অবশেষে গ্রেফতার অনৈতিকভাবে অঢেল সম্পত্তির মালিক চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী

প্রকাশিতঃ 5:14 pm | October 31, 2023

বিশেষ সংবাদদাতা, কালের আলো:

বিতর্কিত অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী অনৈতিকভাবে অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। এসবের জন্য ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। অবৈধভাবে অর্জিত কোটি কোটি টাকা দিয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের নামে বাড়ি ও ফ্ল্যাট কিনেছেন। এছাড়া বিদেশে অর্থ পাচার করে মানিলন্ডারিং অপরাধ করেছেন। এসব ইত্যাকার অভিযোগ তদন্ত করে দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এদিকে গত শনিবার বিএনপি কার্যালয়ে বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা মিয়ান আরেফিকে নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করার পর নতুন করে আলোচনায় এসেছেন বহুল সমালোচিত সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা। তাকে নিয়ে তিন বছর আগে শুরু হওয়া দুদকের অনুসন্ধান এখনও শেষ না হওয়ায় এবং তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় জনমনে প্রশ্ন ওঠেছে। বাইডেনের কথিত উপদেষ্টাকে নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করার ঘটনায় পল্টন মডেল থানায় দায়ের হওয়া মামলায়ও আসামি করা হয়েছে হাসান সারওয়ার্দীকে। এরপর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন। কিন্তু এবার আর শেষ রক্ষা হয়নি। রাজধানীর বিএনপি কার্যালয়ে কথিত বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয়ে সংবাদ সম্মেলনে পেছন থেকে সহায়তা করার অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত এই সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সাভার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশিদ।

তিনি বলেন, গোয়েন্দা কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এ ঘটনার প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখে সেই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।

সূত্র জানায়, চৌধুরী আবু সাহেদ নামে এক ব্যক্তির দাখিল করা ৩০ পৃষ্ঠার অভিযোগ প্রাথমিক অনুসন্ধান করে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায় সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এরপর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশন বৈঠকে চৌধুরী হাসান সোহরাওয়ার্দীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়। অনুসন্ধানের জন্য বিশেষ তদন্ত বিভাগের মহাপরিচালককে নির্দেশনা দেওয়া হয়। অনুসন্ধানেও নামে দুদক। তবে রহস্যজনকভাবে কোনো কুুলকিনারা হয়নি ওই অনুসন্ধানের। একইসঙ্গে ধামাচাপা পড়ে গেছে সাবেক এই সেনাকর্মকর্তার দুর্নীতির বিপরীতে শাস্তির প্রক্রিয়া। আদৌ তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষ হবে কি না তা নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয়।

দেশত্যাগী এক বিতর্কিত সাংবাদিকের অনলাইনে টকশোতে সরকার ও সেনাবাহিনীকে নিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে আলোচনায় আসেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী। নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি হিসেবে রানা প্লাজা ধসের পর উদ্ধারকাজের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ছিলেন এসএসএফের মহাপরিচালকও। এরপর তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি পান এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট হন। নারী কেলেঙ্কারিসহ সেনা শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডের জন্য দেশের সব সেনানিবাসে তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করা হয়। তাঁর সাবেক স্ত্রীর ঘরের দুই ছেলে মেয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী। পরবর্তীতে তিনি ফারজানা ব্রাউনিয়াকে বিয়ে করেন। বিভিন্ন সময়ে তাদের দাম্পত্য কলহ ছিল চর্চিত। সব সময় মিথ্যাচারে পটু এই ব্যক্তির জন্য এবার ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে বলে মনে করছেন অনেকেই।

কালের আলো/ওয়াইএ/আরআই