খালেদার সাজা হলেও নির্বাচনের পথেই হাঁটছে বিএনপি

প্রকাশিতঃ 11:51 am | February 09, 2018

পলিটিক্যাল এডিটর, কালের আলো :
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৫ বছরের কারাদন্ড হবার পর কঠিন এক পরীক্ষার মুখে পড়েছে সংসদের বাইরের দল বিএনপি। এ অবস্থায় দলটি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে না কী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতোই একই পথ অনুসরণ করবে এ নিয়ে দলটির অন্দরে-বাইরে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ।

তবে দলটির দায়িত্বশীল নেতারা নিশ্চিত করছেন, গতবারের পথে না হেঁটে নির্বাচনে অংশ নিয়েই বরং সরকারকে উল্টো বিপাকে ফেলতে চায় দলটি। কারণ তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, নির্বাচনে অংশ নিলে জনগণের রায়ে দলটি ক্ষমতায় যাবে। এ কারণে দলীয় চেয়ারপার্সন জেলে গেলেও বিএনপি কঠোর হয়নি। কোন প্রকার সহিংসতার দিকেও যায়নি। জনমতের কথা বিবেচনা করেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটির হাইকমান্ড।

বিএনপি’র বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপিকে নিয়ে সরকার নতুন অঙ্ক কষেছে। সরকার জানে বিএনপি নির্বাচনে গেলে তাদের ভরাডুবি হবে। এ কারণে রায়ে খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে সরকার ভুল করেছে। নিজেদের বিপদ ডেকে এনেছে। সামনের নির্বাচনে এর জন্য চরম মাশুল গুণতে হবে তাদের।

বিএনপি’র কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘বিএনপি নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিশ্বাস করে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে নিম্ন আদালতে গেছি। আগামীতে উচ্চ আদালতেও যাবো।’

শামসুজ্জামান দুদু জানান, বিএনপি রাজনৈতিকভাবে খালেদা জিয়াকে কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়টির প্রতিবাদ করবে। আইনি পথেও মোকাবিলা করবে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন থেকে বিএনপিকে দূরে রাখতেই দলের চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। কিন্তু বিএনপি নির্বাচনের পথেই থাকবে।’

বৃহস্পতিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) খালেদা জিয়ার মামলার রায় ঘোষণা দেওয়ার পরে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের কথা উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গতকাল বুধবার (৭ জানুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনের পর আমরা যখন দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে কথা বলি, তখন আমরা জানতে চেয়েছিলাম, যদি রায় আপনার বিপক্ষে যায় তাহলে আমরা কী ধরনের কর্মসূচি দেবো? জবাবে তিনি বলেছেন, কোনও সহিংস কর্মসূচি দেওয়া যাবে না।’

বুধবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘আমাকে আপনাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা হলেও বিশ্বাস করবেন, আমি আপনাদের সঙ্গেই আছি। আপনারা গণতন্ত্র, অধিকার প্রতিষ্ঠা, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন ও জনগণের সরকার গঠনের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।’

সাবেক ছাত্রনেতা, বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান দুদু আরও বলেন, ‘সরকার বিএনপিকে ভয় পায়, খালেদা জিয়াকে তো আরও বেশি ভয় পায়। নির্বাচনের আগে যদি তিনি মুক্তি নাও পান তাহলে শুধু তার ছবি বুকে নিয়ে ঘুরে বেড়াবো, মানুষ ভোট দেবে। এটা বলতে পারি, পনেরো শতাংশ ভোটও নৌকায় যাবে না।’

বৃহস্পতিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে ঠিক কী কারণে সাজা দেওয়া হলো সেটিই বিচারক আদালতে বলেননি।’ তার ভাষ্য, ‘৪০৯-এর অধীনে বিএনপি চেয়ারপারসনের সাজা হলেও এই রায়ে বলা হয়নি কী কারণে খালেদা জিয়া দোষী সাব্যস্ত হলেন।’

কালের আলো/এমএ