অবরোধে নাশকতা ঠেকাতে সারাদেশে কঠোর র্যাব-বিজিবি
প্রকাশিতঃ 5:28 pm | November 06, 2023

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
বিএনপি-জামায়াতের ডাকা চলমান দ্বিতীয় দফার অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২২৮ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
সোমবার (৬ নভেম্বর) বিজিবি সদর দফতর থেকে পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, র্যাব সারাদেশে ৪৬০টি টহল টিম মোতায়েন করেছে। এরমধ্যে ঢাকায় ১৬০টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করছে।
র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ঢাকাসহ সারাদেশে জ্বালাও-পোড়াও রুখতে র্যাবের টহল টিম বাড়ানো হয়েছে। সড়কে যেন যান চলাচল স্বাভাবিক থাকে এবং যানবাহনকেন্দ্রিক নাশকতা কেউ যেন চালাতে না পারে সেজন্য এই টহল বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, নাশকতাকারী যেই হোক না কেন তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি যানবাহনের শ্রমিক ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আরও বেশি সোচ্চার হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
মাঠ পর্যায়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সরব উপস্থিতি বাড়াতে গতকাল (৫ নভেম্বর) আইজিপির নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে পুলিশ ও র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছাড়াও সকল গোয়েন্দা প্রধান এবং বাস মালিক সমিতির পক্ষ থেকে মশিউর রহমান রাঙ্গা ও শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে শাহজাহান খান উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের এক পর্যায়ে মশিউর রহমান ও শাহজাহান খানের দাবির প্রেক্ষিতে ঢাকাসহ সারাদেশে র্যাব ও বিজিবির টহল দল বাড়ানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
শুধু র্যাব বা বিজিবি নয়, পুলিশেরও রিজার্ভ ফোর্স মাঠে নামানো হয়েছে। পুলিশ বলছে, অব্যাহত জ্বালাও-পোড়াও বন্ধে পুলিশের রিজার্ভ ফোর্স মাঠে নেমেছে। সারাদেশের অন্তত অতিরিক্ত ২০ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এবং মির্জা ফখরুলসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে রোববার সকাল থেকে দ্বিতীয় দফায় ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। তাদের যুগপৎ আন্দোলনের শরিকরাও এই অবরোধ পালন করছে। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীও আলাদা করে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে।
এর আগে গত সপ্তাহের শেষ তিন দিন (৩১ অক্টোবর-২ নভেম্বর) টানা অবরোধ পালন করে বিএনপি-জামায়াত। তার আগে ২৯ অক্টোবর হরতাল পালন করে তারা।
অক্টোবর রাজধানীতে বড় ধরনের সমাবেশ করে বিএনপি, জামায়াত ও আওয়ামী লীগ। ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপিসহ ১৩ টি দল আলাদা আলাদা সমাবেশ করে। এদিন দুপুরের দিকে বিএনপির সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমাবেশগামী নেতা-কর্মীর সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ সেখানে হস্তক্ষেপ করার পর এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এসময় বেশ কিছু গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। উপস্থিত সাংবাদিকদেরও ব্যাপক মারধর করা হয়। এরপর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিএনপির সমাবেশ ভণ্ডুল করে দেয়। এর ফলে সংঘর্ষ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পুলিশের বহু সদস্যকে পিটিয়ে আহত করা হয় এবং পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়ে কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্সে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
সমাবেশ বানচালের প্রতিবাদে পরদিন ২৯ অক্টোবর বিএনপি হরতাল পালন করে। হরতালের দিন সকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি এখন কারাগারে আছেন।
হরতালের পর একদিন বিরতি দিয়ে ৩১ অক্টোবর থেকে টানা ৩ দিনের অবরোধ কর্মসূচি দেয় বিএনপি-জামায়াত। ওই কয়েকদিনে মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কালের আলো/এমএইচ/এসবি