এনআইডি কর্মকর্তা সেজে প্রতারণা, চক্রের ৬ জন গ্রেপ্তার
প্রকাশিতঃ 5:09 pm | April 04, 2024
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করা একটি চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— সাইফুল ইসলাম ওরফে সোহেল (৩০), মো. তারেক (৩১), মো. সবুজ মিয়া (২৬), টিপু সুলতান (৪১), মো. রিয়াজ খান (২৬) ও মো. শামসুল করিম (৪১)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ৬টি মোবাইল ফোন ও বিভিন্ন কোম্পানির সিম জব্দ করা হয়।
বুধবার (০৩ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (০৪ এপ্রিল) সিআইডির মুখপাত্র পুলিশ সুপার আজাদ রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এই চক্রটির সহায়তায় ভুয়া জন্মসনদ, এনআইডি ও পাসপোর্ট পেয়েছে রোহিঙ্গা ও দাগি আসামিরা। চট্টগ্রামের কৃষক ওমর ফারুককে টার্গেট করে তার এনআইডি কার্ড সংগ্রহ করে দালাল চক্রের সদস্যরা তার ছবি, ঠিকানা ও এনআইডি কার্ড ব্যবহার করে কক্সবাজারে থাকা ওমর ফারুক নামে এক রোহিঙ্গার পাসপোর্ট তৈরি করে দেয়। ঐ রোহিঙ্গা নাগরিকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেয় চক্রটি। ওমর ফারুকের মতো সাধারণ মানুষের এনআইডি কার্ড সংগ্রহে সক্রিয় রয়েছে দালাল চক্র। সংগ্রহের পর অন্যজনের নামে অবৈধভাবে তৈরি করা হয় এনআইডি কার্ড। এ চক্রটি ভুয়া এনআইডি তৈরি করে বিভিন্ন ব্যাংকের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ব্যাংক ঋণ পেতে সহায়তা করত।
তিনি আরও বলেন, ভুয়া এনআইডি তৈরির মাধ্যমে প্রবাসে থাকা এমন অনেক ব্যক্তির অজান্তেই নিজের পৈত্রিক ভিটেমাটি অন্য ভাই বোনের নামে রেজিস্ট্রি হয়ে থাকতো। নতুনভাবে নিবন্ধিত ভোটারদের কাছে ফোন দিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরিচয় দিয়ে অর্থ চাওয়া এবং গ্রহণ করা ছিল তাদের নিত্যদিনের কাজ। বায়োমেট্রিক আপলোড দ্রুত করার জন্য অর্থ গ্রহণসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নাম ব্যবহার করে সাধারণ সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে অর্থ সংগ্রহ প্রতারণা করত তারা।
সিআইডির মুখপাত্র বলেন, চক্রটি সাধারণ আবেদনকারীদের কাছ থেকে অধিক টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স কমানোসহ এনআইডির যাবতীয় সংশোধন (যেমন-নাম ও ঠিকানা, বয়স পরিবর্তন) এর কাজ করে আসছে। আবেদনকারীদের কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রে বয়স কমানোর জন্য আবেদনকারী ভেদে প্রায় ১৫-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিতো। আবেদনকারীরা তাদের প্রকৃত বয়স কমিয়ে অবৈধভাবে জন্মনিবন্ধন সনদ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবর্তন করার জন্য আসামিদের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যম হয়ে যোগাযোগ করতো। নির্বাচন কমিশন অফিসে কর্মরত অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় আবেদনকারীদের প্রকৃত বয়স কমিয়ে অবৈধভাবে জন্মনিবন্ধন সনদ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র পরিবর্তন করার জন্য তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন পরিমাণে টাকা গ্রহণ করতো। এ কাজে প্রতারকচক্র তিনটি পর্যায়ে কাজ করে। ভুয়া জন্মসনদ তৈরি করে সেটি দিয়ে এনআইডি কার্ড করা হয়। আর সেটি দিয়ে অবৈধভাবে তৈরি করা হচ্ছে রোহিঙ্গা নাগরিকসহ দাগি আসামিদের জন্য পাসপোর্ট। এই সক্রিয় চক্রটি রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয় পত্র সার্ভারে ব্লক করা থাকলেও তারা আনব্লক করার জন্য বিপুল পরিমাণ টাকা দাবি করতো।
কালের আলো/বিএস/এমএইচ