রোহিঙ্গাদের জন্য বৃহত্তর তহবিল সংগ্রহে ইউএনডিপিকে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

প্রকাশিতঃ 8:11 am | March 19, 2024

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য বৃহত্তর আন্তর্জাতিক তহবিল সংগ্রহের জন্য ইউএনডিপিকে (জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি) প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (মার্চ ১৮) রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকা সফররত ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত এবং সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।

পরে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা তহবিল ক্রমাগত হ্রাসের প্রবণতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সহায়তার জন্য বৃহত্তর তহবিল গঠনে ইউএনডিপিকে প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, মানবিক কারণে বাংলাদেশ বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করে ভাষানচরে তাদের জন্য উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভাষানচরে এখন প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে।

ভাষানচরে আরও রোহিঙ্গা স্থানান্তর করতেও ইউএনডিপির সহায়তা চান প্রধানমন্ত্রী। বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তনসহ দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্স বলেন, সুইডেন ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার বিশাল সুযোগ রয়েছে।

তিনি দুই দেশের মধ্যে বিশেষ করে বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সুইডিশ ব্যবসায়ীদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। কার্বন নিঃসরণে দায় নগণ্য হলেও বাংলাদেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়।

স্থানীয় জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমন কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং তাদের জীবিকা রক্ষার জন্য বাংলাদেশ একটি জলবায়ু ট্রাস্ট তহবিল গঠন করেছে।

দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের প্রধান লক্ষ্য দারিদ্র্য বিমোচন করা। সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচির কারণে এরই মধ্যে দেশে দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ১৮.৭ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২৫.১ শতাংশ থেকে ৫.৬ শতাংশে নেমে এসেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে যাতে কোনো গৃহহীন মানুষ না থাকে সেজন্য সরকার সারাদেশে গৃহহীনদের জন্য বিনামূল্যে ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধী ঘর দিয়েছে।

উপকূলীয় এলাকায় সাইক্লোন শেল্টার সেন্টার নির্মাণ করার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

১৯৬৯ সালে সুইডেনে প্রথম সফরের কথা স্মরণ করেন শেখ হাসিনা বলেন, তখন তার স্বামী সুইডেনে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন।
চারদিনের সফরে সোমবার ঢাকায় আসেন সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া। তিনি কক্সবাজার ও ভাষানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন।

কালের আলো/এমএইচ/এসবি