীতিনির্ধারণীসহ সার্বিক বিষয়সমূহ আলোচনা এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তাছাড়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের বিভিন্ন অর্জনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহকে সম্মাননা স্মারক ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
কালের আলো/এমএএএমকে